• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    স্বাগতিকদের অপয়া দিনে জয়ে ফিরল 'ব্যতিক্রম' সিটি

    স্বাগতিকদের অপয়া দিনে জয়ে ফিরল 'ব্যতিক্রম' সিটি    

    প্রিমিয়ার লিগে স্বাগতিকদের জন্য আজকের শনিবার ছিল অপয়া। সিটি-চেলসির ম্যাচের আগে নিজেদের মাঠে জিততে পারেনি কেউই। শেষ পর্যন্ত ম্যানচেস্টার সিটি সেই ধারাটা ভাঙল, পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত চেলসিকে হারিয়েছে ২-১ গোলে।

    সিটির জন্য শিরোপার আশা টিকিয়ে রাখতে এই ম্যাচে জয় ছিল বেশ জরুরি। লিভারপুলের কাছে হেরে বড় ধাক্কা খেয়েছিলেন গার্দিওলা, চেলসির সাথে পয়েন্ট হারালে সেটা আরও বাড়ত। অন্যদিকে ল্যাম্পার্ডের তরুণ চেলসির জন্য নিজেদের শিরোপার দাবি জানানোর বড় সুযোগ ছিল আজ। সেটা আর হয়নি। ২৬ পয়েন্ট নিয়ে চেলসি আছে চারেই। আর ২৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে উঠে এসেছে সিটি। অথচ এই ম্যাচে মাত্র ৪৭ ভাগ বল দখল ছিল সিটির, গার্দিওলার অধীনে যা রেকর্ড।

    আক্রমণ আর পালটা আক্রমণে পুরো সময়েই ম্যাচ ছিল জমজমাট। দুই দলই বলার মতো বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছে। কখনো গোলরক্ষকের জন্য, আবার কখনো নিজেদের ব্যর্থতায় সুযোগ কাজে লাগানো হয়নি। নইলে স্কোরলাইন অনায়াসেই ৪-৩ বা এমন কিছু হতে পারত।

     

    প্রথম গোলের জন্য মাত্র ২১ মিনিট সময় নেয় চেলসি। মাতেও কোভাচিচের দুর্দান্ত এক থ্রু থেকে বল পেয়েছিলেন এনগোলো কান্তে। সিটি ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে আলতো করে বলটা বের করে দেন, জালে জড়িয়ে যাওয়ার জন্য সেটাই ছিল যথেষ্ট।

    গোল শোধ করার জন্য মাত্র ৭ মিনিট সময় নেয় ম্যান সিটি। সেটা এসেছে অবশ্য এক বার নয়, তিন বার সৌভাগ্যের ছোঁয়া পেয়ে। মধ্যমাঠে জর্জিনহোর ভুল থেকে ডেভিড সিলভা বল পেয়েছিলেন, তার বাড়ানো পাস চেলসির দুইজনের পা ঘুরে এসে পড়ে কেভিন ডি ব্রুইনের আছে। বাঁ পায়ে যে শট করেছিলেন সেটা সম্ভবত ঠেকিয়ে দেন চেলসি গোলরক্ষক কেপা। কিন্তু কার্ট জুমার পায়ে লেগে দিকবদল করে জড়িয়ে যায় জালে, কিছুই করার ছিল না কেপার।

    যেমন করার ছিল না ৩৬ মিনিটের পরের গোলেও। এবারেরটা অবশ্য আর সৌভাগ্য দরকার হয়নি, বরং ছিল শিল্পীর তুলির আঁচড়। বক্সের ঠিক বাইরে বল পেয়েছিলেন রিয়াদ মাহরেজ। বাঁ পায়ের দারুণ এক মোচড়ে চেলসির দুজনকে ঝেড়ে ফেলেন গা থেকে। বক্সে কাট করে বাঁ পায়ের নিখুঁত শট কেপাকে ফাঁকি দিয়ে জড়িয়ে যায় জালে। লিগে যে ১১ বার একাদশে ছিলেন মাহরেজ, তার মধ্যে চারটি গোল করেছেন আর ছয়টি করিয়েছেন।

    প্রথমার্ধেই ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত সিটি। শেষের দিকে কেপা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তুলে দিয়েছিলেন আগুয়েরোর পায়ে। ম্যান সিটি স্ট্রাইকার কেপাকে ফাঁকি দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু পোস্টকে ফাঁকি দিতে পারেননি। গোলটাও এ যাত্রা আর পাওয়া হয়নি আগুয়েরোর। চেলসিও অন্তত গোটাতিনেক দারুণ সুযোগ পেয়েছিল প্রথমার্ধে, কাজে লাগাতে পারেনি।

    বিরতির পর দুবার আরও এগিয়ে যেতে পারত সিটি। মাহরেজের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ৫০ মিনিটে চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে। দুই মিনিট পর সুযোগ পায় চেলসিও। কান্তের শট ফার্নান্দিনহো পায়ে না লাগালে হয়তো জালেই জড়িয়ে যেত। ওদিকে ক্যান্সেলোর শটও কীভাবে যেন লাইন থেকে ক্লিয়ার করে দেয় চেলসি।

    ৬৪ মিনিতে চেলসির কানের পাশ দিয়ে গুলি যায় আবার। এবার বক্সের ভেতর ফার্নান্দিনহোর শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন আজপিলিকুয়েতা, ফিরত বলে ডান পায়ে শট নিয়েছিলেন মাহরেজ। এবার কেপা ঠেকিয়ে দিয়েছেন দারুণভাবে।

    এরপর এডারসনকেও দিতে হয়েছে বড় পরীক্ষা। ৮০ মিনিটে বক্সের ঠিক বাইরে থেকে গোলার মতো ভলি করেছিলেন উইলিয়ামসন, এডারসন কর্নারের বিনিময়ে সেটি বাঁচিয়েছেন। এর মধ্যে দুই দলেরই পরিবর্তন এসেছে বেশ কিছু। চেলসির হয়ে বাতশুয়াই আর মাউন্ট নেমেছেন, উঠে গেছেন ট্যামি আব্রাহাম ও জর্জিনহো। অন্যদিকে সিটির তিনটি পরিবর্তন হয়ে গেছে আরও আগে। রদ্রির জায়গায় উঠেছেন গুন্ডোগান, পরে সিলভার জায়গায় ফোডেন। আর কুঁচকিতে চোট নয়ে গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে জায়গা করে দিয়েছেন আগুয়েরো।

    ৮৫ মিনিটে এডারসন বড় একটা ভুল করেই ফেলেছিলেন। ভাগ্য ভালো, তার পাসটা বাতশুয়াইয়ের গায়ে লেগে চলে গেছে বাইরে। যোগ করা সময়ে বক্সের বাইরে থেকে ফ্রিকিক পেয়েছিল চেলসি। মাউন্টের শট সিটিকে স্বস্তি দিয়ে চলে গেছে পোস্ট ঘেঁষে।

    সিটির ম্যাচ হবে, আর তাতে ভিএআরের ভূমিকা থাকবে সেটাও কী হয়? ম্যাচের অন্তিম সময়ে স্টার্লিং বল জড়িয়ে দিয়েছিলেন জালে, কিন্তু সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যবধানে অফসাইড হয়ে বাতিল হয়েছে তার গোল। এর মধ্যেই অবশ্য শেষ হয়ে গেছে সময়। চেলসির আর গোল শোধ করা হয়নি।