• বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • " />

     

    'টেস্ট শুরুর আগে সবচেয়ে কষ্ট, জিতে গেলে সবচেয়ে আরাম'

    'টেস্ট শুরুর আগে সবচেয়ে কষ্ট, জিতে গেলে সবচেয়ে আরাম'    


    অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের জন্য এই সিরিজটা খুবই স্পেশাল। দেশের মাটিতে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সিরিজ জয়, তাও আবার প্রথমবার ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে- অধিনায়ক সাকিব এর চেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারতেন না। ব্যক্তি সাকিবের জন্যও দারুণ স্পেশাল, ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মতো টেস্টে সিরিজসেরা হয়েছেন। এত সব অর্জনের মধ্যেও সাকিবের কন্ঠে টেস্ট জয়ের আনন্দের রাগভৈরবী বাজছে আলাদা করে। টেস্ট জয়ের অনুভূতির সঙ্গে আর কোনো কিছুর তুলনা, কথাটা বললেন জোর দিয়েই।

    দেশের মাটিতে বছরখানেকেরও বেশি সময় পর এই সিরিজেই টেস্টে ফিরেছেন সাকিব। সেটাও আবার এলাম, দেখলাম, জয় করলামের মতো। এর মধ্যে বিদেশে দেখতে হয়েছে টেস্টে ধবলধোলাইয়ের মুদ্রার অন্য পিঠ। টেস্ট জয়ের সন্তুষ্টির রেশ তাই লেগে ছিল সংবাদ সম্মেলনে তৃপ্ত সাকিবের চোখেমুখে, ‘সেদিন ড্রেসিং রুমে বলছিলাম, একটা টেস্ট জেতার পর যে সন্তুষ্টি আসে, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি জিতলে সেটা আসে না। এর সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, এত বেশি পরিশ্রম করতে হয়, এত বেশি মাথা খাটাতে হয় আর এত বেশি সময় ধরে একটা ‘টেস্ট’ চলতে থাকে খেলোয়াড়দের মধ্যে তারপরে যে ফল আসে আমি মনে করি তার জন্য গর্বই বোধ করে। আমি নিশ্চিত তিন-চার-পাঁচ দিন ধরে পরিশ্রমের ফল যখন পায় একজন খেলোয়াড় তার জন্য সেটা খুব বড় সন্তুষ্টির একটা ব্যাপার হয় সেটা। যখন খেলার ভেতরে ঢুকে পড়ি, ব্যাটিং রান করি, বোলিংয়ে উইকেট পাই তখন অনেক বেশি মজা লাগে। সেটা ওয়ানডে বলি, টি-টোয়েন্টি বলি তার চেয়ে অনেক বেশি লাগে।’

    গত বছরেই অবশ্য টেস্ট থেকে কয়েক মাসের একটা বিরতি নিয়েছিলেন সাকিব, অবসাদ্গ্রস্ত হয়ে পড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটা সিরিজে খেলেনওনি। সাকিবকে অবশ্য সেই প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দেওয়া হলো না। তবে  টেস্ট খেলার ধকলটা যে অনেক বেশি সেটা রসিকতা করেই বললেন,  ‘টেস্টটা শুরু হওয়ার আগে সবচেয়ে কষ্ট লাগে। টেস্ট জিতে গেলে সবচেয়ে আরাম লাগে। বড় বড় ম্যাচ তো জিতেছি কিন্তু ওই মজাটা তো টেস্টের মতো লাগে না। কিন্তু শুরুর আগে অনেক কষ্ট লাগে, টেনশন হয়। পাঁচ দিন খেলা, বয়স হয়ে যাচ্ছে। সব কিছু মিলিয়ে খেলার আগে কষ্ট লাগে।’

    তবে চমকে দিয়েছেন একটা কথা বলে। চট্টগ্রাম টেস্টের আগে তাঁর ফেরাটা খুব প্রত্যাশিত ছিল না। কয়েক দিন অনুশীলন করে ফিরেছিলেন, প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা তো অনেক দূরের ব্যাপার। সাকিব বলছেন, চট্টগ্রামে তিনি খেলতেই চাননি, ‘ সত্যি কথা বলতে, প্রথম টেস্টটা আমি খেলতে চাই নি। একমাত্র কোচের কারণেই খেলাটা হয়েছে। আমি কখনই খেলতাম না। আমাকে যতবার বলেছি, আমি বলেছি আমি পারবো না। কারণ আমার ঐ বিশ্বাসই ছিল না। আপনারা যদি আমার বোলিং দেখেন, আমি তিন-চার ওভারের স্পেল করেছি। কারণ আমার শরীরের অবস্থাই ওই রকম ছিল না। কিন্তু ও যেটা বলেছে যে, তুমি ম্যাচ খেলেই ফিট হতে পারবে।’

    আজ অবশ্য রসিকতার মুডে ছিলেন সাকিব। নিজের ফিটনেস নিয়েও মজা করেছেন, ‘ আমার মনে হয় আমি একমাত্র প্লেয়ার ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটে যে ম্যাচ খেলে ফিট হই।’ পরক্ষণেই আবার সিরিয়াস হলেন, ‘ তবে একটা জিনিস ভালো যে আমি যে ছোট ছোট কন্ট্রিবিউশন করতে পেরেছি, স্পেশালি নতুন বলে ব্রেক থ্রু গুলো আমার কাছে মনে হয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অবশ্যই সবাই ভালো বোলিং করেছে, তবে ওই কন্ট্রিবিউশন গুলো আমি মনে করি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই সিরিজে জেতার পেছনে। ’

    ভাগ্যিস সাকিব খেলেছিলেন। সেজন্য একটা ধন্যবাদ পাওনা কোচ স্টিভ রোডসেরও!