• বিপিএল ২০১৯
  • " />

     

    লো স্কোরিং ম্যাচে কুমিল্লাকে জেতালেন আফ্রিদিই

    লো স্কোরিং ম্যাচে কুমিল্লাকে জেতালেন আফ্রিদিই    

     

    সিলেট সিক্সারস ২০ ওভারে ১২৭/৮ (পুরান ৪১, কাপালি ১৯; সাইফ উদ্দিন ২/১৩, শহীদ ২/২২, মাহেদী ২/২৪)

    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১৯.৫ ওভারে ১৩০/৬ (আফ্রিদি ৩৯*, তামিম ৩৫; লামিচানে ২/১৬)

    কুমিল্লা ৪ উইকেটে জয়ী


    মিরপুরের উইকেটে ১২৭ রান ফেলনা নয় তো বটেই, লড়াই করার মতোই। সিলেট সিক্সারস সেই পুঁজি নিয়ে শেষ ওভার পর্যন্ত নিয়ে গেল ম্যাচ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শহীদ আফ্রিদি ২৫ বলে ৩৯ রান করে বের করে নিলেন ম্যাচটা, ৪ উইকেটের জয়ে এবারের বিপিএলের প্রথম জয় পেল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।

    শেষ ৩ ওভারে যখন ২৭ রান দরকার, ম্যাচের পেন্ডুলাম একটু হলেও দুলে ছিল সিলেটের দিকে। এই উইকেটে রান তোলা মোটেই সহজ নয়, তার চেয়েও বড় কথা ঠিক তার আগের ওভারে সাব্বিরের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরে গেছেন তামিম। তাসকিনের ১৮তম ওভারটাই আফ্রিদি বেছে নিলেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য। ওই ওভারে চার-ছয় নিলেন ১৫ রান, দুই ওভারে দরকার মাত্র ১২ রান। আল আমিনের পরের ওভারে সাইফকে নিয়ে নিলেন ৮ রান। কাপালি শেষ ওভারটা ভালোই করছিলেন, ২ বল ২ রান দরকার ছিল কুমিল্লার। কিন্তু শেষের আগের বলে চার মেরে আফ্রিদি দিলেন জিতিয়ে।

    তার আগে ডিআরএস বিতর্ক ছিল এই ম্যাচেও। শুরুতেই কুমিল্লা দুই উইকেট হারায়, এভিন লুইস ৫ রান করে আউট হওয়ার পর শুন্য রানে ফেরেন ইমরুল কায়েস। তামিম ও স্মিথ ৩০ রানের জুটি গড়েছিলেন, কিন্তু এরপরেই সেই মুহূর্ত। আল আমিনের বলে স্মিথ শট খেললেন। আম্পায়ার আউট না দিলে সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন স্মিথ। স্নিকো বা আল্ট্রাএজের সাহায্য ছাড়াই এবার স্মিথকে আউট দিলেন তৃতীয় আম্পায়ার, ৫১ রানে তৃতীয় উইকেট হারাল কুমিল্লা।

    এরপর শোয়েব মালিককে ১৩ রানে ফেরালেন নেপালি স্পিনার লামিচানে, বিজয়ও ৫ রান করে তাঁর বলেই বোল্ড। ৮৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর রান রেটও  বেড়ে যাচ্ছিল। এরপর ক্রিজে তামিম আর আফ্রিদি, আর তার পরেই তো আফ্রিদির ঝড়। আর তাতেই হেরে গেল সিলেট।

    তার আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় সিলেট। মাহেদী হাসানের বলটা সুইপ করতে গিয়ে গড়বড় করে ফেললেন লিটন দাস, মিডউইকেটে পেছনের দিকে দৌড়ে দারুণ একটা ক্যাচ নিলেন অধিনায়ক স্মিথ। ১ রানেই প্রথম উইকেট হারাল সিলেট। ডেভিড ওয়ার্নার শুরুতে একটু আড়ষ্ট ছিলেন, তনে মাহেদীর এক ওভারে দুইটি চার মেরে ভালো কিছুরই আভাস দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর শেষটা হলো একদমই হাস্যকরভাবে। তরুণ তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে দুজনেই চলে এলেন একই প্রান্তে। তৌহিদ কেন ওয়ার্নারের জন্য নিজে আত্মত্যাগ করলেন না, সেটি তো প্রশ্নই। তার চেয়েও বড় প্রশ্ন, ওয়ার্নার কি আউট হয়েছিলেন কি না। রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে শোয়েব মালিক যখন ব্যাটিং প্রান্তে বেলস ভেঙেছে, রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে ওয়ার্নারই আগে ক্রিজে ঢুকেছিলেন। তৌহিদের ব্যাট তখনও বাতাসে ছিল বলেই মনে হয়ছে, তবে তৃতীয় আম্পায়ার শেষ পর্যন্ত ওয়ার্নারকেই আউট দিলেন।

    সিলেটের ইনিংস এরপর চলতে শুরু করল উলটো পথে। আফিফ ভালোই খেলছিলেন, কিন্তু তাঁর ১৬ বলে ১৯ রানের ইনিংসটা শেষ হলো দুর্ভাগ্যেই, সাইফ উদ্দিনের বল ব্যাটের কানায় লেগে গড়িয়ে মাটিতে পড়ে ফেলে দিয়েছে বেলস। ২৪ বলে ৮ রান করে তৌহিদের সংগ্রামী ইনিংসটা শেষ হয়েছে আফ্রিদির বলে এলবিডব্লু হয়ে। ৪৬ রানে ৪ উইকেটে হারিয়ে তখন কাঁপছে সিলেট। সাব্বির রহমান নেমেই একটা ছয় মারলেন, কিন্তু ওই পর্যন্তই। মাহেদীর বলে স্টাম্পড হয়ে গেলেন ৭ রানে, ৫৬ রানে ৬ উইকেট নেই সিলেটের।

    এরপরেই নিকোলাস পুরান ও অলক কাপালির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। দুজন মিলে ষষ্ঠ উইকেটে যোগ করলেন ৫৫ রান। শুরুতে একটু সতর্ক ছিলেন, আফ্রিদির বলে এক ওভারে চার-ছয় মেরে শুরু। এর মধ্যে অলিকও আফ্রিদিকে ছয় মারলেন। পুরান মোহাম্মদ শহীদের এক ওভারে চার-ছয় মেরে পৌঁছে গেলেন চল্লিশে, শহীদের বলেই অবশ্য আউট হয়ে গেলেন। সিলেটের রা ১৪০ পর্যন্ত যাওয়ার যে সম্ভাবনা ছিল, সেটি মুখ থুবড়ে পড়ল। শেষ পর্যন্ত ১২৭ রানেই থেমে গেল সিলেটের ইনিংস।