চট্টগ্রামে সৌরভ ছড়িয়েই যাচ্ছেন মুমিনুল
মুমিনুল হকের জন্য চট্টগ্রাম পয়া ভেন্যু-কথাটা পুরনো। আজ চট্টগ্রামে যা করেছেন, তাতে আসলে চট্টগ্রাম মুমিনুলের জন্য পয়ার চেয়েও বেশি। এই বছর জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে তিন ইনিংস খেলে তিনটিতেই সেঞ্চুরি- মুমিনুল সাগরিকাপারে সৌরভ ছড়িয়েই যাচ্ছেন। আজ এই তিন অঙ্কের পথে ছুঁয়ে ফেললেন বিরাট কোহলি ও তামিম ইকবালকেও।
এই বছর চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসেই মুমিনুল খেলেছিলেন ১৭৬ রানের ইনিংস। পরের ইনিংসেও পেয়েছিলেন সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির সেটিই প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র কীর্তি। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সময়টা ভালো যায়নি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেটেও হাসেনি মুমিনুলের ব্যাট। মিরপুরে এসে আবার উদ্ভাসিত মুমিনুল, এবার খেললেন ১৬১ রানের ইনিংস। আর চট্টগ্রামে আজ পেলেন এই বছর নিজের চতুর্থ সেঞ্চুরি। এখন পর্যন্ত এই বছর চারটি সেঞ্চুরি আছে শুধু কোহলির, দুইটির বেশি নেই আর কারও। মুমিনুল অবশ্য একটু এগিয়ে থাকবেন। কোহলির যেখানে লেগেছে ১৮ ইনিংস, মুমিনুল তা পেয়ে গেছেন ১৩ ইনিংসেই।
বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডেও ভাগ বসিয়েছেন। এতদিন আটটি সেঞ্চুরি করে সবার ওপরে ছিলেন তামিম ইকবালের, মুমিনুল ছুঁয়ে ফেলেছেন তাঁকে। এখানেও তামিমের যেখানে লেগেছে ১০০ ইনিংসের বেশি, মুমিনুল তা করে ফেলেছেন ৫৮ ইনিংসেই।
আজ মুমিনুলের ইনিংসটা প্রায় নিখুঁতই ছিল বলতে হবে। শুধু ৬৭ রানে একবার ডাওরিচকে উইকেটের পেছনে একটা ক্যাচ দিয়েছিলেন দেবেন্দ্র বিশুর বলে, সেটি ধরতে পারেননি উইন্ডিজ কিপার। নড়বড়ে নব্বইয়ের কোনো চিহ্নও ছিল না। ৯২ রানে দাঁড়িয়ে ডাউন দ্য উইকেটে এসে বিশুকে মারলেন ছয়। পরের ওভারেই চেজকে চার মেরে পেলেন সেঞ্চুরি। চট্টগ্রামে এ নিয়ে ছয়টি সেঞ্চুরি হলো মুমিনুলের। এশিয়াতে এক ভেন্যুতে তাঁর চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে শুধু দুজনের। শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারা সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব ও গলে সেঞ্চুরি করেছেন সাতটি বা তার বেশি। বিদেশে কোনো সেঞ্চুরি নেই, অথচ দেশের মাটিতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির তালিকায় মুমিনুল আগে থেকেই ছিলেন সবার ওপরে। আজ উঠলেন আরও একটু। মুমিনুলের আটটি সেঞ্চুরিই দেশে, শুধু দেশের মাটিতে সেঞ্চুরি আছে এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মুমিনুলের পর আছেন ভারতের চান্দু বোর্দে ও অস্ট্রেলিয়ার এস জ্যাকসন।
এক ভেন্যুতে এক হাজার টেস্ট রানের রেকর্ডটাও হতে পারত আজই। চট্টগ্রামে আজ একটুর জন্য সেটা হয়নি মুমিনুলের, আপাতত মুশফিকের পাশেও বসা হয়নি তাঁর।