ফার্গুসন-ওয়েঙ্গার আমলের ইউনাইটেড-আর্সেনাল দ্বৈরথ
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, দুর্দান্ত সব গোল, রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা- একটা সময় আর্সেনাল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যাচে অভাব হত না এসব কিছুরই। এখন স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন নেই, নেই আর্সেন ওয়েঙ্গারও। এই দুই ক্লাব এখন চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা করে নিতেও হিমশিম খায় প্রতিনিয়ত। অথচ প্রিমিয়ার লিগ শুরুর দুই দশকে এই দুইদলের আধিপত্যই ছিল সবচেয়ে বেশি। দুই কোচ বিদায় নেওয়ার পর কিছুটা হলেও জৌলুস হারিয়েছে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ দুই দলের দ্বৈরথ। প্রিমিয়ার লিগে একে অপরের বিপক্ষে দুর্দান্ত সব ম্যাচ উপহার দিয়েছে এই দুই দল। আর্সেনাল-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আরও একটি ম্যাচের আগে প্রিমিয়ার লিগে দুই দলের ৫ টি লড়াইয়ের স্মৃতি রোমন্থন হোক আরেকবার।
উইলটোর্ডের 'সেঞ্চুরি' এবং ওল্ড ট্রাফোর্ডে আর্সেনালের বাজিমাত (৮ মে, ২০০২)
হার এড়ালেই নিশ্চিত হবে চার বছর পর প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা। ম্যাচের দিন তিনেক আগেই এফএ কাপ জেতা আর্সেনাল ওল্ড ট্রাফোর্ডে গিয়েছিল এই সমীকরণ নিয়ে। কিন্তু কাজটা সহজ ছিল না মোটেও। ইনজুরির কারণে দলের মূল দুই ফুটবলার অধিনায়ক টনি অ্যাডামস এবং থিয়েরি অঁরিকে ছাড়াই নামতে হয়েছিল ‘গানার’দের; আরেক ফরোয়ার্ড ডেনিস বার্গক্যাম্প ছিলেন বেঞ্চে। তবে খেলায় তাদের অভাবটা বুঝতে দেননি ফ্রেডি ইউনবার্গরা; আর্সেনালের জয়ে মূল ভূমিকা ছিল তারই।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে প্রিমিয়ার লিগ নিশ্চিত করার পর আর্সেনালের বিজয়োল্লাস
অঁরি-বার্গক্যাম্পদের ছাড়াই ইউনাইটেডকে চেপে ধরা আর্সেনাল লিড নেয় ৫৫ মিনিটে। ইউনাইটেড ডিফেন্ডার মিকেল সিলভেস্ত্রের পা থেকে বল কেড়ে নেন রে পার্লার, পাস বাড়ান ইউনবার্গকে। সুইডিশ ফরোয়ার্ডের ডানপায়ের জোরাল শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক ফাবিয়ান বার্থেজ। কিন্তু ফিরতি শট জালে পাঠাতে ভুল করেননি সিলভান উইলটোর্ড।
আর্সেনালের জার্সিতে ম্যাচের ‘সেঞ্চুরি’ পূরণের দিনটা প্রিমিয়ার লিগ জিতেই স্মরণীয় করে রেখেছিলেন তিনি। সেবার লিগে দুই ম্যাচেই ইউনাইটেডকে হারিয়েছিল আর্সেনাল; বাকি ১৮ মৌসুমে যার পুনরাবৃত্তি হয়েছে মাত্র একবার।
ব্যাটল অফ ওল্ড ট্রাফোর্ড: 'অভিনেতা' নিস্টলরয় এবং কিওনের 'উল্লাস' (২১ সেপ্টেম্বর, ২০০৩)
সাম্প্রতিক সময়ে আর্সেনাল-ইউনাইটেড দ্বৈরথ নিয়ে দু’দলের সমর্থক বাদে আগ্রহে ভাটা পড়েছে বাকিদের। কিন্তু গত দশকে ব্যাপারটি ছিল একেবারেই ভিন্ন। ১৯৯২ সালে প্রিমিয়ার লিগ নামকরণের পরের প্রথম এক যুগে ইউনাইটেড (৮) এবং আর্সেনাল (৩) ছাড়া লিগ ঘরে তুলতে পেরেছিল কেবল ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স। আর্সেনাল-ইউনাইটেড ম্যাচকে তখন প্রিমিয়ার লিগের ‘এল ক্লাসিকো’ বললেও হয়তো ভুল হত না খুব একটা।