• বিপিএল ২০১৯
  • " />

     

    সিলেটকে কাঁপিয়েও পারল না চিটাগং

    সিলেটকে কাঁপিয়েও পারল না চিটাগং    

    স্কোর

    সিলেট সিক্সারস ২০ ওভারে ১৬৮/৫ (ওয়ার্নার ৫৯, পুরান ৫২*, আফিফ ৪৫; ফ্রাইলিঙ্ক ৩/২৬)

    চিটাগং ভাইকিংস ২০ ওভারে ১৬৩/৭ (ফ্রাইলিঙ্ক ৪৪*, ডেলপোর্ট ৩৮, রাজা ৩৭; তাসকিন ৪/২৮)

    ফলঃ সিলেট ৫ রানে জয়ী


    শেষ ওভারে দরকার ২৪ রান, আল আমিন হোসেন আগের ৩ ওভারে দিয়েছিলেন ৩৯ রান। রবি ফ্রিলইঙ্ক তিন বলের মধ্যে মারলেন দুই ছয়, চিটাগং ভাইকিংসের সাম্পান তখন দেখছিল জয়ের বন্দর। শেষ বলে ছয় মারলেও টাই হতো, কিন্তু সেটাই করতে পারলেন না ফ্রাইলিঙ্ক। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ৫ রানের জয় পেল সিলেট সিক্সারস।

    দুপুরের ম্যাচে মিরপুরে যেন রান করাই দায়। তিন ম্যাচে এখন পর্যন্ত ঢাকাই শুধু কাল ২০০র কাছাকাছি রান করছিল, আর কেউ ছুঁতে পারেনি ১৫০। সিলেট সিক্সারস যখন আজ ১৬৮ রান করল, কিন্তু কে জানত এই রান নিয়েও ঘাম ঝরে যাবে তাদের!

    সেই রান তাড়া করে চিটাগং শুরুতেই খেয়েছে হোঁচট। তাসকিন আহমেদের প্রথম ওভারেই একটা ছয় মারলেন আফগান অপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ, কিন্তু এক বল বলেই মারতে গিয়ে হলেন আউট। মিড অফ থেকে পেছনের দৌড়ে দুর্দান্ত একটা ক্যাচ নিলেন ওয়ার্নার, শাহজাদ ফিরলেন ওই ৬ রানেই।

    ক্যাম্রন ডেলপোর্টকে অবশ্য আটকানো যাচ্ছিল না। তাসকিনের এক ওভারে দুই চার আর দুর্দান্ত এক ছয়ে নিলেন ১৫ রান, নাসিরের ওভারে মারলেন চার-ছয়। কিন্তু আউট হয়ে গেলেন নিজের দোষেই। মোহাম্মদ আশরাফুলের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে দৌড় দিলেন, কিন্তু ব্যাটটা মাটিতে ছোঁয়ালেন না। লামিচানের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে গেলেন। ২২ বলে ৩৮ রানে আউট ডেলপোর্ট, চিটাগংয়ের খেই হারানো শুরু তখন থেকেই।

    আশরাফুল শুরুটা ভালোই করেছিলেন, দারুণ কিছু চারে পৌঁছে গেলেন বিশের ঘরে। কিন্তু তাসকিনের বলে ক্যাচ দিয়ে থেমে গেল তাঁর ২৩ বলে ২২ রানের ইনিংস। মুশফিককে ওই সময় ধরতে হতো হাল, কিন্তু ব্যররথ তিনিও। কাপালির একটা বলে স্লগ করতে গিয়ে উইকেটটা উপহারই দিয়ে এলেন ৫ রানে, ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কাঁপছে চিটাগং।

    সিকান্দার রাজা চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু অন্য পাশ থেকে সাহায্য পেলেন না। শেষ ৩ ওভারে যখন ৪১ রান দরকার, একটু হলেও বেঁচে ছিল চিটাগংয়ের জয়ের আশা। কিন্তু তাসকিন শেষ ওভারের শেষ দুই বলে রাজা আর নাঈমকে তুলে নিলে সিলেট পৌঁছে যায় জয়ের প্রায় দুয়ারে। কিন্তু সেখান থেকেই প্রায় একাই চিটাগংকে টেনে তুলেছিলেন ফ্রাইলিঙ্ক, কিন্তু একটুর জন্য বিফলে গেল ২৪ বলে ৪৪ রানের ইনিংসটা।

    তার আগে বল হাতেও শুরুতে উজ্জ্বল রবি ফ্রাইলিঙ্ক। আগের ম্যাচটা যেখান থেকে শেষ করেছিলেন, আজ শুরু করলেন সেখান থেকেই। সকালের প্রথম বলে লিটন দাস পরাস্ত হলে, পরের বলটা লেগে খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড়, ক্যাচ উঠে গেল পয়েন্টে। কোনো রান না করেই আউট লিটন। নাসির হোসেন তৌহিদ হৃদয়ের জায়গায় সুযোগ পেয়ে নামলেন তিনে, কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না। ৩ রান করে নাঈম হাসানের বলে ক্যাচ তুলে দিলেন লং অনে। পরের ওভারে আবার ফ্রাইলিঙ্কের আঘাত, এবার সাব্বির রহমান ইনসাইড এজে বোল্ড হয়ে গেলেন শুন্য রানে। ৬ রানে ৩ উইকেট নেই সিলেটের।

    সিলেটের জন্য তখন ১০০ করাটাই মনে হচ্ছিল অনেক বড় ব্যাপার। ডেভিড ওয়ার্নার উইকেটের চরিত্র বুঝে শুরু থেকে ছিলেরন সতর্ক, ঝুঁকি নিচ্ছিলেন না একদমই। তবে ‘মোমেন্টাম’ দেওয়ার কাজটা শুরু করলেন তরুণ আফিফ হোসেন। শুরু থেকেই ছিলেন দারুণ স্বচ্ছন্দ, নাঈমের বলে স্লগ সুইপে ছয় মেরে শুরু। সিকান্দার রাজার পরের ওভারে মারলেন দুই চার। রাহী আর খালেদকে দুই ছয় মারলেন। মনে হচ্ছল এবারের বিপিএলে বাংলাদেশীদের মধ্যে প্রথম ফিফটি পেয়েই যাবেন। কিন্তু খালেদের বলটা জায়গা বের করে খেলতে গিয়ে হলো বিপদ, কাট করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন উইকেটের পেছনে। ২৮ বলে ৪৫ রানে ফিরলেন আফিফ, ওয়ার্নারের সঙ্গে ৭১ রানের জুটিতে সিলেট অধিনায়ক ছিলেন অনেকটাই দর্শক।

    তবে আফিফের ঘুরিয়ে দেওয়া চাকার ওপর এরপর তরতর করে চলেছেন ওয়ার্নার আর নিকোলাস পুরান। ওয়ার্নার থিতু হয়ে শট খেলা শুরু করেছেন, একমাত্র ছক্কা এসেছে রাজার বলে। খালেদের বলে দুই চারে শুরু করলেন পুরান, পরে মোসাদ্দেকের এক ওভারে মেরেছেন দুই ছয়। ওয়ার্নার ৪৭ বলে ৫৯ রান করলেন, তবে পুরানের ঝড় থামল না। ৩২ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত রইলেন, সিলেট পেল ১৬৮ রানের জয়ের পুঁজি।

    কে জানত, সেটা নিয়েই ঘাম ঝরে যাবে তাদের?