• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ৬ গোলের নাটকীয় ম্যাচে এক পয়েন্ট পেল ম্যান ইউনাইটেড

    ৬ গোলের নাটকীয় ম্যাচে এক পয়েন্ট পেল ম্যান ইউনাইটেড    

    ফুলটাইম
    শেফিল্ড ইউনাইটেড ৩-৩ ম্যান ইউনাইটেড


    দুই গোলে এগিয়ে ছিল শেফিল্ড ইউনাইটেড, সেখান থেকে সাত মিনিটের ব্যবধানে তিন গোল দিয়ে আবার এগিয়েও গিয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ৭৯ মিনিটে মার্কস র‍্যাশফোর্ডের গোলটাকে তাই জয়সূচকই মনে হচ্ছিল। কিন্তু নাটক থামেনি সেখানেও। ব্রামাল লেনে যোগ করা সময়ে অলিভার ম্যাকবার্নি গোল দিয়ে নিশ্চিত করেছেন ছয় গোলের ম্যাচে হার-জিত থাকবে না।

    ৫২ মিনিটের ভেতর দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ইউনাইটেডের জন্য আরও একটি হার অপেক্ষা করছিল। কিন্তু সাত মিনিটের ঝড়ে একাডেমির তিন খেলোয়াড় গোল করে হারা ম্যাচে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে থাকেন ইউনাইটেডকে। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানোর ম্যাচে আরও একবার ম্যাচের রঙ পালটেছে যোগ করা সময়ে। ৯১ মিনিটে ম্যাকবার্নির গোল নিয়ে অবশ্য ভিএআরও নাটক জমিয়ে দিয়েছিল। বাম দিক থেকে আসা ক্রস নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে বাহুতে বল লাগার পর গোল করেছিএলন ম্যাকবার্নি। অবশ্য ভিএআর অদ্ভুত সিদ্ধান্ত দেয়নি। গোলের পক্ষেই রায় দিয়েছেন রেফারি।


    পুরো ম্যাচে ইউনাইটেড আসলে খেলেছে সাত মিনিট। প্রথমার্ধে মাত্র একবার গোলে শট করতে পেরেছিল ইউনাইটেড। সোলশারারে অধীনে লিগ ম্যাচে সবচেয়ে কম অন টার্গেটের রেকর্ড ছিল সেটি। প্রথম ৭০ মিনিটে ইউনাইটেডের খেলায় কোনোরকম কোনো ছাপই ছিল না নাটকীয় প্রত্যাবর্তনের।

    শুরুটা করেছিলেন ১৯ বছর বয়সী ব্রান্ডন উইলিয়ামস। ড্যানিয়েল জেমসের ক্রস শেফিল্ড ডিফেন্ডার হেড করে পেছনে পাঠিয়েছিলেন। উইলিয়ামস জায়গা মতোই ছিলেন। বল নামিয়ে ধীর-স্থির ফিনিশে ইউনাইটেডকে লাইফ লাইন পাইয়ে দেন উইলিয়ামস। শেফিল্ডের পা হড়কানোর শুরুও ওখান থেকেই। গোলের পর পরই বদলি হয়ে মাঠে নেমেছিলেন আরেক তরুণ মেসন গ্রিনউইড। চার মিনিট পর র‍্যাশফোর্ড আলতো টাচে বক্সের কোণা থেকে বল তুলে ফেলেছিলেন গোলের সামনে, স্লাইড করে পা লাগিয়ে ইউনাইটেডকে সমতায় ফেরান গ্রিনউইড।

    ম্যাচের ১৩ মিনিট বাকি থাকতে তখন ইউনাইটেডই জয়ের রাস্তায়। অপেক্ষা আর বাড়তে দেননি র‍্যাশফোর্ড। আরও একবার গোলে বড় ভূমিকা ছিল জেমসের। অ্যান্থনি মার্শিয়ালের সঙ্গে মিডফিল্ডে দারুণ বোঝাপড়ার পর বক্সের ভেতর বাম দিক থেকে কাটব্যাক করেছিলেন তিনি। র‍্যাশফোর্ড বক্সের ভেতর থেকে বাকি কাজ সেরছিলেন।  তাতে শেফিল্ড স্তব্ধ হয়ে গেলেও একেবারে শেষদিকে গিয়ে টনক নড়ে তাদের। ড্রয়ের পর তাই দুই কোচের কারই খুব বেশি অসন্তুষ্টি থাকার কথা নয়।  

    শেষ ১১ অ্যাওয়ে ম্যাচে কোনো ক্লিনশিট না রেখে ব্রামা লেনে গিয়েছিলেন ডেভিড ডি দিয়া। শেফিল্ডেও সে ধারাটা যে বাড়বে সেটা শুরুতেই টের পেয়েছিলেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক। ১০ মিনিটে দুর্দান্ত দুইটি ডাবল সেভে লুন্ডস্ট্রাম ও ম্যাকগল্ড্রিককে আটকে দিয়েছিলেন ডি গিয়া। শেফিল্ড যেভাবে শুরু করেছিল তাতে গোল পাওয়া তাদের সময়ের ব্যাপারই ছিল। ১৯ মিনিটে শেফিল্ডকে আটকাতে আরও একটি ডাবল সেভ করতে হত ডি গিয়াকে। প্রথম দফায় আরও একবার লান্ডস্ট্রামের  বক্সের ভেতর থেকে করা শট ঠেকালেও পরের বার ফলো আপে জন ফ্লেক বল ঢুকিয়ে দেন ডি গিয়ার জালে।

    শেফিল্ডের বিপক্ষে তিনজনের ব্যাকলাইন নিয়ে মাঠে নেমেছিল ওলে গানার সোলশারের দল। ফিল জোনস নড়বড়ে ছিলেন, বিরতির পর আর মাঠে নামেননি তিনি। প্রথমার্ধে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে ডি গিয়াকে। ঘরের মাঠে লিভারপুলের বিপক্ষেও দুর্দান্ত খেলেছিল শেফিল্ড ইউনাইটেড। তবে সেবার হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাদের। দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটের ভেতর দারুণ এক কাউন্টার অ্যাটাক থেকে লেস মুসেট দ্বিতীয় গোল করার পর শেফিল্ডের জয় নিয়ে সন্দেহ করার অবকাশ কমই ছিল।

    দারুণ কিছুই করতে হত ইউনাইটেডকে। সেই কাজটা তারা করেছিল ৭ মিনিটের ঝড়ে। তবে শেফিল্ডকে লন্ডভন্ড করে দেওয়ার কাজটা করা হয়নি তাদের।  ১৩ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের নয়ে অবস্থান ইউনাইটেডের। আর শেফিল্ড এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে ছয়ে।