মুমিনুল-তাইজুল-মিরাজের সামনে বিরল হাতছানি
দেশের মাটিতে বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সিরিজ হার দিয়ে শুরু, বছরের শেষটা হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্টে ধবলধোলাই করে। সব মিলে এই বছরে বাংলাদেশের টেস্ট খতিয়ানটা এরকম- আটটি টেস্ট খেলে তিনটি জয়, চারটিতে হার ও একটি ড্র। দলীয় সাফল্যের বিচারে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বছর হয়ে গেল ২০১৮, ২০১৪ সালেও অবশ্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটি টেস্ট জিতেছিল। তবে ব্যক্তিগত পরিসংখ্যান যেন এই বছর ছাড়িয়ে গেছে দলীয় সাফল্যকেও। অন্তত আজ পর্যন্ত টেস্টে এই বছরের শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যান ও বোলারদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের তিন জন।
মুমিনুল হকের বছরের শেষটা আরও ভালো হতেই পারত। এই বছর ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জোড়া সেঞ্চুরি দিয়ে শুরু। এরপর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মিরপুর আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরটা বাজে গেলেও বছরের শেষে আবার চিনিয়েছেন নিজেকে। জিম্বাবুয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি দিয়ে ব্যাটসম্যানদের তালিকায় ঢুকে গেছেন শীর্ষ পাঁচে। যদিও অন্য দলগুলোর এই বছর আরও ম্যাচ থাকায় মুমিনুলকে হয়তো সরে যেতে হবে শীর্ষ পাঁচ থেকে। তবে এই বছর সর্বোচ্চ চারটি সেঞ্চুরি নিয়ে এখন পর্যন্ত বিরাট কোহলির পাশেই আছেন মুমিনুল। আর শীর্ষ পাঁচে না থাকলেও একটা জায়গায় মুশফিকুর রহিম অনন্য। এই বছর এখন পর্যন্ত টেস্টে একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরিটা তাঁর। তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান বছরের অনেকটা সময় চোটে না থাকলে তাঁদের টেস্ট পরিসংখ্যানও আরও উজ্জ্বল হতে পারত।
বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানই অবশ্য টেস্টে বছর শেষে শীর্ষ পাঁচে থাকতে পারেননি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে এক বছরে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড তামিম ইকবালের। ২০১০ সালে নিজেকে চেনানোর বছরে তামিম করেছিলেন ৮৩৭ রান, তবে ওই বছর শীর্ষ দশেও ছিলেন না তামিম। ২০০৩ সালে ৮০১ রান করে যেমন শীর্ষ দশে ছিলেন না হাবিবুলও।
বোলারদের মধ্যে এই বছর শীর্ষ পাঁচে যেমন দুজন। তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ সিনিয়র সতীর্থ সাকিবকে ছাড়িয়ে নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন স্পিন জোয়াল। দুজনেই আছেন শীর্ষ পাঁচে। ৪৩ উইকেট নিয়ে তাইজুল চারে, মিরাজ পাঁচে। বছর শেষে অবশ্য দুজনেরই শীর্ষ পাঁচ থেকে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে একটা জায়গায় দুজনের সঙ্গী যেমন হোল্ডার। তাইজুল-মিরাজের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়কেরই শুধু এই বছর টেস্টে চার বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে শীর্ষ পাঁচে থাকার সবচেয়ে কাছাকাছি ছিলেন মোহাম্মদ রফিক। ২০০৩ সালে রফিক নিয়েছিলেন ৩৩ উইকেট। এই বছর টেস্টে তাঁর চেয়ে ওপরের নামগুলো দেখুন-এনটিনি, ম্যাকগিল, মুরালিধরন, পোলক, গিলেস্পি, লি। বলাই বাহুল্য, বোলারদের মধ্যে আর কেউ শীর্ষ পাঁচেও ঢুকতে পারেননি কখনো।
একটা কারণ অবশ্য সহজেই অনুমেয়। অন্যদের তুলনায় টেস্ট খেলার সুযোগও অনেক কম আসে বাংলাদেশের। এই বছরে যেমন মুমিনুল-মিরাজ-তাইজুলরা তালিকার ওপরে থাকা বাকিদের চেয়ে কম টেস্ট খেলেছেন। সামনে কি এই আফসোস ঘুঁচবে?