• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ল্যাম্পার্ডের চেলসিকে উড়িয়ে শুরু সোলশারের ইউনাইটেডের

    ল্যাম্পার্ডের চেলসিকে উড়িয়ে শুরু সোলশারের ইউনাইটেডের    

    দুইজন নতুন ম্যানেজার। একজন চেলসির হয়ে জিতেছেন সবকিছুই, এখন দায়িত্ব নিয়েছেন ম্যানেজার হিসেবে। আরেকজন গত মৌসুমে মুদ্রার দুই পিঠই দেখেছেন, এই মৌসুমে প্রমাণ করার আছে অনেক কিছুর। ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ড আর ওলে গানার সোলশারের খণ্ড লড়াইয়ে দ্বিতীয়জন জিতলেন বিপুল ব্যবধানে। চেলসিকে ৪-০ ব্যবধানে উড়িয়েই প্রিমিয়ার লিগ শুরু করল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ওলে, ওলে ধ্বনিতে মুখর হলো ওল্ড ট্রাফোর্ড।

    উড়িয়ে বলা অবশ্য ঠিক হচ্ছে না, অন্তত প্রথমার্ধ বিচারে। ভাগ্য পক্ষে থাকলে ৩ মিনিটের সময়ই এগিয়ে যেতে পারত চেলসি। নতুন নাম্বার নাইন ট্যামি আব্রাহাম বক্সের মাথায় চকিত বল পেয়ে দারুণ একটা শট করেছিলেন। ডি গিয়াও পরাস্ত হয়েছিলেন, কিন্ত শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে। 

    ৭ মিনিটে অ্যান্থনি মার্শিয়াল ম্যাচে নিজের প্রথম সুযোগটা পেয়ে যান। এবার কার্ট জুমার ভুলে বল পেয়ে গিয়েছিলেন বক্সে, কিন্তু তার দুর্বল শট ঠেকিয়ে দিয়ে সমস্যা হয়নি চেলসি গোলরক্ষক কেপার।

    ১৮ মিনিটে সেই জুমার ভুলেরই মাশুল দিল চেলসি। এবার কৃতিত্ব প্রাপ্য রেফারি অ্যান্থনি টেলরের প্রাপ্য, আন্দ্রেয়াস পেরেইরাকে ফাউল করা হলেও খেলা থামাননি রেফারি। বল পেয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন মার্কাস রাশফোর্ড, জুমা ফেলে দেন তাকে। পরিষ্কার পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিতে ভাবতে হয়নি রেফারিকে। ঠাণ্ডা মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে এগিয়ে দেন রাশফোর্ড। পেনাল্টিতে নিজের শতভাগ রেকর্ডও ধরে রাখলেন ইউনাইটেড স্ট্রাইকার।

    চেলসি অবশ্য এরপর ফিরে এসেছিল। ইউনাইটেডের খাপছাড়া মধ্যমাঠের সুযোগে বেশ কয়েকবার সুযোগ পেয়েছিল। ৩৮ ও ৪০ মিনিটে অন্তত দুইবার পিছিয়ে পড়তে পারত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। মার্শিয়ালের ভুল পাস চিচিং ফাঁক করে দিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের রক্ষণ, বাঁ দিকে বল পেয়ে গেলেন রস বার্কলি। ফাঁকায় থেকে বাঁ পায়ে একটা শটও নিলেন, কিন্তু ডেভিড ডি গিয়া সেটি ঠেকিয়ে দিলেন দারুণভাবে। ফিরতি বলে জর্জিনহোর শটও জালে চলে যেতে পারত, এবার ব্লক করেছেন হ্যারি ম্যাগিরে। দুই মিনিটের মধ্যেই আবার চেলসির সুযোগ, এবারও বাঁয়ে বল পেয়ে গিয়েছিলেন এমারসন। বাঁ পায়ে শটও নিয়েছিলেন, কিন্তু এবারও ফিরে আসে পোস্টে লেগে। 

    ৫৪ মিনিটে এমারসন আরও একবার পরীক্ষা নিয়েছিলেন ডি গিয়ার, এবার বক্সের ঠিক মাথা থেকে বাঁ পায়ের শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক। ইউনাইটেড এই অর্ধে এসে একটু গুছিয়ে খেলতে শুরু করেছে ইউনাইটেড। ৬৪ মিনিটে পেয়ে গেছে। প্রতিআক্রমণ থেকে রাশফোর্ড বল পেয়ে গিয়েছিলেন, ডান প্রান্তে সেটি পেয়ে যান পেরেইরা। প্রায় নিখুঁত ক্রসটা এসে পড়ে মার্শিয়ালের পায়ে, ইউনাইটেডের নয় নম্বর জার্সিতে নতুন শুরুটা গোল দিয়েই স্মরণীয় করে রাখলেন।

    সেই গোলের রেশ কাটতে না কাটতে আবার গোল। এবার পগবার দুর্দান্ত বলটা বুঝতে পারেনি চেলসি রক্ষণ, রাশফোর্ডকে অফসাইডের ফাঁদে ফেলার চেষ্টাও ভেস্তে যায়। ফাঁকায় বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে দেন, বৃষ্টিভেজা ওল্ড ট্রাফোর্ডে তখন উৎসবের তুমুল কোরাস। পরে হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন, কিন্তু বক্সের কিনারে বল পেয়ে ঠিকমতো শট নিতে না পারায় আর হয়নি।

    সোলশার অবশ্য তাতে মন খারাপ করেননি খুব একটা। হ্যারি ম্যাগুয়ের আর ওয়ান বিসাকার মতো স্বপ্নের অভিষেক হলো আরেক নবীন ড্যানিয়েল জেমসের। এবারও দুর্দান্ত একটা বল দ্বিতীয়ার্ধের ম্যাচসেরা পগবার। জেমস প্রথম বার খেই হারিয়ে ফেলেছিলেন, দ্বিতীয়বার বক্স থেকে শট নিতে পারলেন। ভাগ্যও পক্ষে ছিল, চেলসি ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে দিকবদল করে বল জড়িয়ে যায় জালে। জেমস পেলেন নিজের প্রথম, ইউনাইটেড পেল চারটি গোল। স্বপ্নের শুরু হলো সোলশারের, ইউনাইটেডেরও।