'নাঈম-তাইজুলের রানের জন্য হয়তো আমরা জিততে পারি'
প্রশ্নটার উত্তর দিতে গিয়ে একটু থমকে গেলেন মুমিনুল হক।
দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ না ওয়েস্ট ইন্ডিজ এগিয়ে, এমনিতে সেই প্রশ্নে খুব একটা সংশয় থাকার নয়। একটা দল প্রথম ইনিংসে ৩১৫ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারিয়েছে, তাও আবার ৩ উইকেটে ২২২ রান থেকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে একটু হলেও বেশি স্বস্তিতে আছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তারপরও বাংলাদেশের আশা সাগরিকার কোল ঘেঁষা বঙ্গোপসাগরে যে সলিল সমাধি হয়ে যায়নি, সেই কৃতিত্বটা অবশ্যই তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসানের পাওনা।
টেস্টে টেইল-এন্ডাররা অনেক দিন ধরেই ম্যাচের এমন নাজুক পরিস্থিতিতে হাল ধরতে পারেননি বাংলাদেশের হয়ে। গত তিন বছরে সপ্তম থেকে শেষ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশ একশ ছাড়ানো জুটি দেখেছে তিনটি। এর প্রতিটিতেই আবার সাকিব বা মুশফিকের কেউ ছিলেন। অন্য প্রান্তের মোসাদ্দেক-মিরাজও ব্যাট খারাপ করেননি। কিন্তু বোলিং করাই যাদের কাজ, তাদের কাছ থেকে ব্যাট হাতে অনেকদিন এমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু পায়নি বাংলাদেশ। একটা সময় যা ছিল নিয়মিতই।
নবম উইকেটে ৫৬ রান কোনো রেকর্ডই নয়। বাংলাদেশের এই জুটিতেই বিশ্বরেকর্ডের কাছাকাছি রান আছে, একশ পেরুনো জুটিই আছে দুইটি। তারপরও তাইজুল-নাঈমের অবিচ্ছিন্ন ৫৬ রানের জুটিটা অন্যভাবে মূল্যায়ন করতে হবে আরও একটি কারণে। দিনের খেলা যখন শেষের দিকে, রোচ-গ্যাব্রিয়েলরা নতুন বল নিয়েছেন। কিন্তু নাঈম-তাইজুলরা সেই কঠিন সময় পারই করে দেননি শুধু, দারুণ সব শটও খেলেছেন। মুমিনুল সেজন্যই বেশ আশাবাদী। একটা কথাই বলে দিলেন, ‘টেইল-এন্ডাররা যেই রান করেছে, সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে মনে হয়। হয়তো এই রানের কারণেই আমরা ম্যাচ জিততে পারি।’
এই রানটা আরও বেশি অর্থবহ আরেকটা কারণে- উইকেট। প্রথম দিনেই বেশ কিছু বল টার্ন করেছে, মাঝেমধ্যে নিচুও হয়ে এসেছে। মনে করিয়ে দিয়েছে গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে উইকেটটি, যেখানে প্রথম দুই দিন ব্যাটিং বান্ধব থাকার পর তৃতীয় দিন থেকেই স্পিন খেলা কঠিনতর হয়ে পড়ছিল। মুমিনুলও উইকেট নিয়ে ভাবনার কথাটা জানালেন, ‘তাইজুল ও নাঈম খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। ওরা যতক্ষণ খেলতে পারে ততক্ষণ... সত্যি কথা বলতে, এই উইকেটের ওপর আমার তেমন বিশ্বাস নেই। কাল পরশু কী হবে জানি না, দেখা যাক।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিকানও বললেন, এই উইকেটে ব্যাট করা এখন থেকেই চ্যালেঞ্জ, ‘প্রথম দিন থেকেই টার্ন হচ্ছে, এই উইকেটে ব্যাট করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জ। আরও বেশি ভাঙবে সামনে, ব্যাট করা আরও কঠিন হবে। ওদের দ্রুত অলআউট করতে হবে আমাদের। অবশ্যই নিজেদের রক্ষণের ওপর আস্থা রাখতে হবে, কারণ বাংলাদেশের ভালো কিছু স্পিনার আছে।’
স্পিন কতটা ধরবে, সেটা পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা কালই। তবে তার আগে স্পিনাররা ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে কতোদূর নিয়ে যেতে পারেন, অপেক্ষা সেটিরই।