আফ্রিদিদের স্পিন-ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে গেল রাজশাহী
রাজশাহী কিংস ১২৩ অল-আউট, ১৮.৪ ওভার (উদানা ৩২, মিরাজ ৩০, আফ্রিদি ৩/১০, ডওসন ২/১৭)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ১৩০/৫, ১৮.৪ ওভার (এনামুল ৪০, লুইস ২৮)
কুমিল্লা ৫ উইকেটে জয়ী
স্টিভ স্মিথ নেই, কুমিল্লা নামল ইমরুল কায়েসকে অধিনায়ক করে। সঙ্গে ছিল আগের ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে ৬৩ রানে অল-আউট হয়ে যাওয়ার দুঃস্মৃতি। অন্যদিকে আগের ম্যাচে জয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল রাজশাহী। কুমিল্লা অবশ্য থোড়াই কেয়ার করলো তাতে, রাজশাহীর বিপক্ষে বড় ব্যবধানে ও দাপুটে জয় পেল তারা।
রানতাড়ায় কুমিল্লার একসময় ৭ উইকেটে ৫ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান। কাইস আহমেদের বলে শোয়েব মালিকের পরের ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ফিরলেন ইমরুল কায়েস। ম্যাচে উত্তেজনা ফিরল, তবে ক্ষণিকের জন্যই। ম্যাচটা তো মূলত প্রথম ইনিংসেই হেরে বসেছে রাজশাহী কিংস, ১২৪ রানে গুটিয়ে গিয়ে। রাজশাহীর মূল ক্ষতিটা করেছেন কুমিল্লার দুই স্পিনার- শহীদ আফ্রিদি ও লিয়াম ডওসন। দুজন মিলে ৮ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২৭ রান, নিয়েছেন ৫ উইকেট। আফ্রিদি একাই নিয়েছেন ৩টি, ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১০ রান। আরেক স্পিনার মেহেদি উইকেট না নিলেও ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২২।
ওপেনিংয়ে এবার মুমিনুলের সঙ্গে এসেছিলেন মিরাজ, প্রথম ১৬ রানই করেছিলেন চার বাউন্ডারি থেকে। এর মাঝে জীবন পেয়ে আর ১ রান যোগ করে ৩ রানে সাইফউদ্দিনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন মুমিনুল হক, তৃতীয় ওভারে। পরের বলে প্রায় একই ধরনের বলে বোল্ড সৌম্য। দিনে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
রাজশাহী অবশ্য পথ হারায়নি তখনও। মিরাজ ছিলেন, ধীরলয়ে শুরু করা হাফিজও ছিলেন। প্রথম পাঁচ ওভারে পাঁচজন ভিন্ন বোলার এনেছিলেন ইমরুল, পঞ্চম বোলার লিয়াম ডওসন দিলেন ব্রেকথ্রু। তার ক্ল্যাসিক অফস্পিনে বোল্ড হলেন হাফিজ। রাজশাহীর ধস নামলো এরপরই।
হাফিজের উইকেটের এক বল পর নিজের প্রথম বলে সফল আফ্রিদি, ফরোয়ার্ড ডিফেন্সিভ শট খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ মিরাজ, ১৭ বলে ৩০ রান করে। এর পরের বলেই এলবিডব্লিউ লরি এভান্স, ইনিংসে কুমিল্লার দ্বিতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করলেন আফ্রিদি।
রাজশাহীর দুর্দশা বাড়লো রাব্বির রান-আউটে, জাকিরের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে তিনি আউট হয়েছেন ৩ রান করেই। পরের ওভারে তৃতীয় উইকেট আফ্রিদির, এবার বোল্ড কাইস আহমেদ। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি লেগস্পিনার ৪ ওভারে ১০ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
জাকির-উদানা একটু পথে ফেরাতে চেয়েছিলেন রাজশাহীকে, ২৬ বলে ২৭ করে জাকির আগে ফিরেছেন ডওসনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। আরাফাত সানি ক্যাচ দিয়েছেন আবু হায়দার রনির বলে। সানির পর শেষ ব্যাটসম্যান মোস্তাফিজকে সঙ্গে ১২০ রানের সীমাটাই শুধু ছাড়াতে পেরেছেন ইসুরু উদানা, ইনিংসের একমাত্র ছয়ও মেরেছেন তিনি। রনির বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন ৩০ বলে ৩২ রান।
১২৫ রানের লক্ষ্য, ওপেনিংয়ে এনামুল হক ও এভিন লুইস মিলেই যোগ করলেন ৬৫ রান। প্রথমে কাইসের বলে টপ-এজড লুইস, এনামুল রান-আউট হলেন তামিমের বোলারস ব্যাকড্রাইভ স্টাম্পে লাগার আগে উদানা পা লাগানোয়। তার আগে এনামুল করেছেন ৩২ বলে ৪০ রান। তামিম আউট হয়েছেন মিরাজের বলে, ২৫ বলে ২১ রান করে।
এরপরই মালিক-ইমরুলের ওই দুই উইকেটে ক্ষণিকের উত্তেজনা। আফ্রিদি শেষটা করলেনে ছয় মেরে, এ ম্যাচে কুমিল্লার আধিপত্য বুঝাতেই যেন!