• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    সারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যেদিন মাঠেই থেকে গেলেন কেপা

    সারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যেদিন মাঠেই থেকে গেলেন কেপা    

    টাইব্রেকারে চেলসিকে হারিয়ে কারাবাও কাপের শিরোপা জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি। গোলশূন্য ফাইনালও যে কতোখানি উত্তাপ ছড়াতে পারে সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে দুইদল। কিন্তু কেবল ফুটবলই না, এই ম্যাচে নতুন মাত্রা যোগ করল অন্য একটা ঘটনা। এমন কিছু হয়ত আগে কখনই শোনেননি আপনি! তাই ইংলিশ লিগ কাপের ফাইনালের সব উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ ছাপিয়ে গেছে এক ঘটনাতেই!

    ফাইনালে চেলসির গোলবারের নিচে ছিলেন নিয়মিত গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগা। বিশ্বের সবচেয়ে দামী গোলরক্ষক পুরো ম্যাচে বেশ কয়েকটি সেভও করেছেন। দুইদলের খেলা যে শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে পৌঁছেছে সেটার পেছনেও বড় অবদান স্প্যানিশ গোলরক্ষকের। এক্সট্রা টাইমের দ্বিতীয়ার্ধের একেবারে শেষদিকে দারুণ একটি সেভ করে সিটিকে এগিয়ে যেতে দেননি কেপা। কিন্তু ওই সেভটা করতে গিয়েই কিছুটা আহত হন তিনি। পরে মেডিকেল দলের সাহায্য নিয়ে আবারও উঠে দাঁড়ান।

    এরপরও অবশ্য ধুঁকছিলেন কেপা। ডাগ আউটে চেলসি কোচ মাউরিসিও সারিকে তাই একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হত। সে সিদ্ধান্তটা অবশ্য একাও নেওয়ার কথা ছিল না তার। মেডিকেল দল, গোলরক্ষক কোচ, সহকারি কোচদের সঙ্গে শলা পরামর্শ করেই ম্যানেজার সারির সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। ১২০ মিনিটের শেষদিকে খেলা যখন নিশ্চিতভাবেই টাইব্রেকারের দিকে গড়াচ্ছিল, তখন সারি সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললেন। কেপাকে বদলে আরেক গোলরক্ষক উইলি ক্যাবেয়ারোকে নামাবেন তিনি। ক্যাবেয়ারো গ্লাভসও পরলেন, প্রস্তুত হলেন। এরপর দাঁড়ালেন নির্ধারিত জায়গায়। চতুর্থ রেফারিও খেলোয়াড় বদলের সংকেত দেবেন। কেপার জায়গায় নামবেন ক্যাবেয়ারো।

    কিন্তু বিপত্তিটা ঘটল এরপরই। মাঠ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানালেন কেপা। নিজেকে ফিট দাবি করে কিছুতেই নিজের জায়গা থেকে নড়লেন না তিনি। সহকারি কোচ সাবেক চেলসি খেলোয়াড় জিয়ানফ্রাঙ্কো জোলার অনুরোধও মানলেন না কেপা। ঘড়িতে তখন অতিরিক্ত সময় পার হয়ে চলছে যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিট।  নিয়ম অনুযায়ী খেলোয়াড় নিজে থেকে মাঠ না ছাড়লে রেফারির করার থাকে না কিছুই। বিতর্কিত মুহুর্তের জন্ম দিয়ে তাই কেপা থেকেই গেলেন শেষ পর্যন্ত। আর ডাগ আউটে রাগে টগবগ করে ফুটতে থাকা সারি পারলে তখনই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান!

    সারির অবশ্য সেটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক। ম্যানেজারের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান না দেখানো তো খেলোয়াড়ের পেশাদারিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেয়! ম্যাচ শেষে জন টেরিও যেমন সমালোচনা করেছেন কেপার, "চরম অসম্মান দেখালো কেপা। একবার যদি আপনার বদলির সিদ্ধান্ত এসে যায়, সেটা যাই হোক, যখনই হোক আপনার মাঠ ছাড়তে হবে।"- স্কাই স্পোর্টসের কমেন্ট্রিবক্সেই মন্তব্য করেছেন সাবেক চেলসি অধিনায়ক। 

    খেলোয়াড় বদল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারেও ছিলেন কেপাই। কিন্তু টাইব্রেকার শুরুর আগের মুহুর্তে ম্যানেজার সারির সঙ্গে আরেকটু হলেই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়তে পারতেন কেপা। দলের খেলোয়াড়েরাই সারিকে সামাল দিয়েছেন। 'বিচ্ছিরি' ঘটনাটা তাই আরও কুৎসিত রূপ নেয়নি ওয়েম্বলিতে। টাইব্রেকারে অবশ্য নায়ক হয়ে আর ওঠা হয়নি কেপার। লিরয় সানের শট ঠেকালেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি তিনি। সিটিজেনরা ৪টি সফল পেনাল্টি কিক নিয়ে হারিয়ে দিয়েছে চেলসিকে। তবে সারির-কেপার এই যুদ্ধ নিশ্চিতভাবে এখানেই হচ্ছে না!

    এর আগে খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস আর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা সারির যে নিজের খেলোয়াড়দের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই সেটা বোঝা গেছে ভালোভাবেই। তবে দোষটা আসলে কার? কেপাকেই হয়ত দোষটা নিতে হবে শেষ পর্যন্ত। কিন্তু সারিও পার পাচ্ছেন না সহজে।

    কয়েকদিন আগে সিটির কাছে ৬-০ গোলে উড়ে যাওয়া দল তাই লড়াই করে  ফাইনালে হারলেও এ ম্যাচ থেকে ভালো কিছু পুঁজি করে নিয়ে ফিরছে না ঘরে। উলটো পরের কয়েকদিনে এ ঘটনার রেশ ধরে সারিকেই না চাকরি হারাতে হয়!