খেলা-রাজনীতির সন্ধিক্ষণটা কঠিন বলেই মানছেন মাশরাফি
মাশরাফি বিন মুর্তজার এখন প্রতিদিনই নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। তার সবটাই যে মধুর সেটাও বলা যাচ্ছে না। কদিন আগেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন নড়াইল ২ আসন থেকে। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই নেমে যেতে হচ্ছে ২২ গজে। মাশরাফি নিজেও আজ একাডেমী মাঠে মেনে নিলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে খাপ খাইয়ে নেওয়াটা একটু কঠিনই হয়ে যাচ্ছে তাঁর জন্য।
ঢাকায় ফেরার পর প্রথম দিন গত বুধবার শুধু জিম করতে এসেই মাশরাফির সঙ্গে পড়ে যাত ছবি তোলার হিড়িক। পরের দিন শপথ নেওয়ার জন্য ছিলেন না অনুশীলনে, ধরতে গেলে আজই পুরোপুরি অনুশীলন করেছেন। এর মধ্যে মাসখানেক ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন, যদিও বিপিএল বলেই এই বিরতিটা হয়তো খুব একটা চিন্তার জায়গা হচ্ছে না। তবে একবার খেলা, এরপর রাজনীতি, তারপর আবার খেলা...মনোজগতে পরিবর্তনটা বার বারই হচ্ছে। মাশরাফি নিজেও তা মেনে নিলেন, ‘ট্রানজিশন পার্টটা খুব কঠিন। খুব কুইক, শর্ট টাইমের ভেতরে। বাট ম্যানেজ করছি, চেষ্টা করছি। এখন দেখা যাক, আল্লাহ ভরসা।’
বিপিএলে রংপুর গত বারের চ্যাম্পিয়ন। এবার ডি ভিলিয়ার্স, গেইলদের নিয়ে আগের বারের চেয়েও ভালো দল। অধিনায়ক হিসেবে কী করতে হবে, সেই ছক মাশরাফির মাথায় আছেই। আর বিপিএলে কীভাবে জিততে হয়, সেটা তাঁর চেয়ে ভালো তো আর কেউ জানে না। মাশরাফির নিজের ব্যাটিং আর বোলিং নিয়ে কী পরিকল্পনা করছেন? জানালেন, তাঁর ধাতস্থ হতে একটু সময় দরকার, ‘এখন আমি খেলায় পুরোপুরি ঢুকে আছি। সো আমার জন্য খুব ভাল হবে। তবে আমার জন্য একটু টাইমও লাগবে হয়তো। টুর্নামেন্ট শুরু হলে মানিয়ে নিতে পারবো আশা করি।’
প্রসংক্রমে এলো চোটের কথাও। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের জন্য নির্বাচনী প্রচার শুরু করতেই দেরি হয়েছিল। তখন বলেছিলেন, হাফ ফিট অবস্থায় খেলছেন ওয়ানডেতে। এই মুহূর্তে পুরোপুরি সেরে ওঠেননি বলেই জানালেন, ‘চোটের কথা যেটা বললেন, সেটা এখনো কিছুটা আছে। চেষ্টা করছি ওখান থেকে ঠিক হওয়ার। তো আমার হাতে নেই।’
এবার শুধু মাশরাফির দলেই আছেন গেইল, ডি ভিলিয়ার্সের মতো খেলোয়াড়। ওদিকে ওয়ার্নার, স্মিথ, রাসেলদের নিয়ে এর চেয়ে তারকাখচিত বিপিএল আগে দেখা যায়নি। মাশরাফি অবশ্য নিশ্চিত নন, তারপরও বিপিএলে রানের বন্যা দেখা যাবে কি না, ‘এমনি যদি আপনি টুর্নামেন্টের স্ট্রেংথ দেখেন হয়তো বা আমাদের উইকেটগুলা ওইরকম সাপোর্ট করে না, অনেক সময়। তো এইটা একটা কারণ। কারণ মানুষ চায় যে বড় রান দেখতে। ১৮০,১৯০ বা ২০০ রান হলে চেজ হচ্ছে তখন টুর্নামেন্টের গ্রহণযোগ্যতা অনিবার্য। উইকেট তো অবশ্যই একটা ব্যাপার। চট্টগ্রামে খেলা হলে দেখবেন ব্যাটসম্যান, বোলার সবাই এনজয় করে।ওই চ্যালেঞ্জটা থাকে। বাট এবার কিছু ভালো প্লেয়ার এসেছে। আগেরবার যারা এসেছে তার থেকে কোয়ালিটি এবং বিশ্বক্রিকেটের ইনফর্মড প্লেয়ার রাইট নাও আছে। তো হয়তো বা টুর্নামেন্টের গ্রাফটা ওপরের দিকে যাবে আশা করছি।’
সবকিছুর চেয়ে বড় প্রশ্ন, এই মুহূর্তে ক্রিকেটার না সংসদ সদস্য, কোন পরিচয়টা বেশি চাইছেন, ‘দেখেন আমি আশা করি খেলোয়াড় হিসেবেই এখানে পরিচিত এবং মাঠেও নামছি খেলোয়াড় হিসেবে, সংসদ সদস্য হিসেবে না। আশা করি আপনাদের কাছ থেকে আমি আগের মতোই আচরণ পাব।’