'অলরাউন্ড' সাকিবে ম্লান ওয়ার্নাররা
সিলেট সিক্সারস ১৫৮/৮, ২০ ওভার
ঢাকা ডায়নামাইটস ১৬৩/৪, ১৭ ওভার
ঢাকা ৬ উইকেটে জয়ী
রাজশাহীর বিপক্ষে হেরে জয়ের ধারায় ছেদ পড়েছিল ঢাকার। আগের ম্যাচে জিতেছিল সিলেট, রংপুরের সঙ্গে। তবে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে দুই দলই ফিরে গেল ‘পুরোনো’ চেহারায়। সিলেটের ১৫৯ রানের লক্ষ্য ৩ ওভার বাকি থাকতেই সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত ৪১ বলে ৬১ ও আন্দ্রে রাসেলের ২১ বলে ৪০ রানের ঝড়ে পেরিয়ে গেছে ঢাকা।
সিলেটের ইনিংসের শুরুতে নড়বড়ে ছিলেন লিটন, তবে শট খেলা থামাননি। ১৪ বলে ২৭ করে ফিরেছেন তিনি। ১১তম ওভারে গিয়ে খেই হারিয়েছিল সিলেট। আফিফ হোসেন, অলক কাপালি ও নিকোলাস পুরানরা ফিরেছেন স্বল্প সময়ের ব্যবধানে। ডেভিড ওয়ার্নার অবশ্য চেষ্টা করে গেছেন, শুরুতে ধীরগতির থাকলেও শেষ পর্যন্ত করেছেন ৪৩ বলে ৬৩ রান।
রানতাড়ায় শুরুতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল ঢাকা। মিজানুর রহমান, সুনীল নারাইন ও রনি তালুকদার- তিনজনকে তারা হারিয়েছিল ৩৭ রান ও ৫ ওভারের মাঝেই। দারউইশ রাসুলির সঙ্গে সাকিবের ৭৫ রানের জুটিতে এরপর সিলেটকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে ঢাকা। এ জুটিতে রাসুলির অবদান ছিল ১৫ বলে ১৯।
ছক্কার পর অক্কা
সাকিব আল হাসানকে ছয় মারতে যাবেন না, এর পরের বলের পরিণতিটা সুবিধার নয়! দুইজন সিলেট ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে ঘটেছে এমন আজ। পঞ্চম ওভারে সাকিবকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে ইনসাইড-আউটে ছয় মারলেন লিটন, পরের বলে ঝুলিয়ে দিলেন সাকিব। লিটন স্লগ করতে গিয়ে মিস করে গেলেন, ব্যাটেই লাগলো না বল। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ না দিলেও উইকেটটা ঢাকা পেলো রিভিউ নিয়ে। ১৯তম ওভারে শেষ ওভার করতে এসেছিলেন সাকিব। অফস্টাম্প থেকে তাকে টেনে মারলেন ওয়ার্নার- ছয়। পরের বলে সাকিব গেলেন আরও ওয়াইডে, এবারও তুলে মারতে গিয়েছিলেন সিলেট অধিনায়ক, তবে লিডিং-এজে ধরা পড়লেন কাভারে।
সাকিবের ‘দুর্লভ’ বিপিএল ফিফটি
টি-টোয়েন্টিতে সাকিব ফিফটি পেলেন ১৭তম বার। এই ফরম্যাটে নিজের সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮৬ রানের স্কোরটি বিপিএলেই গড়েছিলেন তিনি। তবে বিপিএলে ফিফটি যেন বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিল তার। ২০১২ সালে সেই সর্বোচ্চ ইনিংসের পর ২০১৩ সালে পেয়েছিলে আরও দুই ফিফটি। এরপর আর পাননি, এই ম্যাচের আগে। বোলিংয়ে ৩৪ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পর শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ৬১ রানে, হলেন ম্যাচসেরাও।
‘নতুন বল, প্লিজ’
ফ্রন্টফুট সরিয়ে নিলেন, ব্যাট চালালেন বিদ্যুতগতিতে। বলটা এরপর হারিয়েই গেল! তাসকিন আহমেদ কী করবেন বুঝছিলেন না, আন্দ্রে রাসেলের মুখে শুধু হাসি! নতুন বল এলো। তাসকিন লেংথ একটু কমিয়ে আনলেন, তবে ফল হলো একই। প্রথমে এই বলও হারিয়ে গেছে বলে মনে হলেও অবশ্য ফিরে এলো সেটা। রাসেল ঝড় থামালেন না, মোহাম্মদ ইরফানকে পরপর দুই ছয়ে জয় নিশ্চিত করার আগে।
যে দিন ওয়ার্নারের নয়
আগেরদিন তার থাকা না থাকা নিয়ে হয়েছে নাটক। শেষ পর্যন্ত যা জানা গেছে, তাতে এই ম্যাচে বাদ দিলে এবারের বিপিএলে ডেভিড ওয়ার্নার খেলবেন আর একটি ম্যাচ। আগের ম্যাচ তার ফিফটি দলকে জিতিয়েছিল, এবারও চেষ্টা করলেন সেটা। ফিফটি করলেন, ঢাকা ৩ উইকেটও হারালো দ্রুতই। তবে সাকিবের দারুণ এক ইনিংসেই সব গড়বড় হয়ে গেল সিলেট ও ওয়ার্নারের। দিনটা যে ওয়ার্নারের নয়, সেটা প্রমাণ করতেই যেন আন্দ্রে রাসেল ক্যাচ তুলেও বেঁচে গেলেন বৃত্তের বাইরে বেশি ফিল্ডার থাকায়!