• বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • " />

     

    'উইকেট অবশ্যই আনপ্লেয়বল ছিল না'

    'উইকেট অবশ্যই আনপ্লেয়বল ছিল না'    

    শনিবার দুপুর গড়ানোর পর যদি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এসে থাকেন, দেখবেন সব শুনশান। টেস্টের মাত্র তৃতীয় দিন চলছে, অথচ স্টেডিয়ামে এমন শ্মশানের নীরবতা। যে চট্টগ্রামে এই বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাঁচ দিনে ১৫০০র বেশি রান হয়েছে, মাত্র ২৭ উইকেট পড়েছে; সেখানে খেলা তিন দিনের আগেই শেষ! কাল এক দিনে পড়েছে ১৭ উইকেট, আজ ১৫টি পড়েছে চা বিরতির আগেই।

    স্কোরকার্ড দেখে থাকলে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক, এই উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য বধ্যভূমি। উইকেট কি ‘আনপ্লেয়বল’ ছিল কি না, সেই প্রশ্ন করা হলো অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকেও। সাকিবের উত্তরেই অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে গেল, ‘প্রতিটা উইকেটই আমার কাছে মনে হয় আলাদা। আর আনপ্লেয়েবল বলবো না কারণ তা না হলে নাইন্থ উইকেট পার্টনারশিপ ৫০-৬০ রানের হতো না। সো আনপ্লেয়েবল অবশ্যই ছিল না।’

    এই ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই নবম উইকেটে তাইজুল-নাঈম ৬৫ রানের মহামূল্যবান জুটি গড়েছিলেন। মুমিনুল হক তখন বলেছিলেন, এই জুটি ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে। সেই কথাটাই ফলে গেছে শেষ পর্যন্ত। তবে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের নবম উইকেট জুটি যেভাবে ব্যাট করছিল্, তাতে পরিষ্কার উইকেটে এমন কোনো জুজু ছিল না। জোমেল ওয়ারিকান ও সুনীল আমব্রিস একটা সময় ভয়ই ধরিয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। ম্যাচ শেষে সাকিব সেটি স্বীকারও করেছেন।

    এই তিন দিনে যে ৪০ উইকেট গেছে, তাতে ব্যাটসম্যানদের কিছুই করার ছিল না খুব কম আউটেই। আজ যেমন দেবেন্দ্র বিশু সকালে মিরাজকে দারুণ একটা বলে বোকা বানিয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে আজ তাইজুল-সাকিবদের যতটা না কৃতিত্ব, তার চেয়েও বেশি ব্যাটসম্যানদের বলের লাইনে যেতে না পারা আর ঠিকঠাক পায়ের ব্যবহার না করা। কাইরন পাওয়েলের প্রথম বলেই স্টাম্পিং দিয়ে যেটির শুরু। চেজ, ব্রাথওয়েটরা ক্রিজে আটকে থেকে উইকেট দিয়ে এসেছেন, একই দোষে দোষী হোপও। নতুন বলে খেলা কঠিন ছিল অবশ্যই, তবে বল পুরনো হওয়ার পর সহজ হয়ে এসেছে খেলা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্রাথওয়েটও বলেছেন, পুরনো বলে খেলা সহজ ছিল।

    এই ম্যাচ শুরুর আগেই সাকিব বলেছিলেন, এই উইকেট স্পিন ধরবে বলেই ধারণা করছেন। সেই স্পিন ধরেছে তো বটেই, ব্যাটসম্যানরাও দুর্বল টেকনিকে স্পিনারদের কাজটা সহজ করে দিয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের জন্য স্পিনের ফাঁদ পাতা হবে, সেটা অনুমিতই ছিল। সাকিবের কন্ঠে তাই পছন্দমতো উইকেট পাওয়ার তৃপ্তি, ‘দেখুন আমাদের হোমে যে ধরনের উইকেট হওয়ার উচিত কিংবা দরকার, সেই ধরনের উইকেটই তাঁরা বানানোর চেষ্টা করেছে।’ সঙ্গে সঙ্গেই মনে করিয়ে দিলেন, ‘উইকেট যেমনই আমরা যদি ভালো জায়গায় বল না করি তাহলে কিছুই কাজে আসে না। এগুলো আসলে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। ’

    তাহলে এই ধরনের উইকেটে কেমন ব্যাট করা উচিত? হেটমেয়ারের মতো মেরে খেলাই কি সমাধান? সাকিবের উত্তরটা সরল, ‘একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম। যে মারতে পারে না সে যদি মেরে খেলে তার জন্য তো হিতে বিপরীত হবে। আর যে মেরে খেলে সে যদি ঠেকাতে চায় তাহলেও একই ব্যাপার হবে। যার যে গেমে প্ল্যান সেটাতেই অটল থাকা উচিত। নিজের খেলার ওপর বিশ্বাস রাখা উচিত।’

    মিরপুরে সেই বিশ্বাসটা ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে তো বটেই, সাকিবের নিজের জন্যও দরকার।