সিলেটের 'অলরাউন্ড প্যাকেজের' ভার নিতে পারল না খুলনা
সিলেট সিক্সার্স ১৯৫/৪, ২০ ওভার (আফিফ ৪৯, সাব্বির ৪৪*, তাইজুল ৩/৩০, জুনাইদ ১/৪৮)
খুলনা টাইটানস ১৩৭, ১৮.১ ওভার (টেইলর ৩৪, আরিফুল ২৪, নাবিল ৩/২০, তাসকিন ২/৬)
সিলেট ৫৮ রানে জয়ী
প্রথমে রান পেলেন ব্যাটসম্যানরা- লিটন দাস, সাব্বির রহমান, আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ নওয়াজ। সিলেট তুললো ১৯৫ রান। সে রানের সম্বল নিয়ে বোলিং করলেন সিলেটের ছয়জন বোলার, উইকেট পেলেন সবাই। সঙ্গে যোগ করুন জ্যাসন রয়ের দারুণ ক্যাচ, নওয়াজের ডিরেক্ট থ্রো-তে রান-আউট। সব মিলিয়ে সিলেট সিক্সার্স যেন দারুণ একটা প্যাকেজ এদিন। সে প্যাকেজের ভার নিতে পারল না খুলনা টাইটানস। সিলেট পেল টানা দ্বিতীয় জয়, পয়েন্ট টেবিলে রাজশাহী কিংসকে টপকে গেল তারা। আর এই সিলেটের বিপক্ষেই অনেক অপেক্ষার এক জয়ের পর আবার পরাজয়ের সেই পুরোনো বৃত্তেই ফিরে গেল খুলনা।
শুরুটা ঝড়ো লাগতো খুলনার, জুনাইদ সিদ্দিক সেটা চেষ্টাও করেছিলেন। দ্বিতীয় ওভারে এবাদত হোসেনকে চার, চার, ছয়সহ তুললেন ১৭ রান, তবে তাসকিনে থামতে হলো তাকে। ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েছেন ১১ বলে ২০ রান করে। ব্রেন্ডন টেইলর ও আল-আমিন আরেকদফা চেষ্টা করেছিলেন অবশ্য, আল-আমিন ফিরলেও পাওয়ারপ্লেতে খুলনা তুলেছিল ৬৪ রান। সিলেট লাগাম টেনে ধরলো এরপরই।
প্রথমে সোহেল তানভীরের বলে এলবিডব্লিউ আল-আমিন, আর টেইলর রয়ের ওই দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়েছেন। নাবিল সামাদকে ইনসাইড-আউটে মেরেছিলেন টেইলর, লং-অফ থেকে ছুটে গিয়ে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচটা নিয়েছেন রয়। টেইলরের আগেই ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, খুলনাও খেই হারিয়েছে।
মাহমুদউল্লাহর ১৩ বলে ১১ ও আরিফুল হকের ২১ বলে ২৩ রানের ইনিংস শুধু খুলনার রান-সংগ্রামের কথাই মনে করিয়ে দিয়েছে। এরপর দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি খুলনার আর কেউ, ১৯তম ওভারে গুটিয়ে গেছে তাদের ইনিংস। বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদ ২০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট, ২টি উইকেট নিতে তাসকিন খরচ করেছেন ৬ রান। ১টি করে পেয়েছেন তানভীর, এবাদত, নওয়াজ ও কাপালি।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছিল সিলেট। ডেভিড ওয়ার্নার চলে গেছেন, তবে সিলেট সিক্সারসের রান নদীতে ভাটা পড়েনি খুব একটা। আগের দিন সিলেট সিক্সারসের পর আজ খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষেও সিলেটের ব্যাট চলেছে সপাটে। শুরুতে আফিফ হোসেন, লিটন দাসের পর শেষে এসে তুলির টানে শেষ আঁচড় দিয়েছেন সাব্বির রহমান ও মোহাম্মদ নওয়াজ। আর তাতেই সিলেট উঠেছে ১৯৫ রানের পাহাড়ে।
প্রথম ওভারেই শুভাশীষকে ছয় মেরে ঝড় শুরু করেছিলেন আফিফ। ইয়াসির শাহর পরের ওভারে লিটন দাসও রুদ্রমূর্তিতে, ওভার থেকে নিলেন ২০ রান। দুই ওভার শেষে চলে এলো ৩২ রান। তাইজুল ইসলাম এসে লাগাম ধরলেন সেটির, ব্রেন্ডন টেলর স্টাম্পিংয়ের সহজ সুযোগ মিস না করলে লিটনকে ২২ রানেই ফেরাতে পারতেন। শেষ পর্যন্ত লিটন অবশ্য ইনিংসটা বেশি লম্বা করতে পারেননি, ২২ বলে ৩৪ রান করে সেই তাইজুলের বলেই আউট হলেন। ততক্ষণে অবশ্য ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি হয়ে গেছে। ১ ওভার পর জেসন রয়কেও ১ রানে ফেরালেন তাইজুল, সিলেটের রানের চাকা মন্থর হলো আরেকটু।
আফিফ অবশ্য খেলছিলেন দারুণ, মনে হচ্ছিল এবারের টুর্নামেন্টে প্রথম ফিফটিটা পেয়েই যাবেন। কিন্তু ৩৬ বলে ৪৯ রান করে তাইজুলের তৃতীয় শিকারে পরিণত হলেন। নিকোলাস পুরান ১০ বলে ১২ রানের বেশি টিকলেন না, সিলেট ১০৬ রানে হারাল চতুর্থ উইকেট। তখন মনে হচ্ছিল, ১৭০টাই তাদের জন্য ভালো স্কোর।
কিন্তু সাব্বির রহমান আর মোহাম্মদ নওয়াজের মনে ছিল অন্য কিছু। খুলনার জুনাইদ নো আর ওয়াইড করে সুবিধাও করে দিয়েছেন, আর মিসফিল্ডিং তো ছিলই। শেষ ৪ ওভারে ৫২ রান তুলেছে সিলেট, এর মধ্যে ১৮ ও ১৯তম ওভার থেকেই এসেছে ৩৫ রান। ২৯ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন সাব্বির, ২১ বলে ৩৯ রান করে ছিলেন নওয়াজ। সিলেট চলে গেল ১৯৫ রানে।
খুলনা থামলো সিলেটের অনেক আগেই!