উঁকি দিচ্ছে বিশ্বকাপ, বদলে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া
১ম ওয়ানডে, শারজা
পাকিস্তান ২৮০/৫, ৫০ ওভার
অস্ট্রেলিয়া ২৮১/২, ৪৯ ওভার
অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী
বিশ্বকাপ উঁকি দিচ্ছে, বদলে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার চেহারাটা। ভারতের বিপক্ষে ২-০তে পিছিয়ে থাকার পর ফিরে এসে সিরিজ জিতেছিল তারা, এবার শারজায় অস্ট্রেলিয়া টেনে আনলো ভারতের সেই ফর্মটাই। অ্যারন ফিঞ্চের সেঞ্চুরি ও শন মার্শের অপরাজিত ৯১ রানের ইনিংসে পাকিস্তানের দেওয়া ২৮১ রানের লক্ষ্য অনায়াসেই পেরিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের মাঝপথে পাকিস্তানের সম্বলটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জিং-ই মনে হচ্ছিল, তবে ফিঞ্চ-মার্শদের আধিপত্যে দাপট দেখিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ম্লান হয়ে গেছে তাই হারিস সোহেলের প্রথম সেঞ্চুরি, উমর আকমলের প্রত্যাবর্তন।
অস্ট্রেলিয়ার রানতাড়ায় ফিঞ্চের সঙ্গে আরেকবার জমে উঠছিল উসমান খাওয়াজার ওপেনিং জুটি, প্রায় সমান বলে ৬৩ রান ওঠার পর পাকিস্তানকে ব্রেকথ্রু দিয়েছিলেন ফাহিম আশরাফ। তবে ফিঞ্চ-মার্শকে আটকাতে পারেননি আর কেউ। মোহাম্মদ আমিরের সঙ্গে অভিষিক্ত মোহাম্মদ আব্বাসের পেস জুটি, বা ওয়াসিম-ইয়াসির শাহর স্পিন-জুটি, ফিঞ্চ-মার্শের কাছে কেউই পাত্তা পাননি সেভাবে।
দুজন ধীরে-সুস্থে থিতু হয়েছেন, সঙ্গে বদল করেছেন স্ট্রাইক। আর সুযোগ বুঝে করেছেন আক্রমণ। শোয়েব মালিককে লং-অন দিয়ে ছয় মেরে ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন ফিঞ্চ, আব্বাসের বলে কট-বিহাইন্ড হওয়ার আগে করেছেন ১৩৫ বলে ১১৬ রান, ৮টি চার মেরেছেন, সঙ্গে ৪টি ছয়। মার্শের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়কের জুটিতে উঠেছে ১৭২ রান, পাকিস্তানকে ছিটকে দিয়েছে সে জুটিই।
ফিঞ্চ ফিরলেও ছিলেন মার্শ, নিজের ইনিংসের গতি বজায় রাখতেই কিনা সেঞ্চুরিটা পাওয়া হয়নি তার। ভারত সিরিজ মিস করেছিলেন, বিশ্বকাপের জন্য এ সিরিজটা গুরুত্বপূর্ণ তার কাছে। প্রথম পরীক্ষাতে দারুণভাবেই পাশ করে গেলেন তিনি। ১০২ বলে করেছেন অপরাজিত ৯১ রান, ৪টি চারের সঙ্গে আছে ২টি ছয়। অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত হওয়ার সময় তার সঙ্গী ছিলেন ২৭ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকা পিটার হ্যান্ডসকম্ব।
শারজায় প্রায় বছরখানেক ওয়ানডে হয়নি, তবে পিচ ছিল বরাবরের মতোই শুষ্ক, যেখানে স্পিনারদের ধারাবাহিকতা চাপে রাখতে পারে ব্যাটসম্যানদের। টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া পাকিস্তান অবশ্য শেষ পর্যন্ত গিয়েছিল চ্যালেঞ্জিং এক স্কোর পর্যন্তই। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার তিন স্পিনার- ন্যাথান লায়ন, অ্যাডাম জ্যাম্পা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মাঝের ওভারগুলিতে ঠিক হাত খুলে খেলতে দেননি তাদের, তিনজন মিলে ৩০ ওভারে দিয়েছেন ৪.৬৩ হারে রান। শুরুতে ইমাম-উল-হকের উইকেটে চাপে পড়ে যাওয়া পাকিস্তান ধরতে পারেনি রান-তোলার গতিটাও।
লায়নকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ৯ম ওভারে ফিরেছিলেন ইমাম। এরপর শান মাসুদ ও সোহেল দ্বিতীয় উইকেটে তুলেছিলেন ৪৩ রান। মাসুদের শেষটা হয়েছে কুৎসিত, ন্যাথান কোল্টার-নাইলকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে বল ডেকে এনেছেন স্টাম্পে। সোহেলের সঙ্গে এরপর যোগ দিয়েছেন দুই বছরেরও বেশি সময় পর পাকিস্তানের ওয়ানডে দলে ফেরা উমর আকমল। তাদের জুটিতে এসেছিল ৯৮ রান, ফিফটি থেকে ২ রান দূরে থেমেছেন আকমল।
পাকিস্তানের এরপর দরকার ছিল উড়ান। শোয়েব মালিক, ফাহিম আশরাফের পর ইমাদ ওয়াসিম সেটা করার চেষ্টা করলেন তিনটি ক্যামিও খেলে। ওয়াসিমেরটা ছিল দারুণ কার্যকর, ১৩ বলে তিনি করেছেন ২৮ রান। আর প্রথম সেঞ্চুরির জন্য শেষ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন সোহেল, শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১১৫ বলে ১০১ রানে।
তবে ফিঞ্চ-মার্শে ম্লান হয়েই যেতে হয়েছে তাকে শেষ পর্যন্ত।