ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও ফিরে এসে রংপুরের জয়
রংপুর ১৬৯/৩, ২০ ওভার (রুশো ৭৬, বোপারা ৪০, জাহির ১/৩০)
খুলনা ১৬১/৫, ২০ ওভার (স্টার্লিং ৬১, জুনাইদ ৩৩, রেজা ১/২৮)
রংপুর ৮ রানে জয়ী
১৭০ রানের লক্ষ্য, পাওয়ারপ্লেতে খুলনা তুলেছিল ৬১। প্রথম ১০ ওভারে উঠেছিল ৮৫। রংপুর প্রথম উইকেট পেয়েছে ১২তম ওভারে। তবে পল স্টার্লিং ও জুনাইদ সিদ্দিকের দৃঢ় ভিতটা কাজে লাগাতে পারেনি খুলনা, ফরহাদ রেজারা তাদেরকে আটকে দিয়েছেন ১৬১ রানে। প্রথম ম্যাচে হারের পর এবার জয়ের স্বাদ পেল রংপুর, আর নিজেদের প্রথম ম্যাচেই খুলনা পেলো পরাজয়ের স্বাদ।
রানতাড়ায় খুলনার শুরুটা ঝড়োই ছিল। স্টার্লিংকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন জুনাইদ, স্ট্রাইক বদল করে। স্টার্লিং এলোপাথারি খেলেননি, ক্রিজ থেকে পাওয়া পেস কাজ লাগিয়েই খেলছিলেন। একটি ছয় মেরেছেন, তবে চার মেরেছেন ৮টি। ৭ম ওভারে জুনাইদ অবশ্য আউট হতে পারতেন, নাজমুলের ডাউন দ্য লেগের বলে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ মিস করেছেন মিঠুন।
জুনাইদ আউট হয়েছেন ১২তম ওভারে গিয়ে, বেনি হাওয়েলকে আড়াআড়ি খেলে ডিপমিডউইকেটে ধরা পড়েছেন তিনি। রাজশাহীর বাঁধ যেন ভেঙে গেছে তাতেই। পরের ওভারেই বোল্ড হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৪তম ওভারে পল স্টার্লিংকে বোল্ড করেছেন মাশরাফি, তাকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে নাগাল পাননি এই আইরিশ।
১৭তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ-আরিফুলের ভুল বুঝাবুঝি কাজে লাগাতে পারেনি রংপুর, তবে এই দুজন ফিরতেও সময় নেননি। চার বাউন্ডারিতে ১৭ ব্লে ২৪ রানের ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ ফিনিশিংয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেলন, ফরহাদ রেজার বলে এক্সট্রা কাভারে মাশরাফির দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরেছেন তিনি। পরের ওভারে ফিরেছেন আরিফুল, শফিউলের বলে কট-বিহাইন্ড হয়ে। সে ওভারে টানা তিন ওয়াইডে একটু গুলিয়ে ফেলেছিলেন শফিউল, তবে শেষ ওভারে রেজার জন্য ২০ রান রেখেছিলেন ঠিকই। রেজা খেয়েছেন শুধু একটি বাউন্ডারি, মাশরাফি এক্সট্রা কাভারে একটি ক্যাচও মিস করেছেন। তবে মিরাকল ঘটেনি আর।
এর আগে রংপুরের ব্যাটিং ইনিংস ছিল খুলনার উলটো। সেখানে শুরুতে রংপুরকে দারুণ চাপে রেখেছিলেন আলি-জাহির খানরা। ধারাবাহিক লাইন-লেংথের পুরস্কার পেয়েছেন আলি খান, অফস্টাম্প চ্যানেলে ব্যাটসম্যানকে প্রশ্ন করে যাচ্ছিলেন। একটু ভেতরে পেয়ে পুল করতে গিয়ে ডিপ-মিডউইকেটে ধরা পড়েছেন মেহেদি মারুফ, আলি তার প্রথম নয় বলে রান দেননি একটিও।
৬ষ্ঠ ওভারে রংপুর পেয়েছে প্রথম ছয়, শরিফুলের বলে মেরেছেন অ্যালেক্স হেলস। পাওয়ারপ্লেতে অবশ্য ৪২ রানের বেশি তুলতে পারেনি তারা, পরের ওভারে হেলসের উইকেট চাপ বাড়িয়েছিল আরও। জাহির খানের স্লাইডারে ইনসাইড দ্য লাইন খেলতে গিয়ে মিস করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন হেলস, রিভিউও হারিয়েছে টাইটানস। মিঠুন শুরুটা ভাল করেছিলেন, তবে ব্রাথওয়েটের ব্যাক অফ আ লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা মেরে ইনিংস শেষ হয়েছে তার। ইনিংসের প্রথম ধাপে ৩ উইকেটে ৬৬ রান তুলতে পেরেছিল রংপুর।
এরপরই রুশো-বোপারার শতরানের জুটি। আগের ম্যাচে ৭ রান করে ফিরেছিলেন রুশো, এবার থাকলেন শেষ পর্যন্ত। ফিরতি স্পেলে এসে মার খেলেন আলি, তাকে পরপর দুই বলে ছয় মারলেন রুশো, পরেরটিতে পূর্ণ হলো ফিফটি। আর বোপার আগেরদিনের মতো এবারও অবদান রাখলেন রংপুরকে উদ্ধারে। খুলনা বোলারদের চিত্রটাও তাই ইনিংসের দুই ধাপে হলো দুইরকম।
প্রথম ২ ওভারে আলি দিয়েছিলেন ২ রান, পরের দুই ওভারে দিলেন ৩৩। ব্রাথওয়েট ৩ ওভারে দিয়েছিলেন ১৮ রান, শেষ ওভারেই গুণলেন ২১! শেষ ১০ ওভারে রংপুর তুললো ১০৩ রান। ১৪তম ওভারে অবশ্য এক বলেই দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করার সুযোগ পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে বোপারার ফিরতি ক্যাচ মিস করার পর নন-স্ট্রাইক প্রান্তে সরাসরি স্টাম্প ভাঙার সুযোগও মিস করেছেন, যেটাই আউট হতে পারতেন রুশো। শেষ পর্যন্ত বোপার অপরাজিত থাকলেন ২৯ বলে ৪০ রানে, রুশো ছিলেন ৫২ বলে ৭৬ রানে।