• বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • " />

     

    যে কারণে মিঠুনের বদলে সৌম্য

    যে কারণে মিঠুনের বদলে সৌম্য    

    তামিম ইকবালের সঙ্গী হবেন কে, প্রশ্ন ছিল সেটা। লিটন দাস-ইমরুল কায়েস-সৌম্য সরকার ত্রয়ীর মাঝে কজন খেলবেন, প্রথম ওয়ানডের আগে প্রশ্ন ছিল সেটাও। বাংলাদেশ খেলালো তিনজনকেই, বাদ পড়লেন মোহাম্মদ মিঠুন। ব্যাটিং অর্ডারে অবশ্য বেশ অদলবদলও করতে হলো এ কারণে। লিটনকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে ইমরুল এলেন তিনে, সাকিব তিন থেকে নেমে গেলেন পাঁচে। আর সৌম্য এলেন ছয়ে। ম্যাচশেষে এসব ট্যাকটিকস ব্যাখ্যা করলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। সৌম্যর ক্ষেত্রে প্লাস পয়েন্ট হয়ে এসেছে তার বোলিং, যেটা বাংলাদেশ রাখতে চেয়েছিল বাড়তি অপশন হিসেবে, সঙ্গে আছে শট খেলার সামর্থ্যও। সৌম্যকে ছয়-সাতেই খেলানো হবে বলেও জানিয়েছেন মাশরাফি। 

    “সৌম্যর আসলে ছয়ে-সাতে ব্যাট করার অভ্যাস আছে। এশিয়া কাপ ফাইনালে সাতে খেলেছে”, বলেছেন মাশরাফি। “আবার ওর হাতে শট খেলার সামর্থ্য আছে। পেস বল সামলাতে পারে। ইনফর্ম আছে। শেষ তিন ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেছে। যদিও একটা আন-অফিশিয়াল। মিঠুনও ভাল ফর্মে আছে। কিন্তু শিশির বা সব কিছু চিন্তা করে, যদি স্পিনাররা ভোগে, সৌম্যর কাছ থেকে কিছু ওভার পাওয়া যায় কিনা এসব চিন্তা করে আসলে সৌম্যকে খেলানো। আর ও নিজেও তো ফর্মে আছে।”

    সৌম্যকে জায়গা করে দিতে বাদ পড়া মিঠুনের ব্যাপারটা অবশ্য দূর্ভাগ্যজনকই বলছেন মাশরাফি, “সৌম্য ছয়, সাতে নামবে। ছয়, সাতে যারা নামে, তাদের শট খেলার সামর্থ্য থাকে, মিঠুনের নাই তাও না। তবে কিছুটা সহজ হয়েছে সাকিব পাঁচে ব্যাট করাতে। যেহেতু সাকিব পাঁচে ব্যাট করছিল, সেহেতু মিঠুন এবং সৌম্যের ভেতর সৌম্যর ক্ষেত্রে হয়ত (কাজ করেছে) যদি তার কাছ থেকে কিছু ওভার যদি পাওয়া যায়।”

     

     

    “মিঠুনের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। আমি বলবো ও খুব দুর্ভাগা। যে ফর্মে ছিল সেখান থেকে খেলতে না পারা। ও পাঁচে ব্যাটিং করেছে, ছয়ে পারবে না তাও না। সাকিব পাঁচে থাকায় ওখানে ‘হেভি’ ব্যাটসম্যান রাখতে পারলে সুবিধা হত, এই ফরম্যাটে। কিন্তু কোনো কিছুই আসলে নিশ্চয়তা দেয় না। তবে টপ তিনে এদের চার জনের তিন জনেরই খেলার সম্ভাবনা বেশি। যেহেতু এই মুহূর্তে বাইরে ওইরকম কেউ নাইও।”

    সৌম্যকে এ ম্যাচে যেখানে খেলানো হলো, আগামী বছর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সে সময় পেসার বোলিংয়ের সম্ভাবনার ব্যাপারটাও মাথায় রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট, “সৌম্য তো আসলে স্পিন থেকে পেস বেশি খেলতে পছন্দ করে। সাধারণত যেটা হয় ওপেনাররা স্পিনের চেয়ে পেস বলে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। সৌম্য যে জায়গায় খেলছে, বিশ্বকাপে এই পজিশনে কিন্তু পেস বোলাররাই বোলিং করবে। কোনোভাবেই মিঠুনকে ছোট করার কোনো সুযোগ নেই। ও এশিয়া কাপে যে ইনিংসগুলো খেলেছে, এমনকি জিম্বাবুয়ের সঙ্গেও ও ভালো খেলেছে।”

    “(তবে) আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, এখানে একটা কম্বিনেশন দাঁড় করানোর ব্যাপার আছে। আমাদের চারজন ওপেনার খেলানো হলেও ওদের দুয়েকজনের এই সামর্থ্য আছে যে অন্য জায়গায় ব্যাটিং করতে পারবে। লিটনও ছয় নম্বরে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছে টেস্টে। সেই সামর্থ্য থাকা দলের ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়ায়। একই সময়ে খেলোয়াড়দের জন্যও ভালো। আর সাথে তো মিঠুন আছেই। ওকে আমরা এমনভাবে রাখতে চাই যেন ও নিজের জায়গায় ফিরে আসতে পারে। মিঠুন আমার মনে হয় মানসিকভাবে ঠিকও আছে। ১৬ জনের মধ্যে এখন যারা আছে আমার মনে হয়, মোটামুটি গোছানো আছে।”

    আর সাইফউদ্দিনের বদলে তৃতীয় পেসার হিসেবে রুবেলকে খেলানোর ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে বোলিংয়ের ধরন, “আমাদের সবাই একই ধরনের বোলার। মোস্তাফিজ, আমি। একই ধরনের বোলার, কাটার কিংবা একটা লেংথে বল করা (আমাদের বৈশিষ্ট্য)। রুবেলের ব্যাপারটা আলাদা। ওর ভ্যারিয়েশন আছে, পেস আছে। ওরা যদি শট খেলা শুরু করে তখন দেখা যায় যে বাউন্সার বা অনেক কিছুর চেষ্টা করতে হতে পারে। সে সব চিন্তা করে ওকে রাখা।”

    আজ বাকি বোলাররা চারের নিচে ওভারপ্রতি রান দিলেও খরুচে ছিলেন রুবেল, ১০ ওভারে গুণেছেন ৬১ রান। এই পেসারের ওপর ভরসা অবশ্য তাতে কমছে না বাংলাদেশ অধিনায়কের, “রুবেলের সামর্থ্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। ও শেষ ম্যাচ যেটা খেলেছে, এশিয়া কাপের ফাইনাল- সেখানে ওর বোলিংয়ের জন্যই আমাদের জেতার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছিল। রুবেলকে নিয়ে দ্বিধা তৈরির কোনো প্রয়োজন আপাতত নাই।”