• বিপিএল ২০১৯
  • " />

     

    জাজাই ঝড় ও সাকিবের তোপে ঢাকার টানা দুই

    জাজাই ঝড় ও সাকিবের তোপে ঢাকার টানা দুই    

    ঢাকা ডায়নামাইটস ১৯২/৬, ২০ ওভার (জাজাই ৫৭, রনি ২৮, ভিসে ২/২৪)
    খুলনা টাইটানস ৮৭ অল-আউট, ১৩ ওভার (জুনাইদ ৩১, সাকিব ৩/১৮) 
    ঢাকা ১০৫ রানে জয়ী 


    বিপিএলের এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ২০০-এর সবচেয়ে কাছে গিয়ে পরে সবচেয়ে বড় জয় পেল ঢাকা ডায়নামাইটস। টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে জাজাইয়ের ৩৬ বলে ৫৭ রানে ভর করে ১৯২ রান তোলা ঢাকা পরে সাকিব আল হাসানের ১৮ রানে ৩ উইকেটে খুলনাকে গুটিয়ে দিয়েছে ৮৭ রানেই, ১৩ ওভারের মাঝে। বড় রানতাড়ায় বড় শটের চেষ্টা বেশ প্রকটভাবে ব্যর্থ হয়েছে খুলনার, রান-আউট তাদের দুর্দশা বাড়িয়ে দিয়েছে আরও। টসে হারাটাকে ভাল বলেছিলেন সাকিব, আগে না পরে ব্যাটিং করবেন সেটা নিশ্চিত ছিলেন না বলে। তবে টসে জিতে খুলনায় ধাঁধায় পড়ে গেল! এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচ জিতল ঢাকা, পুরো উলটো পরিণতি হলো খুলনার। 

    খুলনার ব্যাটিং আঁধারে একমাত্র আলোর রশ্মি ছিল জুনাইদ সিদ্দিকের ব্যাটিং। আড়াআড়ি ব্যাটে ঝড় শুরু করেছিলেন জুনাইদ, চতুর্থ ওভারে নারাইনকে স্লগ সুইপে মারলেন দুই ছয়। সে ওভারে ফিরলেন জহুরুল, নারাইনকে তুলে মারতে গিয়ে। পরের ওভারে পার্টি শেষ হয়ে গেল জুনাইদেরও, সাকিবকে স্লগ করতে গিয়ে মিসটাইমিংয়ে ধরা পড়লেন স্কয়ার লেগে, ১৬ বলে ৩৬ রানে। সাকিব ব্রেকথ্রু দিয়েছিলেন দ্বিতীয় ওভারেই, আলগা শটে ফিরেছিলেন পল স্টার্লিং। 

    খুলনা খেই হারানোর পথে ততক্ষণে এগিয়ে গেছে অনেকখানি। মিসটাইমিং কাল হয়েছে মাহমুদউল্লাহ ও নাজমুল হোসেন শান্তরও। প্রথমজন শুভাগতর বলে, পরেরজন মোহরের বলে বড় শটের চেষ্টায় বনেছেন ক্যাচ। ৬০ রানেই ৫ উইকেট হারিয়েছে খুলনা। 

    ভিসে এরপর সাকিবের বলে হয়েছেন বোল্ড, যেটা নিশ্চিত হতে লেগেছে টিভি আম্পায়ারের সহায়তা। নারাইনের পরের ওভারেই গুটিয়ে গেছে এরপর খুলনা। প্রথমে তাইজুল আরিফুলের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রান-আউট, শরিফুল দিয়েছেন ক্যাচ, আর রান-আউট হয়েছেন জাহির খান। ফিল্ডিংয়ে সময় চোট পেয়ে উঠে যাওয়া আলি খান ব্যাটিংয়ে নামেননি বলে তখনোই থামতে হয়েছে খুলনাকে।  

    এর আগে আরেকবার জাজাই-নারাইন ঝড়ো শুরু এনে দিয়েছিলেন ঢাকাকে। ২য় ওভারে শরিফুলে বলে এসেছে ১৬ রান, ৩য় ওভারে তিন ছয়, দুই চারে উঠেছে ২৭। অবশ্য তৃতীয় ওভারে শরিফুল পেতে পারতেন জাজাইয়ের উইকেট, ভিসে ক্যাচ ধরতে না পারায় সেটা হয়নি। জীবন পেয়ে জাজাই যোগ করেছেন আরও ৪৬ রান। তার বিপক্ষে একটা রিভিউও নিয়েছিল খুলনা, আবারও আল্ট্রা-এজহীনতার খাঁড়ায় পড়ে বিফলে গেছে সেটা। জাজাই পেয়েছেন ফিফটি, আগেরদিন করেছিলেন ২২ বলে, এদিন করলেন ২৫ বলে। 

    পাওয়ারপ্লেতে শুধু সুনীল নারাইনের উইকেট হারিয়েছে ঢাকা, যেটা পেয়েছেন ভিসে, ৬ ওভারে উঠেছে ৭২ রান। নারাইনের পর রনির সঙ্গে জুটিটাও জমছিল জাজাইয়ের, উঠেছিল ৪৩ রান। এবার ব্রেকথ্রু দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ, তার তৃতীয় ওভারে স্লগ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন ১৮ বলে ২৮ রান করা রনি। পরের ওভারে জোড়া উইকেটে খুলনাকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন পল স্টার্লিং। 

    প্রথমে ক্যাচ দিলেন জাজাই, ৩৬ বলে ৫৭ রান করে। সবুর করতে পারলেন না সাকিবও, প্রথম বলেই ড্রাইভ করতে গিয়ে ধরা পড়লেন পয়েন্টে। ৩ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারালো ঢাকা। 

    সে চাপ অবশ্য ভালভাবেই সামাল দিলেন কাইরন পোলার্ড ও আন্দ্রে রাসেল। দুজন আবারও বড় স্কোরের পথে ফিরিয়ে আনলেন ঢাকাকে। দুজন মিলে মারলেন ৫টি ছয়, তাদের জুটির সময় ২০০ ছিল ঢাকার নাগালের মধ্যেই। সেটা হতে দিলেন না খুলনার তিন পেসার। 

    প্রথমে আলির লো ফুলটসে তুলে মারতে গিয়ে লং-অফে ক্যাচ দিলেন পোলার্ড, পরের ওভারে ভিসের বলে আকাশে তুললেন রাসেল। পোলার্ডের উইকেটের পর শেষ ৩ ওভারে ২৪ রানে বেশি তুলতে পারেননি সোহান-শুভাগতরা। 

    শেষ পর্যন্ত সেটা প্রভাব ফেলেনি ম্যাচে। খুলনা হেরে গেছে আরও অনেক আগেই।