'মাথা খুলছে' অধিনায়ক মিরাজের
হাজারো বিতর্কের ভীড়ে জেরবার এবারের বিপিএল। এর মধ্যেও বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কী? রাজশাহী কিংসের হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের অধিনায়কত্বটা থাকবে ওপরের দিকে। প্রথম ম্যাচে খেই হারালেও পরের তিন ম্যাচে জানান দিয়েছেন, একটা সময় বাংলাদেশের হয়ে টস করার দায়িত্বটা নেওয়ার জন্য তিনি ভালোমতোই প্রস্তুত হচ্ছেন। আজ রংপুর রাইডার্সকে ৫ রানে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে বললেন, অধিনায়কত্বে ‘মাথা’ খুলছে তাঁর।
আজকে মিরাজের কাজটা আরও বেশি কঠিন ছিল অনেক কারণেই। স্কোরকার্ডে রান বেশি ছিল না, ১৩৫ রান আগলে ম্যাচ জেতা কঠিন বললেও কম বলা হয়। তার ওপর রংপুরে ছিলেন গেইল আর ফর্মে থাকা রুশো। কিন্তু মিরাজ আরও দেখালেন নিজের পরিণতিবোধ। শুরুতে কামরুল ইসলাম রাব্বিকে এনে ব্রেক থ্রু এনে দিলেন গেইলের, কিন্তু পরে আর রাব্বিকে আনলেন না। মোহাম্মদ হাফিজকে আনার পর পেয়েছেন ব্রেক থ্রু। শেষ চার ওভার মোস্তাফিজ আর উদানাকে দিয়েই করাবেন বলে মনে হচ্ছিল, কিন্তু এক ওভার আগে উদানাকে বল করিয়ে জানান দিয়েছেন, ‘মুখস্ত’ অধিনায়কত্বের বাইরেও চিন্তা করতে পারেন।
প্রতিপক্ষ হিসেবে মাশরাফি বিন মুর্তজা ছিলেন, কিছুটা কি স্নায়ুচাপ ছিল? মিরাজ সেটা উড়িয়েই দিলেন, ‘কখনো ভয় লাগিনি। দিনশেষে এটা একটা খেলা। যারা ভালো খেলবে তারা জিতবে। অবশ্যই রংপুর ভালো দল। অনেক অভিজ্ঞ মাশরাফি ভাই। অনেকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বিপিএল ও অন্যান্য টুর্নামেন্ট। যারা আমরা জুনিয়র আছি বিশ্বাস ছিল যে কামব্যাক করতে পারব। জিততে পারবে। এই আত্মবিশ্বাস দিয়েই আমরা জিতেছি। রান কিন্তু বেশি হয়নি আমাদের। ১৩৬ লক্ষ্য। আমাদের বিশ্বাস ছিল যে আমরা জিততে পারব, ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’
মাশরাফি নিজেও দারুণ একটা সার্টিফিকেট দিয়ে গেছেন মিরাজকে তার আগে, ‘ও এখান থেকে যতটুকু শিখবে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ওর জন্য কাজে দিবে। শুধু ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচে অধিনায়কত্বের জন্য না, এখান থেকে যেন লিডারশিপটা যেন নিতে পারে। এটা যত তাড়াতাড়ি নিতে পারে তত ভালো। ওর জন্য অবশ্যই এটা অনেক ভালো যে এসব ম্যাচে অধিনায়কত্ব করছে।’
মিরাজও ‘অধিনায়কের’ কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েও বেশ আপ্লুত, ‘মাশরাফি ভাই আমাদের বড় ভাই । রংপুর চ্যাম্পিয়ন টিম। ওদের হারাতে পেরে দলের সবার ভালো লাগে। অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। আর ভালো দলকে হারাতে পারলে ভালোই লাগে। আমাদের দলে সবাই তরুণ। তরুণেরা ভালো করতে পারলে জেতা সহজ হয়ে যাবে। খেলা শেষে দেখেন মাশরাফি ভাইরা হেরে গেছে সবাই সমর্থন দিয়েছে যে আমরা ভালো করেছি। খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলে খেলা শেষে আমরা আমরাই। সবার সঙ্গে দেখা-কথা হয়।’
তবে মিরাজের জন্য কঠিন একটা কাজ ছিল শেষ ওভারে। মোস্তাফিজ যখন শেষ ওভারটা করতে আসবেন, ওই সমইয় মিরাজ-সৌম্য-হাফিজ তাঁর সঙ্গে কথা বললেন বেশ কিছুক্ষণ। তবে মিরাজ বললেন, মোস্তাফিজকে তাঁর মতোই খেলতে বলেছিলেন, ‘মোস্তাফিজকে আমি একটা কথাই বলার চেষ্টা করেছি, আমার কথা, সৌম্য সরকার ভাইয়ের কথা কিংবা হাফিজ ভাইয়ের কথাও শোনার দরকার নেই! ও যদি নিজের পরিকল্পনায় ভালো বোলিং করে তবে ভালো করে। তিনজনের কথা যখন মাথায় নেবে নিজেরটা করতে পারবে না। বলেছি তুই ফিল্ড সেটআপ করে, তোর মতো বোলিং আমরা ওকে ওর মতো বোলিং করতে সহায়তা করেছি এ কারণে ম্যাচটা জিততে পেরেছি। ’