• " />

     

    বুলাওয়েতে আফগান ইতিহাস!

    বুলাওয়েতে আফগান ইতিহাস!    

    মোহাম্মদ শাহজাদ ব্যস্ত স্ট্যাম্প তুলতে! সতীর্থদের দিয়ে নিজে একটা রাখলেন। ইতিহাসের স্মারক, রাখতে তো হবেই! শন উইলিয়ামস ক্লান্ত, বুলাওয়ের পিচ থেকে ড্রেসিংরুমের পথটা যেন অনন্তকালের! দর্শকের অভিনন্দনের জবাব দিলেন শুকনো মুখে। আর আফগানদের চোখে মুখে তখন দীপ্তি! ‘রুপকথা’ শব্দটা আফগানিস্তানের জন্য ক্লিশে এখন, তবে যে শব্দই ব্যবহার করা হোক, ইতিহাস তো ইতিহাসই!

     

     

    ইতিহাস আর আফগানিস্তান, দুইয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই উইলিয়ামস। জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান। সিরিজটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েরই ছিল। আফগানদের সামনে ছিল প্রথমবারের মতো আইসিসির পূর্ণ কোনো সদস্যের সঙ্গে সিরিজ জয়ের হাতছানি, আর জিম্বাবুয়ের সে ইতিহাসে অংশ না নেওয়ার তাড়না!

     

    মোহাম্মদ নবী (৫৩) আর নূর আলী জাদরানের (৫৪) দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৯৭ রান তোলার সুবিধাটা ঠিক কাজে লাগাতে পারেনি আফগান মিডল অর্ডার। অধিনায়ক আজগর স্ট্যানিগজাইকে সঙ্গ দিতে পারেন নি(৩৮) ঠিক কেউই, শেষের দিকে মিরওয়াইস আশরাফ আর শাপুর জাদরানের দুটি ক্যামিওতে আফগানরা তোলে ২৪৫ রান।

     

    জিম্বাবুয়ের ইনিংসটা আসলে একলা এক বীরের কাহিনী! ৯, ১২, ১৫, ৩৪, ৫১- জিম্বাবুয়ের উইকেট পড়েছে নিয়মিত বিরতিতেই! যখন সবাই যাওয়া আসাতে ব্যস্ত, দাঁড়িয়ে ছিলেন একজন, শন উইলিয়ামস। শেষ পর্যন্ত যখন থামলেন, দলের রান ১৭২, তাঁর একারই ১০২! উইলিয়ামস বাদে জিম্বাবুয়ে ইনিংসে সর্বোচ্চ রান লুক জঙ্গেইয়ের, ১৬! দাওলত জাদরান ২২ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট, ম্যাচসেরা হয়েছেন যৌথভাবে ওই উইলিয়ামসের সঙ্গেই!

     

     

    ম্যাচসেরার পুরস্কারটা দুজনের কাছে গেলেও সিরিজসেরা একজনই, ২২৩ রান আর ২ উইকেট নিয়ে মোহাম্মদ নবী। এখানে জিম্বাবুইয়ান কেউ নেই, যেমন সিরিজের ট্রফিরও ভাগীদার শুধুই আফগানরা। পূর্ণাঙ্গ কোচ হিসেবে প্রথম সিরিজেই জয়ের স্বাদ পেলেন আফগানিস্তানের কোচ সাবেক পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ইনজামাম উল হক।

     

    বুলাওয়েতে সূর্য তখন অস্তগামী। সিরিজের স্মারক ট্রফিটার চেয়েও বেশী প্রজ্জ্বল তখন আফগানদের মুখের হাসি! বুলাওয়ের অস্তগামী সূর্যই যে কাবুলে নতুন সূর্যের আভা নিয়ে উঠছে তখন! কে জানে, ক্রিকেট বিশ্বের আকাশও সে সূর্যের ঝলক দেখবে কিনা!