• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে হঠাৎ হাজির এন'গোলো কান্তে

    বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে হঠাৎ হাজির এন'গোলো কান্তে    

    পেশাদারি ফুটবলারদের নিজ চোখে এক পলক দেখতে পারাই সমর্থকদের কাছে অনেক কিছু। কখনও যদি ভাগ্যক্রমে সেলফি বা অটোগ্রাফ মিলে যায়; তাহলে তো কথাই নেই। পেশাগত ব্যস্ততার কারণেই নিজ থেকে চাইলেও সমর্থকদের সাথে সেভাবে সময় কাটানো হয়ে ওঠে না ফুটবলারদের। চেলসির ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডার এন'গোলো কান্তেকে নিজ মেয়ের বিয়েতে দাওয়াত দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ফ্র্যাঙ্ক খালিদ। ব্যস্ততার কারণে আসতে না পারার কথাই জানিয়েছিলেন কান্তে। কিন্তু খালিদ হয়তো তখনও ভাবেননি, ইনজুরিতে পড়ায় কিছুটা অবসর সময় পাওয়া কান্তে ঠিকই চলে আসবেন তার অনুষ্ঠানে। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই, সবাইকে অবাক করে খালিদের মেয়ের বিয়েতে এসেছিলেন কান্তে।

     

     

    টুইটারে কান্তের সাথে ছবি পোস্ট করে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন খালিদ, 'কান্তে একজন অসাধারণ মানুষ। আমার রেস্তোঁরায় এক বন্ধুর মাধ্যমে পরিচিত হয়েছিলাম আমরা। আমার পরিবার এবং আমার সাথে কান্তের সখ্যতা দারুণ। গত বছরের এপ্রিলে আমার ট্রিপল বাইপাস সার্জারির পরপরই সে খোঁজখবর নিয়েছিল। আমার মেয়ে হেনার বিয়েতে তাকে দাওয়াত দিয়েছিলাম, কিন্তু ফ্রান্স জাতীয় দলের খেলা থাকায় সে আসতে পারবে না বলে জানিয়েছিল। কিন্তু ইনজুরিতে পড়ায় ফ্রেঞ্চদের হয়ে এই সপ্তাহে তার খেলা হচ্ছে না। এর পরপরই সে আমাকে আসার কথা জানায়।' কান্তের ধৈর্যেরও প্রশংসা করেছেন খালিদ, 'কান্তে আমার দেখা অন্যতম বিনয়ী মানুষ। বিয়েতে আসার পর থেকে শেষ পর্যন্ত ছিল সে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার সাথে কুশলাদি বিনিময় করার পর সবার সাথেই সেলফি তুলেছে সে, অটোগ্রাফও দিয়েছে অনেককে'।

     

     

    খালিদ আরও বলেন, 'পুরো সময়টায় একবারের জন্যও ধৈর্য হারায়নি সে, বিরক্তও হয়নি। আমার বাবা-মায়ের সাথেও কান্তেকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম। সে স্টেজে উঠে আমার মেয়ে এবং ভগ্নিপতিকে অভিনন্দন জানিয়েছে। তার উপস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠানটি আরও উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল সবার জন্য। কান্তেকে কাছে পেয়ে সবাই-ই খুশি হয়েছিল অনেক। চেলসিতে আমার সবচেয়ে প্রিয় ফুটবলার সে। সবধরণের সাফল্যই এরকম চমৎকার একজন মানুষের প্রাপ্য। সে আসলেই অসাধারণ একজন মানুষ।' কান্তেকে কাছে পেয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক লিভারপুল সমর্থক তাকে চেলসি ছেড়ে অ্যানফিল্ডে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। হেসে সে প্রস্তাব নাকচ করে দেন কান্তে। 

     

     

    অবশ্য এবারই প্রথম সমর্থকদের সাথে মাঠের বাইরে আলাদাভাবে দেখা করেননি কান্তে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এক ভক্তের অনুরোধে তার বাড়িতে যেয়ে রাতের খাবার খেয়ে ফিফা গেমও খেলেছিলেন তিনি। সেন্ট প্যানক্রাসে ইউরোস্টারের ট্রেন মিস করেছিলেন কান্তে, এরপর কিংস ক্রসের কাছের এক মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন তিনি। একই মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন আর্সেনাল সমর্থক বদলুর রহমান জলিল এবং তার বন্ধুরা। নামাজ শেষে কান্তেকে তার বাড়িতে দাওয়াত দেন জলিল, কান্তেও রাজি হয়ে যান হাসিমুখেই।

    এরপর জলিলের বাসায় ফিফা খেলা, রাতের খাবার খাওয়ার পর কান্তে বিবিসির ম্যাচ অফ দ্য ডে প্রোগ্রামও দেখেছিলেন তাদের সাথে। এতবড় মাপের ফুটবলার হয়েও কান্তের বিনয় ছূঁয়ে গিয়েছিল জলিলকে, 'আমরা তার সাথে অনেকগুলো ছবি তুলেছিলাম সেদিন। একবারের জন্যও বিরক্তবোধ করেননি কান্তে, উল্টো আমাদের সাথে বন্ধুর মতই মিশেছিলেন। নিজেকে কখনোই অন্যদের চেয়ে উঁচুমাপের কেউ হিসেবে দাবি করেনি সে। আমরা লিভারপুল, আর্সেনাল সমর্থক হলেও কান্তের অনেক বড় ভক্ত। সে আমাদের মত মুসলিমদের জন্য বিশাল এক অনুপ্রেরণা।'