• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    চেলসিতে চূর্ণ সিটির অপরাজেয়-দর্প

    চেলসিতে চূর্ণ সিটির অপরাজেয়-দর্প    

    প্রিমিয়ার লিগে টানা ২২ ম্যাচ অপরাজিত থেকে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে গিয়েছিল পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। আর দারুণ শুরুর পরও শেষ তিন ম্যাচের দুইটিতেই হেরে রঙ হারিয়েছিল চেলসি। কিন্তু লন্ডনের নীলের কাছে ম্যানচেস্টারের আকাশি নীলই ধূসর হয়ে গেল। মরিজিও সারির দলের কাছে চূর্ণ হলো ম্যানচেস্টার সিটির অপরাজেয় দর্প। চেলসির কাছে ২-০ গোলে হেরে আরও বড় খেসারত দিতে হয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থান থেকে দুইয়ে নেমে গেছে সিটি।   

    ইংল্যান্ডে আসার পর সারির প্রথম পরীক্ষা ছিল সিটির বিপক্ষেই। আগস্টে কমিউনিটি শিল্ডের ম্যাচে সিটির কাছে পাত্তাই পায়নি চেলসি। গার্দিওলার দলকে মাটিতে নামিয়ে এনে নিয়ে ৫ মাস পর সেই প্রতিশোধই নিয়েছেন সারি।

    চেলসিতে যোগ দিয়ে এনগোলো কান্তেকে নিজের স্বাভাবিক পজিশন থেকে কিছুটা সামনে খেলানো শুরু করেছিলেন চেলসি কোচ। 'বিগ ম্যাচে' তার সেই বদলটাই বদলে দিয়েছে চেলসিকে। ভালো শুরু করেছিল সিটিজেনরাই, বল দখলের লড়াইয়েও এগিয়ে ছিল তারা। চেলসির অর্ধেই প্রথমার্ধে বল গড়িয়েছে বেশি। রাহিম স্টার্লিং, লিরয় সানেরা বেশ কয়েকবার ডিবক্সের ভেতর ঢুকেও অবশ্য দলকে গোল এনে দিতে পারেননি। ৩৩ মিনিটে ভালো জায়গা থেকে সানে শট করেছিলেন, সেবার সিজার আজপিলিকুয়েতার ব্লকে বল চলে যায় বাইরে দিয়ে। চেলসির আরেক সেন্টারব্যাক ডেভিড লুইজও ছিলেন সতর্ক। প্রথমার্ধে তাই লড়াইয়ে এগিয়ে থেকেও, গোলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি সিটির।  

    অন্যপ্রান্তের চিত্র অবশ্য ছিল পুরো বিপরীত। সিটির রক্ষণে বল গিয়েছে কমই। কিন্তু যখন গেল, তখনই গোল নিয়ে ফিরল চেলসি। উইলিয়ান শুরু করেছিলেন আক্রমণ, এরপর এডেন হ্যাজার্ড ডিবক্সের ভেতর থেকে কিছুটা পেছনে পাস দেন। পেছন থেকে দৌড়ে এসে সেই কান্তেই করেন বুলেট গতির এক শট। তাতেই ছিন্ন বিচ্ছিন্ন সিটির রক্ষণ, ৪৫ মিনিটের ওই গোলে লিড নিয়ে বিরতিতে যায় চেলসি।

    প্রথমার্ধে ওই একটি শটই করতে পেরেছিল চেলসি। কান্তেকে দেওয়া হ্যাজার্ডের পাসটা ছিল সিটির অর্ধে চেলসির ৬ নম্বর সফল পাস! ম্যাচে এগিয়ে থাকার পুরো সুবিধাটা নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সিটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চেলসি। একপেশে খেলা তখনই বদলায় রঙ, সেখান থেকে আর ফেরাও হয়নি গার্দিওলার দলের। ৪৮ মিনিটে ফ্রিকিক থেকে উইলিয়ান কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন সিটিজেনদের, কিন্তু এডারসন মোরায়েসের সেভে সে দফায় বেঁচে যায় তারা। ৪ মিনিট পর সেই উইলিয়ানই আরেকটু দেখেশুনে শট করলেও দ্বিতীয় গোলটাও তখনই পেয়ে যেতে পারত চেলসি।

    সার্জিও আগুয়েরোর ইনজুরিতে স্ট্রাইকার ছাড়াই খেলতে নেমেছিল সিটি। চাপে পড়ে যাওয়ার পর গ্যাব্রিয়েল হেসুসকে নামাতেই হয় গার্দিওলার। কিন্তু তাতেও সুফল পায়নি সিটি। ৯৪ মিনিটে হেসুসের একটি শট ঠেকাতে হয়েছিল কেপা আরিজালাগাকে। চেলসি গোলরক্ষক এছাড়া পুরো ম্যাচে বেগ পেতে হয়নি তেমন।  দলের সবচেয়ে তরুণ খেলোয়াড় ফিলিপ ফোডেনকেও বাজিয়ে দেখেছিলেন গার্দিওলা। কিন্তু চেলসির বিপক্ষে সিটির আক্রমণভাগ দিনশেষে ব্যর্থই হলো। তবে এসবেরও অনেক আগেই চেলসি খেলাটা নিজেদের করে নেয় ডেভিড লুইজের কল্যাণে।

    পুরো ম্যাচে সিটি কর্নার পেয়েছে মোট ১৩টি, আর চেলসি একটি। সেটাও ৭৮ মিনিটে। প্রথম শটের মতো প্রথম কর্নার থেকেও গোল পেয়ে যায় ঘরের দল। হ্যাজার্ডের কর্নার থেকে লুইজের হেড সিটির জালে জড়ালে তখনই খেলার ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়।

    প্রিমিয়ার লিগের ১৬ ম্যাচ শেষে তাই অপরাজিত থাকল একটি দলই, লিভারপুল। সিটির চেয়ে এক পয়েন্টে এগিয়ে তাই কপরাই উঠে গেছে সবার ওপরে। আর ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার তিনে অবস্থান চেলসির।

     

    ইউনাইটেডের সহজ জয়, হাডার্সফিল্ডকে হারাতে ঘাম ঝরাতে হলো আর্সেনালকে

    দুইদল আগের ম্যাচে ড্র করেছিল ২-২ গোলে। ড্র ম্যাচে আর্সেনালের তৃপ্তিই বেশি থাকার কথা। কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতেই দুই দল খেলল দুইরকম ম্যাচ। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফুলহামকে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।  অ্যাশলি ইয়াং, হুয়ান মাতা ও রোমেলু লুকাকুর গোলে প্রথমার্ধেই ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছিল রেড ডেভিলরা। পরের অর্ধে ফুলহাম এক গোল শোধ দিয়েছিল, কিন্তু  ৮২ মিনিটে মার্কঅা র‍্যাশফোর্ডের গোলে শেষ পর্যন্ত বড় জয় নিশ্চিত হয় হোসে মরিনহোর দলের।

    আর এমিরেটসে লুকাস তোরেয়েরার ৮৩ মিনিটের গোলে হাডার্সফিল্ডকে হারিয়েছে আর্সেনাল।