• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    লাল কার্ড, বর্ণবাদ ছাপিয়ে 'গুরু' মরিনহোকে হারালেন 'শিষ্য' ল্যাম্পার্ড

    লাল কার্ড, বর্ণবাদ ছাপিয়ে 'গুরু' মরিনহোকে হারালেন 'শিষ্য' ল্যাম্পার্ড    

    ফুল-টাইম

    টটেনহাম হটস্পার ০-২ চেলসি


    ম্যাচের আগে পাদপ্রদীপের পুরো আলোটাই ছিল মাঠের বাইরে, ডাগআউটে। যার অধীনে ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা কাটিয়েছিলেন ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড, যাকে নিজের পিতৃতুল্য সম্মান দিয়ে এসেছেন সবসময়; সেই হোসে মরিনহোর টটেনহাম হটস্পারের বিপক্ষে চেলসির ম্যানেজার হয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। লন্ডনের দুই ক্লাবের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয় হল শিষ্যেরই। টটেনহামকে তাদেরই মাঠে ২-০ গোলে হারিয়েছে ল্যাম্পার্ডের চেলসি।

    স্পার্সের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকে এগিয়ে ছিল চেলসিই। শুরুর ৬ মিনিটেই তিনবার পাউলো গাৎজানিগার গোলে তিনবার শট নিয়েছিলেন আব্রাহাম-মাউন্টরা। ম্যাচের শুরুতেই লিডও নিয়েছিল চেলসি। ১১ মিনিটে শর্ট কর্নারে মাতেও কোভাসিচের সাথে ওয়ান টু করে ডিবক্সের বাঁ-প্রান্ত থেকে দুর্দান্ত শটে গোল করেন উইলিয়ান। মরিনহোকে যেন তার টোটকাতেই ঘায়েল করেছেন ল্যাম্পার্ড। প্রতি-আক্রমণে খেলে স্পার্সের রক্ষণভাগকে কাঁপিয়ে দিচ্ছিল চেলসি। প্রথমার্ধে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকলেও একবারও চেলসির জালে শট নিতে পারেননি কেইন-এরিকসেনরা। উল্টো পুরোটা সময় মাঝমাঠ, আক্রমণ- সবখানেই ছড়ি ঘুড়িয়েছে চেলসি। প্রথমার্ধের শুরুর মত শেষটাও দুর্দান্ত ছিল ল্যাম্পার্ডের দলের।

     

     

    প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে উইলিয়ানের লম্বা পাস নিয়ন্ত্রণে আনার সময় ডিবক্সে চেলসি ফুলব্যাক মার্কোস আলোন্সোকে ফাউল করে বসেন গাৎজানিগা। প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি না দিলেও ‘ভিএআর’-এর শরণাপন্ন হয়ে সিদ্ধান্ত বদলান রেফারি। ১২ গজ থেকে নিজের এবং চেলসির দ্বিতীয় গোল করেন উইলিয়ান। প্রথমার্ধ শেষে কেইন-এরিকসেন বা মরিনহো নয়, টটেনহাম স্টেডিয়ামে শোনা যাচ্ছিল চেলসি সমর্থকদের ‘সুপার ফ্র্যাঙ্ক’ চিৎকার।

    প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আবারও গোল করে চেলসি। ৫৫ মিনিটে আলোন্সোর শট গাৎজানিগা ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বল জালে পাঠান ট্যামি আব্রাহাম। কিন্তু অফসাইডে বাতিল হয় গোলটি। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া স্পার্স তখনও আক্রমণে সুবিধা করতে পারছিল না একেবারেই, কিন্তু ৬০ মিনিটে চেলসির বিপক্ষে ফেরার কষ্টসাধ্য কাজটি যেন অসম্ভব হয়ে পড়ে মরিনহোর দলের জন্য। বল দখলের লড়াইয়ে চেলসির ডিফেন্ডার আন্তোনিও রুডিগারের ট্যাকেলে পড়ে যাওয়ার সময় তাকে পা দিয়ে আঘাত করে বসেন হিউঙ-মিন সন। রেফারি ঘটনা এড়িয়ে গেলে ‘ভিএআর’-এর রিপ্লেতে বদলায় সিদ্ধান্ত, লাল কার্ড দেখেন সন। স্বাভাবিকভাবেই রীতিমত ফুঁসে ওঠেন মরিনহো, তাকে সতর্কও করে যান রেফারি।

    দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য স্পার্স সমর্থকদের জন্যও আসে সতর্কবার্তা। পুরো ম্যাচে একাধিকবার রুডিগারের উদ্দেশ্যে বর্ণবাদী মন্তব্য করছিলেন তারা, স্টেডিয়ামের মাইকে তিনবার সতর্ক করে দেওয়া হয় তাদের। শেষ সতর্কীকরণের সময় চেলসি ফুটবলারদের মাঠ ছাড়ার ডাকও দিয়েছিলেন ল্যাম্পার্ড, তবে তাকে বুঝিয়ে ম্যাচ চালিয়ে যান রেফারি অ্যান্থনি টেলর। শেষ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফেরা হয়নি স্পার্সের। ১০জনের বিপক্ষেও গোলের তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি চেলসি। তাতে অবশ্য খুব একটা ভ্রূক্ষেপ হয়তো থাকছে না ল্যাম্পার্ডের। ১৮ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার-এ আছে চেলসি। সমানসংখ্যক ম্যাচে স্পার্সের সংগ্রহ ২৬ পয়েন্ট, টেবিলে তাদের অবস্থান ৭ম।