• বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • " />

     

    বাংলাদেশের টেস্ট ক্যাপ যখন হাতের মোয়া

    বাংলাদেশের টেস্ট ক্যাপ যখন হাতের মোয়া    

    এই বছর চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সানজামুল ইসলামের অভিষেক দিয়ে শুরু। এরপর আজ থেকে শুরু চট্টগ্রাম টেস্টসহ এই বছর মোট ছয়টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। আজ নাঈম হাসানের অভিষেকের সঙ্গে এই বছর সাতজন পেয়ে গেলেন টেস্ট ক্যাপ। পুরনো প্রশ্নটা নতুন করে উঠছে, বাংলাদেশের টেস্ট ক্যাপ পাওয়াই কি সবচেয়ে সহজ?

    প্রশ্নটা অনেক কারণেই উঠতে পারে। অন্তত এই বছর অন্য দেশগুলোর দিকে তাকালেই পরিসংখ্যানটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত এই বছর সাতটি টেস্ট খেলে সাতজনের অভিষেক হয়েছে বাংলাদেশের। সানজামুলকে দিয়ে শুরু তালিকার, এরপর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ঢাকা টেটে অভিষেক হয়নি কারও। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে আবার অভিষেক হলো আবু জায়েদ রাহীর। এরপর দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ে সিরিজে- সাকিব, তামিমের অনুপস্থিতিতে সিলেট টেস্টে সুযোগ পেলেন আরিফুল হক ও নাজমুল ইসলাম অপু। সিলেট ব্যর্থতার পর মিরপুরে আবার খালেদ আহমেদ ও মোহাম্মদ মিঠুন পেয়ে গেলেন টেস্ট ক্যাপ। কী অদ্ভুত, পরের টেস্টেই সেই খালেদ বাদ, এবার টেস্ট ক্যাপ পেলেন নাঈম। সর্বশেষ তিন টেস্টে পাঁচজন ডেব্যুট্যান্ট পেল বাংলাদেশ। 

    এই বছর এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে বাংলাদেশের জার্সি গায়েই সবচেয়ে বেশি অভিষেক হয়েছে। সমান সাতজনের অভিষেক হয়েছে ইংল্যান্ডেরও, তবে বাংলাদেশের চেয়ে ইংল্যান্ড ম্যাচ খেলেছে পাঁচটি বেশি। বাংলাদেশের সঙ্গে শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে পারে শুধু পাকিস্তান, ছয় টেস্টে অভিষেক হয়েছে ছয়জনের। ১১ টেস্ট খেলে ভারতের পাঁচজন পেয়েছেন টেস্ট ক্যাপ। আর স্মিথ-ওয়ার্নারের নিষেধাজ্ঞার পর সাত টেস্ট খেলে অস্ট্রেলিয়ার অভিষেক হয়েছে চার জনের। অবশ্যই আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড এই তালিকা থেকে বাদ থাকবে।

    সাকিব এই বছর বাংলাদেশের বড় একটা সময় জুড়ে ছিলেন না, এশিয়া কাপের পর নেই তামিমও। স্বাভাবিকভাবেই এই দুজনের শুন্যস্থানে নতুন কাউকে বাজিয়ে দেখতে চাইবে টিম ম্যানেজমেন্ট। সমস্যা হচ্ছে, যাদের অভিষেক হচ্ছে তারাও কেউ থিতু হওয়ার সুযোগটা পাচ্ছেন না। এই বছর যে কজনের অভিষেক হয়েছে, তাদের মধ্যে সানজামুল, খালেদ ও নাজমুল অপু এক টেস্ট খেলার পরেই বাদ পড়েছেন। এই বছর পর পর দুই টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন শুধু আরিফুল, মিঠুন ও রাহী। এর মধ্যে রাহী এক সিরিজ ভালো খেলার পরের সিরিজে আবিষ্কার করলেন, তিনি একাদশে নেই। এবার তো ১৩ জনের স্কোয়াডেই জায়গা পেলেন না। আরিফুল অভিষেক টেস্টে দলের সর্বোচ স্কোরার হওয়ার এক টেস্ট পরেই বাদ পড়ে গেলেন প্রথম একাদশ থেকে।

    নাঈম হাসানকে কোন পথে হাঁটতে হবে, সেটা বলে দেবে সময়। এই টেস্টে অবশ্য অভিষেক হতে পারত আরও একজনের, শেষ পর্যন্ত সাদমান ইসলামকে একাদশের বাইরেই রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কাল বলছিলেন, ওপেনিংয়ের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার দিকে তারা বেশি ঝুঁকতে পারেন। কিন্তু অন্য জায়গায় সেই ফর্মুলা টিম ম্যানেজমেন্ট মানছে বলে মনে হয় না। তরুণদের সুযোগ দেওয়া নিয়েও সমস্যা নেই, কিন্তু সেই সুযোগ তো যথেষ্ট আর পর্যাপ্ত হতে হবে। অভিষেকে একটু খারাপ করলেই ছুঁড়ে ফেলার এই নীতি অবশ্য বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক পুরনো রোগ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে অনেক দুরারোগ্য ব্যাধি সেরে যায়, এই ব্যাধিটা কি সারবে?