• বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • " />

     

    হাথুরুসিংহের ওই সময়টা ভালোই হয়েছে মুমিনুলের জন্য

    হাথুরুসিংহের ওই সময়টা ভালোই হয়েছে মুমিনুলের জন্য    


    এই বছরের শুরুতে চট্টগ্রামেই জোড়া সেঞ্চুরির পর মুমিনুল হক বলেছিলেন, ওই সময়টা ভুলে যেতে চান।

    কোন সময়ের কথা বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সামান্য খোঁজখবরও যারা রাখেন, তাদের এতক্ষণে বুঝে যাওয়ার কথা। দেড় বছর আগেও এই চট্টগ্রামে যখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামছেন, মুমিনুল হকের দলে জায়গাটা ছিল নড়বড়ে। তার আগে টেস্ট দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে হয়েছিল তুমুল হইচই। ততদিনে তাঁর চারটি টেস্ট সেঞ্চুরি আছে, গড়ও বাংলাদেশের স্বীকৃত অন্য সব ব্যাটসম্যানের চেয়ে বেশি। কিন্তু হাথুরুসিংহের সময়ে মুমিনুলের গায়ে যেন ‘ও চলে না’-র অদৃশ্য তকমা এঁটে গেল। শ্রীলঙ্কান এই কোচের সময়ে মাত্র একটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন মুমিনুল, বাকি সাতটিই তার আগে পরে।

    শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জোড়া সেঞ্চুরির পরও মুমিনুল বলেছিলেন, চ্যালেঞ্জটা ছিল তাঁর নিজের সঙ্গে। তারপরও ২০১৫-১৭ এই তিন বছরের সময়টা মুমিনুল ভুলেই যেতে চাইবেন। এই সময়ে টেস্টে কোনো সেঞ্চুরি নেই তাঁর, দল থেকে বাদও পড়তে হয়েছে। হাথুরুসিংহে ঠিক এক বছর আগে চলে গেছেন, এরপর থেকে মুমিনুলের ব্যাট যেন খাপখোলা তলোয়ার। মুমিনুল বলছেন, সেই তিন বছরে মুদ্রার অন্য পিঠ দেখাটা তাঁর জন্য আখেরে ভালোই হয়েছে, ‘হয়তো এটা আমার জন্য ভালো হয়েছে। মানুষের জীবনে ছোট ছোট সংগ্রামের ব্যাপার আসে, ওই সংগ্রাম থেকে যে যেভাবে পারে শিক্ষা নেয়। আমার কাছে মনে হয় ওই জিনিসটা আমার জন্য ভালো ছিল। আর ওইভাবে চিন্তা কোন সময় করিনি যে হাথুরুসিংহেকে দেখানোর জন্য ভালো খেলতে হবে। দিনশেষে আমাকেই মাঠে খেলতে হবে বাংলাদেশ দলের জন্য। ওইভাবে চিন্তা না করে সবসময় দলের জন্য কিভাবে ভালো করা যায় সেই চিন্তাই করি।’

    সেই চিন্তা থেকেই এ বছর পেয়ে গেছেন চারটি সেঞ্চুরি। মিরপুরে সেঞ্চুরিটি ম্যাচ জেতানো ছিল, এই টেস্টে তেমন হবে কি না সময়ই বলে দেবে। তবে আজকের সেঞ্চুরিতে মুমিনুল একই সঙ্গে ছুঁয়ে ফেলেছেন তামিম ইকবাল ও বিরাট কোহলিকে। বাংলাদেশের হয়ে তামিমের সবচেয়ে বেশি আটটি সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁয়েছেন, অন্যদিকে এই বছর কোহলির সবচেয়ে বেশি চারটি সেঞ্চুরিও হয়ে গেছে। মুমিনুল অবশ্য তামিম-কোহলির সঙ্গে কোনো তুলনাতেই যেতে চাইলেন না, ‘তামিম ভাই এর সাথে তুলনা করার প্রশ্নই আসে না। তিনি আমাদের দেশের, ক্রিকেট বিশ্বের অন্য পর্যায়ের ব্যাটসম্যান, আমার কাছে মনে হয় তুলনা করা ঠিক না। আর কোহলি তো আরও উঁচুতে। এইসব নিয়ে আমি চিন্তা করি না।’ 

    একটা আক্ষেপ অবশ্যই থাকবেই, সেঞ্চুরির পর ইনিংসটা বড় করতে পারলেন না। মুমিনুল নিজেই অবশ্য স্বীকার করেছেন, আলগা একটা শট খেলে উইকেট দিয়ে এসেছেন। ওই সময় তাঁর আউটের পরেই ধসের শুরু, সেটাও মানছেন। তবে নিজের ইনিংস বড় করা নিয়ে আলাদা করে কোনো আক্ষেপ নেই, ‘সবসময় আক্ষেপ থাকবে। আগের টেস্টেও যেমন ১৬০ (১৬১) করে আউট হয়েছি, তখনও ছিল। যখনই আক্ষেপ থাকবে না, তখন আপনি ওই একই জায়গায় থেকে যাবেন। আপনার যদি ক্ষুধা না থাকে পারফর্ম করার তাহলে আপনি একই জায়গায় থেকে যাবেন। আক্ষেপ সবসময় থাকে। যখন শুন্য করে আউট হই, একশ করি তখনও আক্ষেপ থাকে।’

    এই ক্ষুধাটা আছে বলেই মুমিনুল নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন অন্য উচ্চতায়।