বিকেএসপিতে বিতর্ক: ব্রাদার্সের খেলতে অস্বীকৃতি, জয়ী মোহামেডান
প্রিমিয়ার লিগে বিকেএসপির ম্যাচে রানবন্যা এমন কোনো ব্যাপার নয়। আজ মোহামেডান-ব্রাদার্সের ম্যাচে বৃষ্টি হওয়ার আগে সেরকমই হচ্ছিল। মোহামেডান পেরিয়ে গিয়েছিল ৩০০। কিন্তু এর পরেই তুমুল শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে প্রায় পন্ডই হতে বসেছিল খেলা। শেষ পর্যন্ত আবার যখন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা, তখনই ব্রাদার্স বেঁকে বসল খেলতে। শেষ পর্যন্ত নিয়ম অনুযায়ী মোহামেডানকেই জয়ী ঘোষণা করা হলো।
মোহামেডানের হয়ে জয়ের ভিতটা অবশ্য গড়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনারই। অভিষেক মিত্র ও ইরফান শুক্কুর মিলে এনে দিয়েছিলেন ১৭৪ রানের জুটি। দুজন মিলে ১০০ রান তুলে ফেলেছিলেন ১২৮ বলে, তার পরেই বেড়ে যায় রানের গতি। ১৫০ রান আসে ১৬০ বলে। ৩০.৩ ওভারে ১৭৪ রান তুলে ফেলেছিলেন দুজন মোহামেডানের জন্য ৩৫০ও খুব একটা সম্ভব মনে হচ্ছিল না।
শুক্কুরকে হাতছানি দিচ্ছিল সেঞ্চুরি, তবে ১০৫ বলে ৯২ রানে সাজেদুলের বলে বোল্ড হয়ে যান। সেই ওভারেই ফিরে যান অভিষেকও, ৭৯ বলে ৬৮ রান করে। শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার চতুরঙ্গ ডি সিলভা আউট হয়ে যান ১১ রান করে, মোহামেডানের রান তখন ২০৭। মোহাম্মদ আশরাফুল পরিস্থিতির দাবি মেটাতে ব্যর্থ হয়ে ১২ বলে করেছেন ৬।
তবে অধিনায়ক রকিবুলের ব্যাট চওড়া হলো ঠিকই। ৩৫ বলে ঠিক ৫০ রান করে আউট হলেন। তবে মোহামেডান তখন ৪২ ওভার শেষে ২৫৪ রানে হারিয়ে ফেলেছে ৫ উইকেট। এরপর উইকেট নিয়মিত বিরতিতেই পড়তে থাকল, তবে সোহাগ গাজী ব্যাটনটা নিলেন রকিবুলের কাছ থেকে। ২৫ বলে ৪৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত। শেষ ১০ ওভারে তাতেই ৭০ রান তুলেছে মোহামেডান, যদিও হারিয়েছে ৫ উইকেট।
শিলাবৃষ্টিতে বিকেএসপিতে মোহামেডান-ব্রাদার্স ম্যাচে বিরতি। ছবি: ফরিদ আহমেদ
এরপরেই তুমুল ঝড় আর বিতর্ক। শিলাবৃষ্টিতে বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল খেলা। এরপর শুরু হয় বিতর্ক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রাদার্সের এক খেলোয়াড় জানিয়েছেন, ৪টা ১০ মিনিট পর্যন্ত কাট আউট টাইম ছিল। তার পাঁচ মিনিট আগে ঘোষণা করা হয়, ব্রাদার্সকে ২০ ওভারে ১৭৪ রান তাড়া করতে হবে। কিন্তু ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডের কোনো কাগজও দেওয়া হয়নি বলে তারা বলেছেন। তাদের দাবি, সেখানে খেলার মতো কোনো পরিস্থিতি ছিল না। উইকেট ভেজা, আউটফিল্ডে পানি সবকিছু বোঝা যাচ্ছিল ড্রেসিংরুম থেকে। ব্রাদার্স তাই খেলতে অস্বীকৃতি জানায়। প্রিমিয়ার লিগে কোনো রিজার্ভ ডেও নেই। তাই মোহামেডানকেই দেওয়া হয় পূর্ণ পয়েন্ট।
এ ব্যাপারে ম্যাচ রেফারি আকতার আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্যাভিলিয়ন ডট কমকে বলেন, মাঠ খেলার মতো অবস্থাতে ছিল বলেই তারা ব্রাদার্সকে নামার জন্য ডেকেছিলেন। আর মাঠে আইসিসি স্বীকৃত দুই আম্পায়ার ছিলেন, তারাও মনে করেছিলেন মাঠ খেলার জন্য উপযুক্ত। ব্রাদার্সের দুই ব্যাটসম্যানও তৈরি ছিলেন। কিন্তু পিচের একটা জায়গায় কাভার ফুটো হয়ে সামান্য একটু ভিজে গিয়েছিল, যেটা খেলার পথে বাধা ছিল না। যে কারণে তারা খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
কারণ যাই হোক, এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত বিতর্কহীন প্রিমিয়ার লিগে কালো একটা দাগই পড়ল আজকের পর।