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে ২১ সেপ্টেম্বর, ২০০৩-এর ম্যাচটিই প্রমাণ করে; একে অপরের প্রতি ঠিক কতটা আগ্রাসী ছিলেন দু’দলের ফুটবলাররা। ওল্ড ট্রাফোর্ডে সেদিন ফাউল হয়েছিল মোট ৩১টি। দু’বার হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছিলেন আর্সেনাল অধিনায়ক প্যাট্রিক ভিয়েরা। অভিনয় করে ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডারকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখানোর কারণে রুড ফন নিস্টলরয়কে দায়ী করেছিলেন আর্সেনালের ফুটবলাররা। কিন্তু এতকিছুর পরও ম্যাচের আসল নাটক বাকি ছিল তখনও, সেখানেও কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিল নিস্টলরয়ই।
পেনাল্টি মিসের পর ফন নিস্টলরয়ের সামনে কিওনের উল্লাস
ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে ইউনাইটেড স্ট্রাইকার ডিয়েগো ফোরলানকে ডিবক্সে ফেলে দেন ডিফেন্ডার মার্টিন কিওন, পেনাল্টি পায় স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের দল। কিন্তু ১২ গজ থেকে গোল করতে আর্সেনাল গোলরক্ষক জেনস লেম্যানকে পরাস্ত করলেও নিস্টলরয়ের শট প্রতিহত হয় বারপোস্টে। পেনাল্টি মিসের পরই শেষ বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। মুহূর্তেই নিস্টলরয়কে ঘিরে উদযাপন করতে থাকেন কিওনসহ আর্সেনালের বাকিরা। হাতাহাতিও হয় প্রচুর, দু’দলের ফুটবলারদের আলাদা করে মাঠে চলে আসেন বদলি খেলোয়াড় সহ কোচিং স্টাফরাও।
তবে ম্যাচ শেষে বিরূপ ব্যবহারের চড়ামূল্যই দিতে হয়েছিল কিওনদের। চার ম্যাচ নিষিদ্ধ হন রাইটব্যাক লরেন, জরিমানা করা হয় ৪৫ হাজার ইউরো। শেষ বাঁশির পর নিস্টলরয়কে প্রথম ধাক্কা দেওয়া কিওন নিষিদ্ধ হন তিন ম্যাচের জন্য, তাকেও জরিমানা গুণতে হয় ৩৫ হাজার ইউরো। অধিনায়ক ভিয়েরা এবং মিডফিল্ডার পার্লারকে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ এবং যথাক্রমে ২৫ হাজার এবং ১৫ হাজার ইউরো জরিমানা করা হয়। ক্লাব হিসেবে নিজেদের ফুটবলারদের আচরণবিধি লঙ্ঘনে আর্সেনালকে জরিমানা করা হয় ২ লাখ ইউরো। ইউনাইটেডের কাউকে নিষিদ্ধ না করলেও রায়ান গিগস এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে জরিমানা করা হয় যথাক্রমে ৮ এবং ১০ হাজার ইউরো।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল; যাকে নিয়ে এত ঘটনা; সেই নিস্টলরয়কে কোনও ধরণের শাস্তিই দেয়নি ইংলিশ এফএ। এখন পর্যন্ত আর্সেনাল সমর্থকেরা মানেন; অভিনয় করেই ইচ্ছাকৃতভাবে ভিয়েরাকে ঐ ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন নিস্টলরয়। রেষারেষি এবং যুদ্ধংদেহী মনোভাবের সেই ম্যাচ ‘ব্যাটল অফ ওল্ড ট্রাফোর্ড’ নামে পরিচিত হয় এরপর থেকে। ঐ মৌসুমেই অপরাজিত থেকে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা নিশ্চিত করে আর্সেনাল, বনে যায় ‘দ্য ইনভিন্সিবলস’।
রয় কিন বনাম প্যাট্রিক ভিয়েরা: 'বেস্ট অফ এনিমিস' (১ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫)
ক্যারিয়ারে শিরোপা জিতেছেন অনেক, ছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অধিনায়কও। তার সময়ের সেরা মিডফিল্ডারদের একজন হলেও রয় কিনের কথা উঠলে কেতাবী পরিসংখ্যান বা বল পায়ে তার দক্ষতার চেয়ে হয়তো তার চড়া মেজাজের কথাই উঠে আসে প্রতিবার। মাঠে বা মাঠের বাইরে মেজাজ হারানোর একাধিক নিদর্শন আছে কিনের। কিন্তু খুব সম্ভবত কিনের বদমেজাজের সবচেয়ে বিখ্যাত উদাহরণ ফুটবল দেখেছিল হাইবুরির টানেলে, ২০০৫ সালে, আর্সেনালের বিপক্ষে।
