'উইকেটে বল ঘুরছিল, সেটাই কাজে লাগিয়েছি'
অনেক প্রশ্নই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করা হলো তাঁকে। অভিষেকের রোমাঞ্চ, বিশ্বরেকর্ডের প্রতিক্রিয়া, পাঁচ উইকেট নেওয়ার অনুভূতি।– নাঈম হাসান মোটামুটি সব উত্তর সারলেন এক বাক্যে, কখনো দুই-তিন শব্দে। এমন একটা দিনেও তাই মোটামুটি ভাবলেশহীন বাংলাদেশের দলের এই স্পিনারের।
একটা কারণ অবশ্য অনুমান করা সহজ। সকালে অমন বোলিং করার পরেও মোটেই স্বস্তিতে নেই দল, প্রথম ইনিংসের চাইতেও এখন বোধ হয় আরও ভালো করতে হবে তাদের। নাঈমের নিজের অর্জনের চেয়ে তাই দলের পরিস্থিতি নিয়েই অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হলো। কিন্তু নাঈমের নিজের অর্জন নিয়েও যেসব প্রশ্ন হলো, সেসবও ব্যাট করার মতো ফ্রন্ট ফুটে গিয়ে ডিফেন্স করলেন।
অথচ রেকর্ড কম হয়নি। সবচেয়ে কম বয়সে টেস্ট অভিষেকে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি হয়ে গেছে। তাঁর চেয়ে কম বয়সেই টেস্ট ইতিহাসে ৫ উইকেট নিয়েছেন দুজন, বাংলাদেশের হয়ে বলা বাহুল্য তা কারোরই নেই। বাংলাদেশের বাস্তবতায় অবশ্য বয়সের রেকর্ড নিয়ে একটা সংশয়ের পর্দা থেকে যায়, বয়সের বেশির ভাগ রেকর্ড যে এই উপমহাদেশের! তারপরও অভিষেকে যা করেছেন, সেটা যে কোনো হিসেবেই নাঈমের জন্য গর্ব করার জন্য।
সেই কৃতিত্ব বরং নাঈম নিজের চেয়ে উইকেটকে দিতে বেশি উৎসাহী, ‘উইকেটে তো বল ঘুরছিল। ওইটাই কাজে লাগিয়েছি।’ কিন্তু তারপরও এমন উইকেটে বল করার কথা কি আশা করেছিলেন? নাঈম শুধু বললেন, ‘আমি এমন কিছু চিন্তা করি নি, আমি নরমালি যেরকম খেলি, যেরকম বল করি সেভাবেই বল করেছি।’
কিন্তু অভিষেকের রোমাঞ্চ তো আরেকটা কারণেই বেশি হওয়ার কথা। এই চট্টগ্রামেই নিজের প্রথম শ্রেণী আর বিপিএলের অভিষেক। এবার অভিষেক হলো টেস্টেও। আজ চট্টগ্রাম নিজের জন্মশহর বলে রোমাঞ্চটা আরও বেশি থাকার কথা। নাঈমের কথা শুনে সেরকম কিছু অবশ্য মনে হলো না। ভাবলেশহীন মুখে শুধু বললেন, ‘সব মাঠেই খেলতে হবে, চট্টগ্রাম বলে আলাদা কিছু নেই।’ জানালেন, বহদ্দারহাটের বাসা থেকে কেউ খেলা দেখতে আসেননি।
আজ যে ৫ উইকেট পেয়েছেন, তাতে সবচেয়ে প্রিয় উইকেট কোনটা সেই প্রশ্নও হলো। নাঈম বললেন, ওয়ারিকানকে করা বোল্ডেই আনন্দ পেয়েছেন বেশি। সেটা ছিল পঞ্চম উইকেট, বেশি হওয়ারই কথা। কোন স্পিনারকে আইডল হিসেবে মানেন, এমন প্রশ্নও হলো। অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়নের নাম বললেন নাঈম।
লায়নের পথে কতটা হাঁটতে পারবেন, তা সময়ই বলে দেবে।