স্পিন-চতুষ্টয় নিয়ে অতৃপ্তিও আছে সাকিবের
বিষেন সিং বেদী, এরাপল্লী প্রসন্ন, ভগবৎ চন্দ্রশেখর, শ্রীনিবাস ভেঙ্কটরাঘবন- ভারতের এই স্পিন চতুষ্টয়ের নাম ক্রিকেট ইতিহাসে সামান্য মনযোগী পাঠকেরও জানার কথা। তিন বছর আগে বাংলাদেশের এক শীর্ষ অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রসন্ন বলেছিলেন, বাংলাদেশও পেতে পারে স্পিন-কোয়ার্ট্রেট। চট্টগ্রাম টেস্টেই ফলে গেল প্রসন্নর কথা। সাকিব দলে ফেরায় চারজন স্পিনার নিয়ে নামতে পেরেছে বাংলাদেশ- দলের জয়ে যাদের প্রত্যেকেই রেখেছেন বড় অবদান।
তিন স্পিন সতীর্থকে নিয়ে নিজের আনন্দের পাশাপাশি সাকিব আরেকটা চাওয়ার কথাও বললেন।
বাংলাদেশের ২০টি উইকেটই চারজন স্পিনার ভাগ করে নিয়েছেন, সেটা খুবই স্বাভাবিক। মোস্তাফিজুর রহমান একমাত্র পেসার হিসেবে খেলে দুই ইনিংস মিলে বলই করেছেন চার ওভার। তাইজুল সাত উইকেট নিয়ে একটু বেশি এগিয়ে ছিলেন, পাঁচটি করে পেয়েছেন নাঈম-সাকিব। মিরাজ তিনটি উইকেট পেলেও প্রতিটি ব্রেকথ্রু ছিল গুরুত্বপূর্ণ। দুই ইনিংসেই হেটমেয়ারের উইকেট নিয়েছেন, আজ ফিরিয়েছেন বিপজ্জনক হতে থাকা ওয়ারিকানকে।
তবে সাকিব মনে করিয়ে দিচ্ছেন, উইকেটের সাহায্যটাও পেয়েছেন বোলাররা, ‘আমাদের যেই কয়জন স্পিনার আছে, সবাই খুবই মানসম্পন্ন স্পিনার, বিশেষ করে যদি উইকেটে একটু সহায়তা থাকে। উইকেটে একদম সহায়তা না থাকলে আমাদের বল তেমন কার্যকরী মনে হবে না।’
সাকিবের অবশ্য একটা জায়গায় আক্ষেপ আছে। চট্টগ্রামের উইকেটে স্পিনাররা যেমন বল করেছেন, তাতে আক্রমণাত্মক হওয়াটা ছিল পরিস্থিতির দাবি। স্লিপ, সিলি মিড অন বা অফ, শর্ট লেগ নিয়ে বল করতে পেরেছেন বোলাররা। সাকিব বলছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী কখনো উইকেট নেওয়ার চাইতে রান না দেওয়াটাও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, ‘তবে আমাদের একটা জিনিসে সব মিলিয়ে উন্নতি করা উচিত, সেটা হলো আমাদের গেইম-সেন্সটা থাকা উচিত। আমরা যারা আছি স্পিনাররা, সবাই খুব আক্রমণাত্মক বোলার। আমাদের জন্য রক্ষণাত্মক বল করাটাও অনেকসময় কঠিন হয়ে যায়। আমরা সবসময় আক্রমণাত্মক অপশনেই যাই। আমাদের বুঝতে হবে, জানতে হবে কখন দুই- তিনটা ওভার রান না দিয়ে বল করে যাবে, এক প্রান্তে যেন আরেকজন আক্রমণ করতে পারে। এই জিনিসগুলো জানাটাই আমাদের জন্য একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
সেই কথাটা পরে আবার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলেন সাকিব, ‘আমাদের চারজনই খুবই আক্রমণাত্মক বোলার। একদিক থেকে খুব ভালো আবার একটু সমস্যাও। সবসময় আক্রমণই করতে থাকে, এই পাশ থেকে একটু ভালো বল হচ্ছে, আরেক দিক থেকে একটু রক্ষণাত্মক বল করবে, ওরা আর করতে পারে না। সেও উইকেট নিতে যায়। অনেক সময় রানটা হয়ে যায়। এটা বোঝাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
এই টেস্টের দুইটি পরিস্থিতিতে সেটি দেখা গেছে কিছুটা। হেটমেয়ার যখন মারছিলেন, উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে লাইন-লেংথ কিছুটা এলোমেলো হয়ে গেছে বোলারদের। আবার আজ নবম জুটিতেও ওয়ারিকান-আমব্রিসদের আলগা বল করে রান নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন স্পিনাররা। মিরপুরে অন্তত এই জায়গায় উন্নতির ছাপ দেখতে চাইবেন অধিনায়ক।