‘গানার’ অধিনায়ক ভিয়েরার সাথে টানেলে কিনের হাতাহাতির সেই ভিডিও এখনও প্রতিদিন ভিউ বাড়ায় ইউটিউবের। নিজের আত্মজীবনী ‘দ্য সেকেন্ড হাফ’-এ অবশ্য ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন কিন নিজেই, “টানেল দিয়ে নামার সময় আমি দেখলাম গ্যারিকে (নেভিল) আর্সেনালের ভিয়েরা, কিওনরা ভর্ৎসনা করছিল। এটা দেখেই মেজাজ হারাই আমি। মাঠে যাই হোক, টানেলে ম্যাচের আগে এসবের কোনও মানে নেই। গ্যারির প্রতি ওরকম আচরণের প্রতিবাদ করতেই গিয়েছিলাম। কিন্তু ভিয়েরাও তেড়ে আসে আমার দিকে। বাদ বাকিটা সবাই দেখেছে। আমার মনে হয়, সেদিন রেফারি আমাদের আলাদা করে না দিলে ভিয়েরা হয়তো আমাকে সেখানে মেরেই ফেলত।”
মাঠেই হাতাহাতি যেন রুটিনই বানিয়ে ফেলেছিলেন কিন এবং ভিয়েরা
২০০৫ সালে হাইবুরির ঐ ম্যাচ লোকে কিন-ভিয়েরার হাতাহাতির জন্য মনে রাখলেও ম্যাচে ফুটবলের উত্তাপও কম ছিল না কোনও অংশেই। দুর্দান্ত এক ক্লাসিকে হাইবুরিতে ভিয়েরার গোলেই লিড নিয়েছিল আর্সেনাল। ইউনাইটেডকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন রায়ান গিগস; কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ দিকে দুই গোলের লিড পুনরুদ্ধার করেন বার্গক্যাম্প। হাইবুরিতে উড়তে থাকা আর্সেনালকে মাটিতে নামিয়ে আনেন রোনালদো। তরুণ পর্তুগিজের জোড়া গোলে লিড নেয় ইউনাইটেড।
শেষদিকে সিলভেস্ত্রে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে সমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখতে থাকে আর্সেনাল। কিন্তু ‘গানার’দের কফিনে প্রতি-আক্রমণে শেষ পেরেক ঠুকে দেন জন ও’শে। কিন এবং ভিয়েরার সেই বিখ্যাত হাতাহাতির ঘটনা এবং দুজনের ব্যক্তিগত দ্বৈরথ নিয়ে ২০১৩ সালে আইটিভি একটি ডকুমেন্টারিও বানিয়েছিল ‘কিন এন্ড ভিয়েরা: বেস্ট অফ এনিমিজ’ নামে। খেলোয়াড়ি জীবনের সেই রেষারেষি অবশ্য এখন অনেকটাই কমে এসেছে দুজনের মাঝে। কিন্তু হাইবুরি ২০০৫-এর ঐ ম্যাচ চির অমর হয়ে আছে ইতিহাসে।
গালাসের শাপমোচন (৩ নভেম্বর, ২০০৭)
২০০৬-০৭ মৌসুমের শুরুটা দুর্দান্ত ছিল আর্সেনালের। অপরাজিত থেকেই ইউনাইটেডকে আতিথেয়তা দেয় তারা। সেবার শিরোপার লড়াইও চলছিল এই দুই দলের ভেতর। ম্যাচের শুরুতেই লিড নেয় ইউনাইটেড, প্রতি-আক্রমণে রোনালদোর ক্রসে ওয়েইন রুনির শট ক্লিয়ার করতে যেয়ে বল নিজেদের জালে ঠেলে দেন অধিনায়ক উইলিয়াম গালাস। কিন্তু এমিরেটসে সেদিন শাপমোচনটাও করেছিলেন ফ্রেঞ্চ ডিফেন্ডার।
অন্তিম মুহূর্তে গোলের পর ওয়েঙ্গারের সাথে গালাস
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরে আর্সেনাল, বাকারি সানিয়ার ক্রসে ডিবক্সের ভেতর থেকে গোল করেন সেস্ক ফাব্রেগাস। সমতায় ফেরার পর আত্মবিশ্বাসী আর্সেনালকেই মনে হচ্ছিল ভয়ঙ্কর। কিন্তু ৮২ মিনিটে আবারও এক প্রতি-আক্রমণে প্যাট্রিস এভরার ক্রসে ‘রেড ডেভিল’দের লিড এনে দেন রোনালদো। দলকে বাঁচানোর চিত্রনাট্য প্রস্তুত ছিল গালাসের জন্য, হতাশ করেননি তিনিও।