• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    সালাহর জোড়া গোলে পার পেল লিভারপুল

    সালাহর জোড়া গোলে পার পেল লিভারপুল    

    ফুলটাইম 
    লিভারপুল ২-০ ওয়াটফোর্ড 


    এই মৌসুমে লিভারপুলের এমন খেলা আপনি আগেও দেখেছেন। বারবার দেখেছেন। ফলও তাই আপনার জানা। আরও একবার সেই লিভারপুলকেই দেখা গেল অ্যানফিল্ডে। শেষদিকে লিভারপুলকে কিছুটা চাপেও পড়তে হলো পয়েন্ট টেবিলের তলানির দল ওয়াটফোর্ডের কাছে। ম্যাচের ভাগ্য শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত হয়েছে মোহামেদ সালাহর গোলে, আর ওয়াটফোর্ডের মাঠ ছেড়েছে আফসোস নিয়ে। অ্যানফিল্ডে পাওয়া তিনটি সুযোগের একটিতেও গোলে শট করতে পারলে হয়ত দারুণ কিছু পেতে পারত তারা। এর শেষে গিয়ে সালাহ আরও এক গোল করে শেষ কয়েক মিনিট স্বস্তি দিয়েছেন অ্যানফিল্ডকে। 

    ওয়াটফোর্ডের অবশ্য মৌসুমটা এমন যাচ্ছে। গতবার এফএ কাপের ফাইনালে খেলা দলটি এই মৌসুমে এরই ভেতর দুইবার কোচ বদলেছে। নড়বড়ে ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে না জেতার কোনো কারণই ছিল না লিভারপুলের। এর পর জিততে যথেষ্টই বেগ পেতে হয়েছে লিভারপুলকে।



    মানে-সালাহ-ফিরমিনো-শাকিরিদের সবাই শুরু থেকেই ছিলেন মাঠে। এর পরও প্রথম গোলের জন্য লিভারপুলকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৮ মিনিট পর্যন্ত। দুর্দান্ত এক কাউন্টার অ্যাটাক থেকে দারুণ এক টার্ন নিয়ে ওয়াটফোর্ড ডিফেন্ডারকে ছিটকে ফেলেছিলেন সালাহ। এর পর বল নিয়েছিলেন ডান পায়ে। দুর্বল পায়েও নিয়ন্ত্রণ কতোখানি নিখুঁত সেটা চ্যাম্পিয়নস লিগে লিভারপুলের শেষ ম্যাচেও দেখিয়েছিলেন। এবার বেন ফোস্টারের সঙ্গে ওয়ান ওয়ানে চিপ শটে করা গোলে দেখালেন। ওই গোলই ম্যাচের বেশিরভাগ সময় এগিয়ে রেখেছিল লিভারপুলকে।

    অথচ এর মিনিট খানেক আগেই আব্দুলায়ে ডকুরে দারুণ এক সুযোগ মিস করেছিলেন অন্য প্রান্তে। নইলে এগিয়ে যেতে পারত ওয়াটফোর্ডও। পিছিয়ে পড়ার পরও সমতায় ফেরার সুযোগ এসেছিল ওয়াটফোর্ডের কাছে। ৪১ মিনিটেও ব্যর্থ তারা। তখন গোলের দশ গজ দূর থেকেও ইসমাইলা সার বলেই পা ছোঁয়াতে পারেননি।

    দ্বিতীয়ার্ধেও সেভাবে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি লিভারপুল। ওয়াটফোর্ডের ভাগ্যও বদলায়নি, বিরতির পর শুরুতেই জেরার্ড দেলফু আরও একবার লিভারপুলের গোলের সামনে থেকে ফেরেন খালি হাতেই।  এর ভেতর সাদিও মানে অবশ্য একবার এগিয়ে নিয়েছিলেন লিভারপুলকে। অবশ্য ভিএআরে বাতিল হয় সেই গোল। কয়েক সেন্টিমিটারের জন্য অফসাইডে ছিলেন লিভারপুল ফরোয়ার্ড।

    ওয়াটফোর্ড তাই ম্যাচে টিকে ছিল। ৮০ মিনিটে ভার্জিল ভ্যান ডাইক একটি ব্যাক পাস বিপদে ফেলতে পারত লিভারপুলকে। সেখান থেকে পাওয়া কর্নারেও সরাসরি বারপোস্টে বল মেরে অ্যালিসনকে চমকে দিয়েছিলেন দেলফু। 

    ৯০ মিনিটে গিয়ে অস্বস্তি কেটেছে লিভারপুলের। সালাহর আগের গোলের অ্যাসিস্ট ছিল মানের। এবার দ্বিতীয় গোলেও তার অবদান বেশি। মানের ডান প্রান্ত থেকে করা কাটব্যাক গোলের সামনে পেয়েছিলেন ডিভক অরিগি। তার অরিগির শট গোলে ছিল না, কিন্তু সেখানে ছিলেন সালাহ। দারুণ ফ্লিকে পোস্টের কোনা থেকে দ্বিতীয় গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন তিনি। ভিএআর অবশ্য এখানেও বাগড়া বাধিয়েছিল। তবে এবার কয়েক সেন্টিমিটারের জন্য অনসাইডে থেকে বেঁচে গেছেন সালাহ।

    জোড়া গোল করে লিভারপুলের হয়ে সালাহর গোলসংখ্যা দাঁড়াল ৮৪ টি। লুইস সুয়ারেজের ৮২ গোল ছাড়িয়ে গেছেন তিনি আজ। সুয়ারেজের চেয়ে ৭ ম্যাচ কম খেলে। 

    সালাহর মতো লিভারপুলও ছুটছে। ১৭ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ৪৯। নরউইচ সিটির সঙ্গে লেস্টার সিটি ড্র করায় শীর্ষস্থানে লিভারপুলের লিড এখন পুরো দশ পয়েন্টের। ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগেরদিন ২০২৪ সাল লিভারপুলের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেছিলেন ইউর্গেন ক্লপ। ওয়াটফোর্ডকে হারানোর পর এখন তার দল যাবে কাতারে, ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে। সবকিছু মিলিয়ে, লিভারপুলের জন্য সময়টা দারুণই। প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের পরের ম্যাচ বক্সিং ডেতে।