'ভক্তের' কাছেই হেরে গেলেন ফেদেরার!
বিস্ময়, আনন্দ সবকিছু ছাপিয়ে স্টেফানোস সিতসিপাসের মুখে যে অভিব্যক্তিটা খেলা করছিল- সেটাকে বোধ হয় অবিশ্বাস বলে। যাঁর টেনিস খেলা দেখে বেড়ে ওঠা, শৈশব-কৈশোরের সেই নায়ক রজার ফেদেরারকেই হারিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বাসই যেন হতে চাইছিল না ২০ বছর বয়সী এই গ্রিক তরুণের। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে সেটিই হয়েছে, ফেদেরারকে ৬-৭ (১১-১৩), ৭-৬ (৭-৩), ৭-৫, ৭-৬ (৭-৫) গেমে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে।
অঘটন বললেও আসলে কম বলা হয়। সিতসিপাসের বয়স মাত্র ২০ বলে তো বটেই, গত বছর থেকে মাত্র সুযোগ পেয়েছেন গ্র্যান্ড স্লাম খেলার। উইম্বলডনের চতুর্থ রাউন্ড ছিল তাঁর সেরা সাফল্য। এর মধ্যে অবশ্য উঠে এসেছেন র্যাঙ্কিংয়ের ১৪ নম্বরে, প্রতিশ্রুতিও দেখাতে শুরু করেছিলেন। তবে ফেদেরারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের রেকর্ডের জন্যই এই ফলটা অবিশ্বাস্য-গোছের কিছু একটা হয়ে যাচ্ছে। গত দুই বার রড লেভার অ্যারেনায় ট্রফি উঠেছে ফেদেরারের হাতে, গত ১৬ বছরে এখানে এ নিয়ে মাত্র দ্বিতীয় বার উঠতে পারলেন না কোয়ার্টার ফাইনালে। ৩৭ বছর বয়সী নিজের বয়সের অর্ধেকের কাছাকাছি একজনের কাছে হারলেন। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে শেষটাও লেখা হয়ে গেল কি না, এমন প্রশ্নও উঠল।
এমন নয়, ফেদেরার খুব খারাপ খেলেছেন। তবে সিতসিপাস আজ ছিলেন দুর্দান্ত। আধুনিক টেনিসে বিরল হয়ে পড়া এক হাতের দুর্দান্ত ব্যাকহ্যান্ডে ভুগিয়েছেন ফেদেরারকে, আর বুলেট গতির সার্ভ তো ছিলই। প্রথম সেট অবশ্য জিতেছেন ফেদেরারই। কিন্তু পরের তিন সেটে একবারের জন্যও ব্রেক করতে পারেননি প্রতিপক্ষকে। শেষ সেটে এসেও যখন সার্ভে ম্যাচ পয়েন্ট, একটা সার্ভ মিস করেও নার্ভাস হয়ে গেলেন না এই তরুণ। মাথা ঠাণ্ডা করে ফেদেরারকেই বাধ্য করলেন আনফোর্সড এরর করতে। কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁর মুখোমুখি রবার্তো বাউতিস্তা আগুত, যিনি মার্টিন চিলিচকে পাঁচ সেটের আরেকটি ধ্রুপদী লড়াইয়ে হারিয়ে উঠেছেন শেষ আটে। কী কাকতাল, এই ফেদেরার-চিলিচই গত বার ফাইনালে ছিলেন, আর দুজনেই বিদায় নিলেন একই দিনে।