• বাংলাদেশের ভারত সফর
  • " />

     

    স্বপ্নদুয়ারের সামনে ৪ বছর ক্রিকেট থেকে দূরে থাকা শিভমান দুবে

    স্বপ্নদুয়ারের সামনে ৪ বছর ক্রিকেট থেকে দূরে থাকা শিভমান দুবে    

    সপ্তাহ দুয়েক আগে বিজয় হাজারে ট্রফিতে ঝড় তুলেছিলেন শিভাম দুবে। কর্ণাটকের বিপক্ষে মুম্বাইয়ের হয়ে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ছয়ে নেমে করেছিলেন মাত্র ৬৭ বলে ১১৮ রান, মেরেছিলেন ১০টি ছয়। এরপর এই টুর্নামেন্টে আরও তিনটি ম্যাচ খেলেছেন, স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যাওয়ার আগে। ভারতের জাতীয় দলে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন মুম্বাইয়ের এই অলরাউন্ডার। হারদিক পান্ডিয়ার চোট তাকে জায়গা করে দিয়েছে, পান্ডিয়ার মতো ‘বিগ-হিটিং’ আর চতুর বোলিংয়ের সুখ্যাতি আছে তার। 

    অবশ্য দুবের গল্পটা একটু অদ্ভুতই। ছয় বছর বয়সেই বাবার হাত ধরে ক্রিকেটে আসা- এখানে অবশ্য আর দশটি ভারতীয় ক্রিকেটারের সঙ্গে খুব বেশি পার্থক্য নেই। পার্থক্য হলো, ১৪-১৮ বছর বয়সে ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন তিনি। এখন বললে কারণটা ‘ব্যক্তিগত’ বলেন, তবে সেই ‘ব্যক্তিগত কারণ’-এর আড়ালে তিনি ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন ‘অর্থনৈতিক দুর্দশা’র ব্যাপারটিও। তার ক্রিকেটের খরচ জোগাতে বাবার ব্যবসা বন্ধ ছিল, এরপর বন্ধ ছিল দুবের ক্রিকেটও! 

    তবে দমে যাননি তিনি। ফিরে এসে নতুন করে শুরু করেছেন স্বপ্নযাত্রা। ফিটনেসও বিভিন্ন পর্যায়ে ভুগিয়েছে তাকে, চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে বারবার। দুবে সেসব কাটিয়ে উঠেছেন। বড় শটের সামর্থ্য জানান দিয়েছিলেন আগেই, ২০১৮ সালে রঞ্জি ট্রফির এক ম্যাচে এক ওভারে মেরেছিলেন পাঁচটি ছয়। পাঁচ কোটি রুপি (প্রায় ছয় কোটি টাকা) দিয়ে তাকে দলে নিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। তবে ১৪টি ম্যাচের মাঝে সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র ৪ ম্যাচে। 

    সেটাও অবশ্য থামাতে পারেনি তাকে। অধিনায়ক বিরাট কোহলির কথা অনুপ্রাণিত করেছিল তাকে। ক্রিকইনফোকে এমনই জানিয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ও ডানহাতি বোলার, “আমার মনে হয় আমার সামর্থ্য আছে, এ কারণেই টাকাটা পেয়েছিলাম। বিরাট ভাইয়া আমাকে অনেক সহায়তা করেছিল। বলেছিল, 'চিন্তার কারণ নেই, উত্থান-পতন হবেই। আমারও খারাপ একটা আইপিএল গিয়েছিল, তবে কঠোর পরিশ্রম করে আমি আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরেছিলাম। তুমিও সেটাই করবে।'” 

    খুব ‘আউট অফ দ্য বক্স’ ধরনের কথা নয়, তবে দুবেকে প্রেরণা দিয়েছিল সেটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে সুযোগ পেলে পান্ডিয়ার মতো ভূমিকা হবে তার, পেস বোলিংয়ের সঙ্গে হার্ড-হিটার। তাকে নিয়ে প্রত্যাশা ভালই ভারতের প্রধান নির্বাচক এমএসকে প্রসাদের, “আগের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে আমাদের হারদিক ছিল। বিজয় শঙ্করকে দিয়েও চেষ্টা করেছি। আমাদের মনে হয়েছে, শিভামকে আনা উচিৎ, সে এই ভূমিকায় দারুণভাবে মানিয়ে যায়। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ‘এ’ দলের সিরিজে তার পারফরম্যান্স ছিল অনবদ্য। খুব দ্রুত সে আমাদের বাধ্য করেছে।” 

    টি-টোয়েন্টিতে ১৪২.৩৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা দুবের সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ৩৭, ১৯ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১৪টি। তবে ভারত তাকে দেখতে চায় ‘ফিনিশার’ হিসেবে, “বিরাট ভাইয়ার সঙ্গে ফিটনেস নিয়ে কথা বলেছি। সে বলেছে, ফিটনেস নিয়ে সমস্যা নেই আমার। সে আমাকে এমন একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে দেখতে চায়, যে ফিনিশ করে আসতে পারে। আমি যেন প্রতি ম্যাচ শেষ করে আসতে পারি, আমার মাঝে সেই সামর্থ্যটা থাকে।” 

    ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার সময়টা ‘ফিনিশ’ করা দুবের সামনে তাই এখন আরেকটি চ্যালেঞ্জ, ভারতের হয়ে ম্যাচ শেষ করে আসা। পারবেন তিনি?