উদানা-মিরাজে টানা তৃতীয় হার খুলনার
ম্যাচ ৮, মিরপুর
খুলনা টাইটানস ১১৭/৯, ২০ ওভার (জুনাইদ ২৩, মালান ২২, উদানা ৩/১৫, মোস্তাফিজ ২/১৮)
রাজশাহী কিংস ১১৮/৩, ১৮.৫ ওভার (মিরাজ ৫১, মুমিনুল ৪৪, জাহির ১/১৮)
কিংস ৭ উইকেটে জয়ী
ইসুরু উদানা ও মোস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথমে হাসফাঁস করেছে খুলনা, ২০ ওভারে বলসংখ্যার চেয়ে কম ১১৭ রানে আটকে গেছে তারা। এরপর মুমিনুল হকের ৪৪ রানের সঙ্গে তিনে উঠে আসা মেহেদি হাসান মিরাজের ফিফটিতে খুলনাকে সহজেই হারিয়ে বিপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম জয় পেয়েছে রাজশাহী। খুলনা এ নিয়ে হারল টানা তিন ম্যাচই, একাদশের কম্বিনেশন বদলেও ঠিক কাজ হচ্ছে না তাদের।
আগের দুই ম্যাচে খুলনা খেই হারিয়েছিল ইনিংসের কোনও এক অর্ধে, এবার হারিয়েছে প্রথম ইনিংসের প্রথম দিকেই। পঞ্চম ওভারে রাজশাহীকে প্রথম ব্রেকথ্রু দিয়েছেন মোস্তাফিজ, তার ফুললেংথের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে এক্সট্রা কাভারে ধরা পড়েছেন পল স্টার্লিং। তার আগ পর্যন্ত শুরুটা ঠিকঠাকই ছিল খুলনার, এই উইকেটের পর থেকেই মূলত খেই হারিয়েছে তারা। পরের ওভারে ফিরেছেন জুনাইদ সিদ্দিক, উদানাকে পুল করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েছেন তিনি। উদানা সে ওভার দিয়েছেন মেইডেন, ৪.৪ ওভারে ৪০ রান থেকে খুলনাকে পাওয়ারপ্লে শেষ করতে হয়েছে ওই রানেই।
পরের ৪ ওভারে উঠেছে ২৩ রান, খুলনার ব্যাটসম্যানদের হাত খুলতে দেননি তিন স্পিনার- কাইস আহমেদ, আরাফাত সানি ও মেহেদি হাসান মিরাজ। এই সময়ে ফিরেছেন জহুরুল ইসলামও, তুলে মারতে গিয়ে শেষ হয়েছে তার সংগ্রাম। ১১তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে এসে আরেকবার সফল হয়েছেন মোস্তাফিজ, এবার পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহর মূল্যবান উইকেট। আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে তিনি হয়েছেন এলবিডব্লিউ, রিভিউ নিয়েও সফল হননি। খুলনা অধিনায়ক করেছেন ১৮ বলে ১১ রান।
খুলনার রানের গিয়ার একটু বদলানোর চেষ্টা করেছিলেন ডেভিড মালান, তার বিপক্ষে ক্লোজ একটা রিভিউ ব্যর্থ হয়েছিল রাজশাহীর। মিরাজকে ছয়ের পর কাইসকে চার মেরেছিলেন এই ইংলিশ। মালানের উইকেট রাজশাহী পেয়েছে সৌম্য সরকারের হাত ধরে। ১৭তম ওভারে মাত্র এক ওভারের জন্যই তাকে এনেছিলেন মিরাজ, তাকে তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে ধরা পড়েছেন ১৮ বলে ২২ রান করা মালান। এর আগেই আরিফুল ক্যাচ দিয়েছেন কাইসের বলে।
শেষ চার ওভারে এরপর মাত্র ১৬ রান তুলতে পেরেছে খুলনা। এর মাঝে ২ ওভারে উদানা দিয়েছেন ৯ রান, শেষের ওভারে ২ রানসহ, নিয়েছেন ২ উইকেট। ১৪ বলে ১৪ রান করা ডেভিড ভিসের পর ২ বলে ০ করে বোল্ড হয়েছেন শুভাশীষ রায়। ১৯তম ওভারে ১ রান দিয়েছেন মাত্র মোস্তাফিজ।
ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ওভারে তাইজুলকে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়া হাফিজ, পেছন দিকে ছুটে ভাল ক্যাচ নিয়েছিলেন আরিফুল। তবে শীঘ্রই সে উইকেটের স্মৃতি খুলনাকে ভুলিয়ে দিয়েছে মুমিনুল-মিরাজের জুটি।
নিজেকে তিনে উঠিয়ে এনেছিলেন মিরাজ। শুরুটা করেছিলেন দুই বাউন্ডারিতে, এরপর ছিলেন একটু নড়বড়ে। তবে এরপর নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন, স্টার্লিংয়ের বলে ডাবলস নিয়ে পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল অপরাজিত ৪১ রান। জাহির খানের বলে রাউন্ড দ্য লেগে বোল্ড হওয়ার আগে মিরাজ করেছেন ৪৫ বলে ৫১, ছয় চারের সঙ্গে আছে শুভাশীষ রায়কে ফাইন লেগ দিয়ে করা প্যাডল শটে একটি ছয়।
মুমিনুল ছিলেন শান্ত, ৪৩ বলের ৪৪ রানের ইনিংসে মেরেছেন ৪টি চার। স্টার্লিংকে তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে ধরা পড়েছেন, তবে খুলনার দেরি হয়ে গেছে ততক্ষণে।
আট বোলার ব্যবহার করেছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে ১১৭ রানের সম্বল নিয়ে ম্যাচ জিততে যে মিরাকল দরকার, অনুমিতভাবেই সেটা দিতে পারেননি তাকে কেউ।