নিজের সঙ্গে 'যুদ্ধে' জেতাটাই তৃপ্তি দিচ্ছে মুশফিককে
বিপিএলে বরাবরই তিনি ধারাবাহিক, টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রানও তাঁর। অথচ শিরোপাটা কখনো জেতা হয়নি মুশফিকুর রহিমের, গত তিন আসরে তো শেষ তিনেই খেলা হয়নি। এবার কাগজে কলমে খর্বশক্তির চিটাগং ভাইকিংসকে নিয়ে গেছেন শেষ চারে। আজ ঢাকার কাছে হেরে বিদায় নিলেও এবারের টুর্নামেন্টটা তাই বাড়তি সন্তুষ্টি দিচ্ছে মুশফিকুর রহিমকে।
এবারের বিপিএলের ড্রাফটের আগেও মুশফিক কোন দলে যাচ্ছেন, তা জানা ছিল না। শেষ মুহূর্তে চিটাগং ভাইকিংস দলে নেয় তাঁকে, অথচ টুর্নামেন্টে চিটাগং তাওলবে কি না সেটি নিয়েই সংশয় ছিল। এমন কোনো বড় নাম না থাকার পরেও সেই দলটা প্রথম ছয় ম্যাচের পাঁচটি জিতে চমকে দিয়েছে সবাইকে। ধারাটা শেষ পর্যন্ত বজায় রাখতে না পারলেও যা হয়েছে তাতে মুশফিক খুব একটা অখুশি নন, ‘ওভারল আমি মনে করি আগের যে কোনো টুর্নামেন্টের চেয়ে এবার আমি একটু হলেও খুশি। কারণ কিছু কিছু জায়গা ছিল যেখানে কঠিন পরিস্থিতি থেকে বের হতে পেরেছি। নিজেকে প্রমাণ করার ছিল, এই ফরম্যাটে আমি যথেষ্ট ভালো করতে পারি। তো সেই জায়গাতে থেকে নিজের সাথে যে যুদ্ধটা ছিল সেটার পর খুব বেশি না হলেও একটু সন্তুষ্ট বলতে পারি।’
কিন্তু নিজের সঙ্গে যুদ্ধটা ঠিক কোন জায়গায় ছিল? মুশফিক এবার একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলেন, ‘গত দুই বছর আমি বরিশাল বুলস আর রাজশাহী কিংস থেকে শীর্ষ চারে খেলতে পারিনি। তখন অনুভূতিটা ভালো ছিল না। আমার কাছ থেকে যে প্রত্যাশা ছিল সেটাও পূর্ণ করতে পারিনি, খারাপ লাগাটা তাই স্বাভাবিক। এই বছরের আগে আমি বেশি রান করেছি সেরকম বছরও আছে। সেই হিসেবে যে খুব বেশি আনন্দিত তা বলা যায় না। তবে ম্যাচের অনেক পরিস্থিতি ছিল যেখানে একটু এদিক সেদিকের কারণে অনেক কিছু হতে পারত। সেই জায়গায় ভালো করতে পেরেছি, সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেটা আআকে সামনের জন্য অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস দেবে।’
মুশফিকের নিজে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। তবে এবার যে স্ট্রাইক রেটে ম্যাচের পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলেছেন, তাতে তাঁর সন্তুষ্টির বাড়তি জায়গা আছেই। সব মিলে দল হিসেবে তিনি চিটাগংকে নিয়ে গর্বিতই, ‘আমাদের বাজে কিছু ভুল হয়েছে আজ, একটা সেট ব্যাটসম্যান আউট হয়েছে, সেই হিসেবে একটু হতাশ তো অবশ্যই। তবে সব মিলে যদি দেখেন, এই টুর্নামেন্টে আমরা এই দল নিয়ে যেভাবে খেলেছি সেটা অবশ্যই আমাদের গর্ব বোধ করার মতো।’
কিন্তু ঘরের মাঠে টানা হারই কি চিটাগংয়ের ছন্দটা নষ্ট করে দিয়েছে? মুশফিক সেটি মেনেও নিলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট এমন, আপনি যখন জিততে থাকবেন তখন আপনি খেলার মধ্যেই থাকতে চাইবেন। অনেক সময় এমনও হতে পারত ছয়টা ম্যাচের মধ্যে পাঁচটা হেরে গেলে আমাদের হয়তো একটা বিরতি দরকার বলে মনে হতো যেন রিগ্রুপ করতে পারি। আমি মনে করি না এটা অজুহাত। তারপরও আমাদের যে শক্তি চিটাগংয়ের উইকেটে ডিফেন্ড করা কঠিন। ঢাকার মতো উইকেটের জন্য সেরকম জায়গায় আমাদের দলটা একটু ব্যালান্সড। তো সেদিক থেকে চিটাগংইয়ে আমরা মোমেন্টাম হারিয়ে ফেলেছি। আর আজকে যেভাবে হেরেছি, তাতে হতাশ। ঢাকাকে আগের দুবার হারালেও জানতাম কাজটা কঠিন হবে। যেভাবে হেরে গেলাম তাতে তো একটু বেশি হতাশই।’