• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    নিউক্যাসেলে নাটকীয় জয়ে আবার শীর্ষে উঠল লিভারপুল

    নিউক্যাসেলে নাটকীয় জয়ে আবার শীর্ষে উঠল লিভারপুল    

    সেন্ট জেমস পার্কে দুইবার এগিয়ে গিয়েছিল লিভারপুল। দুইবারই জবাব দিয়েছিল নিউক্যাসেল। লিভারপুলকে হতাশ করে রাফায়েল বেনিটেজের হাতেই শিরোপা স্বপ্নটা মিলিয়ে যেতে বসেছিল লিভারপুলের। সঙ্গে মোহামেদ সালাহর ইনজুরি আশা প্রায় শেষ করে দিয়েছিল। কিন্তু তার জায়গায় বদলি নামা ডিভক অরিগি আরও একবার বাঁচালেন লিভারপুলকে। ৮৬ মিনিটে অরিগির করা গোলে ৩-২ ব্যবধানে জিতে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে উঠেছে লিভারপুল। লিগে বাকি আর ১ ম্যাচ। লিভারপুলের শেষ ম্যাচ উলভসের বিপক্ষে অ্যানফিল্ডে। তার আগে অবশ্য ৩৭ তম ম্যাচে আরেক সাবেক লিভারপুল ম্যানেজারের সাহায্য প্রার্থনা করবেন অলরেড সমর্থকেরা। নইলে ব্রেন্ডন রজার্সের লেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যানচেস্টার সিটি জিতে গেলে লিগের শেষ সপ্তাহে দুইয়ে থেকে উলভসের বিপক্ষে খেলতে নামবে হবে লিভারপুলকে। 



    অরিগি এর আগেও ইনজুরি সময়ে এভারটনের বিপক্ষে কাজটা করেছিলেন গোল করে। এবার করলেন আরও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। ডানপ্রান্তে সাইডলাইনের কাছে ফ্রি কিক পেয়েছিল লিভারপুল। বদলি জের্দান শাকিরির ফ্রি কিকে মাথা ছুঁয়ে জয়সূচক গোলটি করেন অরিগি। এর আগ পর্যন্ত সেন্ট জেমস পার্কে বারবার হতাশ হতে হচ্ছিল লিভারপুলকে। প্রথমার্ধের দুই গোল বাদে, দ্বিতীয়ার্ধে একেবারেই সাদামাটা ছিল তাদের আক্রমণ। সেভাবে গোলের সুযোগও তৈরি করতে পারেনি লিভারপুল। আগের দুই গোলের মতো তাদের কপাল খুলেছে সেট পিস থেকে।

    সাবেক লিভারপুল ম্যানেজার রাফায়েল বেনিটেজ বিপক্ষে ইয়ুর্গেন ক্লপের লড়াইটা সহজ হবে না সেটা জানাই ছিল। স্নায়ুচাপ তো ছিলই তারওপর চ্যাম্পিয়নস লিগের ক্লান্তিটাও বড়সড় বাধা হয়ে ছিল লিভারপুলের সামনে। সেই বাধা টপকাতে লিভারপুলকে এতোখানি বেগ পেতে হবে সেটা অবশ্য বোঝা যায়নি শুরুতে। ১৩ মিনিটে কর্নার থেকে হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন পিএফএ প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার জেতা ভার্জিল ভ্যান ডাইক। ডাচ ডিফেন্ডারকে বক্সের ভেতর ফাঁকায় রেখেছিল নিউক্যাসেল ডিফেন্ডাররা। তাই ভ্যান ডাইককে কষ্ট করতে হয়নি মোটেও।

    কর্নারটা নিয়েছিলেন বার্সার বিপক্ষে বেঞ্চে বসে কাটানো রাইটব্যাক অ্যালেক্সান্ডার আর্নল্ড। মুহুর্তের মধ্যেই অবশ্য ম্যাচটা তার জন্যেই ফসকে যেতে পারত লিভারপুলের। ২০ মিনিটে গোলের সামনে থেকে শট করেছিলেন সোলেমন রন্ডন। গোললাইন থেকে হাত দিয়ে বল ক্লিয়ার করেন আর্নল্ড। সেটা আবার ফেরত যায় ক্রিশ্চিয়ান আতসুর কাছে। পরের শটে তিনি গোল করে নিউক্যাসেলকে ফিরিয়ে আনেন ম্যাচে। রেফারির চোখ এড়িয়ে না গেলে, ওই গোলের বদলে পেনাল্টি পেতে পারত নিউক্যাসেল, আর হয়ত লাল কার্ড দেখতেন আর্নল্ড। তিনি অবশ্য বেঁচে গেছেন, প্রতিপক্ষই কেবল সমতায় ফিরেছে তখন।

    নিউক্যাসেল গোল শোধের পর স্নায়ুচাপ আরও জেঁকে বসেছিল লিভারপুলের ওপর। ঘরের খেলোয়াড়দের সঙ্গে অ্যালিসনকে চাপে রেখেছিল তাদের সমর্থকেরাও। এর মধ্যে আয়োজি পেরেজ অ্যালিসনের বারপোস্ট কাঁপিয়ে দেন দারুণ এক শট করে। নিউক্যাসেল পরীক্ষা কতোখানি কঠিন হবে, সেটা তখনই বুঝিয়ে দিয়েছিল ম্যাগপাইরা।

    কিন্তু নিজেদের দোষেই প্রথমার্ধে আর চাপটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি তারা লিভারপুলের ওপর। আরও একবার ডিবক্সের ভেতর প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে পাহারায় রাখতে ভুলেই গেলেন নিউক্যাসেল ডিফেন্ডাররা। ২৮ মিনিটে সেই আর্নল্ডই ডান প্রান্ত থেকে ক্রস করেছিলেন, সালাহও লিগের ২২ তম গোল করেছেন ডান পায়ে। ওই ক্রসে আলতো করে পা লাগিয়ে ব্যবধান ২-১ করেছিলেন সালাহ।

     

     

    এগিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে শুরুটা ভালো হয়নি লিভারপুলের। রন্ডনকে একবার ঠেকিয়ে দেন অ্যালিসন। কিন্তু এরপর খুব বেশিক্ষণ তাকে গোলবঞ্চিত রাখতে পারেনি লিভারপুল। কর্নার থেকে বল ক্লিয়ার করেছিল লিভারপুল, সেটা গিয়ে পড়েছিল ডিবক্সের মাথায় হাভি মানকুইলোর কাছে। তিনি আবার সেটা পাঠালেন ভেতরে, রন্ডনের কাছে। ভেনেজুয়েলান স্ট্রাইকার বাম পায়ের দারুণ এক হাফ ভলিতে গোল করে ৫৪ মিনিটে আবার নিউক্যাসেলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন ম্যাচে।

    লিভারপুলের একাদশে এদিনও ছিলেন না রবার্তো ফিরমিনো। তার জায়গায় এবার নেমেছিলেন ড্যানিয়েল স্টারিজ। দ্বিতীয়ার্ধে তাকে বদলি করেই শাকিরিকে নামিয়েছিলেন ক্লপ। কিন্তু সমতায় থাকা ম্যাচেও বাধ্য হয়েই আরও একটা বদলি করাতে হয়েছিল তাকে। নিউক্যাসেল গোলরক্ষকের সঙ্গে সংঘর্ষে মাথায় আঘাত পান সালাহ। পরে ম্যাচের ২০ মিনিট বাকি থাকতে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। তার জায়গায় নামা অরিগির হাতেই পরে লেখা হয়েছে ম্যাচের ফল।