• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    মরিনহোর বাজিতে শেষ মুহূর্তে জিতল স্পার্স; ওল্ড ট্রাফোর্ডে হাসল ফার্গুসনের এভারটন

    মরিনহোর বাজিতে শেষ মুহূর্তে জিতল স্পার্স; ওল্ড ট্রাফোর্ডে হাসল ফার্গুসনের এভারটন    

    ফুল-টাইম

    উলভস ১-২ টটেনহাম হটস্পার

    ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ১-১ এভারটন


    এই সপ্তাহে চেলসি হেরে যাওয়ায় টটেনহাম হটস্পারের সামনে সুযোগ এসেছিল শীর্ষ চারের সাথে ব্যবধান কমিয়ে আনার। উলভসের মাঠে ৯০ মিনিট পর্যন্ত ১-১ সমতায় ছিল স্পার্স। তখনই বাজিটা খেললেন হোসে মরিনহো, নামিয়ে দিলেন ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনকে। তার কর্নারে হেড করেই শেষ মুহূর্তে রুদ্ধশ্বাস জয় নিশ্চিত করেছেন ইয়ান ভার্টনহেন, যোগ করা সময়ে তার গোলে উলভসকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্পার্স। মরিনহোর জন্য আরও সুসংবাদ হয়ে এসেছে তার সাবেক দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এভারটনের কাছে পয়েন্ট হারানো। ‘টফিস’দের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছে ওলে গানার সোলশারের দল।

    উলভসের মাঠে ম্যাচের শুরুতেই লিড নেয় স্পার্স। ৯ মিনিটে এরিক ডায়ারের পাস থেকে উলভসের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিওকে পরাস্ত করেন লুকাস মউরা। শুরু থেকেই আক্রমণ, পাল্টা-আক্রমণে ঠাসা ছিল ম্যাচটি। শুরুতেই পিছিয়ে পড়েও এতটুকু ছাড় দেয়নি উলভস, কিন্তু স্পার্স গোলে পাউলো গাৎজানিগা ছিলেন দুর্দান্ত। অপর প্রান্তে সন-আলিরাও সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু প্যাট্রিসিওকে আর পরাস্ত করতে পারেনি মরিনহোর দল। প্রথমার্ধের শেষদিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতেন ডায়ার, কিন্তু ইংলিশ মিডফিল্ডারের শট প্যাট্রিসিওকে পরাস্ত করলেও প্রতিহত হয় বারপোস্টে।

     

     

    দ্বিতীয়ার্ধে শুরুর দিকে প্রতি-আক্রমণে খেলেছিল স্পার্স, কিন্তু ব্যবধান আর বাড়ানো হয়নি তাদের। লিড বাড়াতে না পারার চড়া মাশুলই দিতে হয়েছে স্পার্সকে, ৬৭ মিনিটে রাউল হিমেনেজের পাসে প্রায় ২০ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটে দলকে সমতায় ফেরান আদামা ট্রায়োরে। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গেছে দু’দল, কিন্তু গোলটাই যেন পাওয়া হচ্ছিল না তাদের। ম্যাচ যখন নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে এগুচ্ছিল, তখনই দুর্দান্ত বাজিতে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। ৮৯ মিনিটে নেমে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ডেনিশ মিডফিল্ডারের মাপা কর্নারে হেড করে জয় নিশ্চিত করেন ভার্টনহেন। ১৭ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৫-এ উঠে এল স্পার্স।   

    ওল্ড ট্রাফোর্ডে প্রথমার্ধে এভারটনকে চেপে ধরেছিল ইউনাইটেডই। জেমস-মার্শিয়াল-রাশফোর্ড; প্রথম ২০ মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ‘রেড ডেভিল’ আক্রমণ ত্রিফলার তিনজনই। কিন্তু মৌসুমের অন্যান্য ম্যাচের  মত আবারও গোলমুখে ফরোয়ার্ডরা ছিলেন ব্যর্থ। ইউনাইটেডের গতির সামনে অসহায় মনে হয়েছে কোলম্যান-ডিনেকে। শুধু উইং দিয়ে নয়, মাঝমাঠেও গোছানো ফুটবল খেলছিল ইউনাইটেড; কিন্তু এভারটন গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে আর পরাস্ত করা হয়নি। ওল্ড ট্রাফোর্ডে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করার চড়া মাশুলই দিতে হয়েছে সোলশারের দলকে।

     

     

    ৩৭ মিনিটে লেইটন বেইন্সের কর্নার থেকে বল ইউনাইটেড ডিফেন্ডার ভিক্টর লিন্ডেলফের গায়ে লেগে জড়ায় ইউনাইটেডের জালে। প্রথমার্ধে গোলের সুযোগ তৈরি, পজেশন ধরা রাখা- কোনোটিই কাজে দেয়নি ইউনাইটেডের। গত সপ্তাহে চেলসিকে হারানোর পর আরও এক বড় দলকে হারানোর স্বপ্নে বিভোর ছিল এভারটন। প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও ‘টফিস’দের গোলে একাধিক সুযোগ পেয়েছিল ইউনাইটেড। কিন্তু গোলটাই আর পাওয়া হচ্ছিল না। ম্যাচে ফিরতে জেসি লিনগার্ডকে উঠিয়ে মেসন গ্রিনউডকে নামিয়ে দেন সোলশার।

    ম্যানেজারের আস্থার প্রতিদান দিতে মাত্র মিনিট দশেক নেন ইউনাইটেড একাডেমির তরুণ ফরোয়ার্ড। ৭৭ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে চমৎকার শটে দলকে সমতায় ফেরান তিনি। ম্যাচে ফেরার পর জয়ের জন্য হন্যে হয়ে ছুটেছে ইউনাইটেড, কিন্তু জয়সূচক গোলটা আর পাওয়া হয়নি তাদের। শেষ পর্যন্ত ওল্ড ট্রাফোর্ডে আবারও পয়েন্ট হারিয়েছে সোলশারের দল।

    চেলসিকে হারানোর পর এবার ওল্ড ট্রাফোর্ডেই ইউনাইটেডকে রুখে দিলেন এভারটন ম্যানেজার ডানকান ফার্গুসন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে প্রায় অর্ধ শতাব্দীর ফার্গুসনের উল্লাসে অভ্যস্ত হওয়া ইউনাইটেড সমর্থকেরা এবার দেখল আরেক ফার্গুসনের উল্লাস, যাতে ম্লান হয়ে গেছে তাদের হাসি। আরও এক হতাশাজনক ড্রয়ে ১৭ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থান নিয়েই আপাতত সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ইউনাইটেডকে।