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে লেফটব্যাক গায়েল ক্লিশির ক্রসে থিও ওয়ালকটের শট ইউনাইটেড ডিফেন্ডার নেমানিয়া ভিদিচের গায়ে লেগে আসে গালাসের দিকে। আর্সেনাল অধিনায়কের দুরূহ এক কোণ থেকে করা ডানপায়ের শট ইউনাইটেড গোলরক্ষক এডউইন ফন ডার সার ফিরিয়ে দিলেও বল ততক্ষণে গোললাইন অতিক্রম করে ফেলেছিল। শেষ মুহূর্তে জয় হাতছাড়া হয় স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের দলের। মার্চের দিকে গিয়ে আর্সেনাল হোঁচট খেলে শেষে লিগও জিতে যায় ইউনাইটেড। ইউনাটেডের (৮৭) চেয়ে চার পয়েন্ট পেছনে থেকে থেকে তিন-এ মৌসুম শেষ করে ওয়েঙ্গারের দল। আর্সেনালের গল্পটা এরপর থেকেই উলটোদিকে হাঁটা শুরু করেছিল।
ইউনাইটেডের 'অষ্টক' এবং স্মরণকালের দূর্বলতম আর্সেনাল (২৮ আগস্ট, ২০১১)
২০১১-১২ মৌসুমটা একেবারেই ভাল যায়নি আর্সেনালের। সেবারের দলবদলে একসাথে ক্লাব ছাড়েন ফাব্রেগাস, সামির নাসরি, এমানুয়েল এবুয়ে, ক্লিশিরা। নতুন মৌসুমকে সামনে রেখে স্কোয়াডের শক্তি বাড়াতে ব্যর্থ হন আর্সেন ওয়েঙ্গার। নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ড্রয়ের পর লিভারপুলের কাছে এমিরেটসেই হেরে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইউনাইটেডের মুখোমুখি হয় আর্সেনাল। কিন্তু ওল্ড ট্রাফোর্ডে সেদিন যেভাবে হেরেছিলেন ফন পার্সিরা, সেটা হয়তো ‘গানার’ সমর্থকেরা ভাবেননি দুঃস্বপ্নেও।
২৮ আগস্ট, ২০১১ তে ইউনাইটেডের বিপক্ষে নামানো একাদশকে আর্সেনালের স্মরণকালের সবচেয়ে দূর্বল একাদশগুলোর একটি মনে করেন অনেকেই। ইয়োহান জোরু, ট্রায়োরে, ককোলানদের কেউই নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। দূর্বল আর্সেনালের বিপক্ষে ২১ মিনিটেই দলকে এগিয়ে নেন ড্যানি ওয়েলবেক। তবে সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ‘গানার’রা, কিন্তু ২৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন ফন পার্সি। এরপরই রীতিমত অগ্নিশর্মা রূপ ধারণ করে ইউনাইটেড।
হ্যাটট্রিক উদযাপনে ব্যস্ত ওয়েইন রুনি
পেনাল্টি মিসের মিনিট তিনেক পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন অ্যাশলি ইয়ং। প্রথমার্ধের শেষদিকে ব্যবধান ৩-০ করেন রুনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল করে ম্যাচে ফেরার আশা জাগিয়েছিলেন ওয়ালকট, কিন্তু সে আর্সেনালের সে আশায় গুড়েবালি হয় দ্বিতীয়ার্ধে ইউনাইটেডের ঝড়ে। ৬৪ মিনিটে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করে ফলাফল আর্সেনালের নাগালের বাইরে নিয়ে যান রুনি। ৬৭ মিনিটে আবারও গোল, আর্সেনালের জালে বল পাঠানোর উৎসবে এবার যোগ দেন নানি। ৭০ মিনিটে ব্যবধান ৬-১ করেন জি সুং-পার্ক। ৭৪ মিনিটে অবশেষে ডেভিড ডি গেয়াকে পরাস্ত করেন ফন পার্সি। কিন্তু মিনিট দুয়েক পর অবস্থা আরও বেগতিক হয় আর্সেনালের।
লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রাইটব্যাক কার্ল জেনকিনসন। ৮১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন রুনি। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ইয়ংয়ের গোলে ‘অষ্টক’ পূরণ করে ইউনাইটেড। ঐ ম্যাচের পর ওয়েঙ্গারের পদত্যাগের দাবিতে মিছিলও করেছিল আর্সেনাল সমর্থকেরা। আর্সেনালের বিপক্ষে সামর্থ্যের পূর্ণ জানান দিলেও ঐ মৌসুমে সার্জিও আগুয়েরোর সেই অন্তিম মুহূর্তের গোলে সিটির চেয়ে মাত্র ১ পয়েন্টে পিছিয়ে থেকে মৌসুম শেষ করে ফার্গুসনের দল।