• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    লেস্টারকে হারিয়ে ডিসেম্বরেই শিরোপাস্বপ্নে বুঁদ লিভারপুল

    লেস্টারকে হারিয়ে ডিসেম্বরেই শিরোপাস্বপ্নে বুঁদ লিভারপুল    

    ফুল-টাইম

    লেস্টার সিটি ০-৪ লিভারপুল


    এক বনাম দুই। লিভারপুল বনাম লেস্টার সিটি। ম্যাচের আগে দু’দলের পয়েন্টের ব্যবধান ১০ হলেও ‘অল রেড’ ম্যানেজার ইয়ুর্গেন ক্লপ এবং গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার বলেছিলেন একই কথা, আত্মতুষ্টি নয়; লেস্টারকে হারিয়েই শিরোপার দিকে এগিয়ে যেতে চান তারা। কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামের ম্যাচটি শিরোপাদৌড়ের ভাগ্যও নির্ধারণ করে দেবে বলে জানিয়েছেন ক্লপ। শেষ পর্যন্ত লিভারপুলের জার্মান ম্যানেজারের কথা সত্যি হলে ৩০ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে এবার। লেস্টারকে তাদেরই মাঠে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে লিভারপুল। ১ ম্যাচ কম খেলেও প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে ‘ফক্স’দের চেয়ে ১৩ পয়েন্টে এগিয়ে এখন ক্লপের দল।

    এই মৌসুমে লিগে একবারও হারেনি লিভারপুল। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে ক্লপের দলের পারফরম্যান্স ঠিক প্রত্যাশার খোরাকটা মেটাতে পারছিল না সমর্থকদের। ‘চ্যাম্পিয়নস ইন্সটিঙ্কট’ দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনছিল বটে, কিন্তু অ্যানফিল্ডের মত ‘অ্যাওয়ে’ ম্যাচে সালাহ-ফিরমিনো-মানেদের দুর্ধর্ষ রূপের দেখা মিলছিল না একেবারেই। কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে যেন সেসব সমালোচনার দাঁতভাঙা জবাবই দিল লিভারপুল। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই লেস্টারের জালে বল পাঠাতে পারত ক্লপের দল। লেস্টার ফুলব্যাক বেন চিলওয়েলকে কাটিয়ে ডিবক্সে ক্রস করেন সালাহ। গোলের মাত্র গজ ছয়েক দূর থেকেও বল জালে পাঠাতে পারেননি মানে। শুরুতেই এমন সুযোগের পর থামেনি লিভারপুল। প্রথম ২০ মিনিটে নিশ্চিত গোলের অন্তত চারটি সুযোগ তৈরি করেও লিড নিতে পারেনি লিভারপুল।

     

     

    তবে প্রথমার্ধের মিনিট দশেক বাকি থাকতে আর ভুল করেননি ফিরমিনো। ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের ক্রসে হেড করে দলকে লিড এনে দেন তিনি। লিভারপুল ফরোয়ার্ডরা যতটা উজ্জ্বল ছিলেন, লেস্টারের ভার্ডি-ম্যাডিসনরা ছিলেন ততটাই নিষ্প্রভ। প্রথমার্ধে মাত্র ৬বার বল পেয়েছিলেন ভার্ডি, লিভারপুলের বক্সে টাচ নিতে পেরেছিলেন মাত্র দু’বার। প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণে সুবিধা করতে পারেনি লেস্টার। সালাহ-ফিরমিনো-মানেদের সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেয়েছেন সোয়ুঞ্চু-ইভান্সরা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে কিছুটা স্বরূপে ফিরেছিলেন ভার্ডিরা, তবে ভার্জিল ভ্যান ডাইক দুর্গ আর জয় করা হয়নি তাদের। দ্বিতীয়ার্ধের অর্ধেকেরও বেশি সময় লিভারপুলকে আটকে রাখলেও শেষ ২০ মিনিটের ঝড়ে রীতিমত লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে লেস্টার।

    ৭১ মিনিটে আর্নল্ডের কর্নার ডিবক্সে সোয়ুঞ্চুর হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি দেন রেফারি। বদলি হিসেবে নামার পর প্রথম টাচেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে জেমস মিলনার। মিনিট চারেক পর লেস্টারের ম্যাচে ফেরার সব আশা ধূলিস্যাৎ করে দেন ফিরমিনো। আবারও সেই আর্নল্ডের মাইনাস থেকেই দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রণে লেস্টারের তিন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে মাপা শটে ব্যবধান ৩-০ করেন ফিরমিনো। পুরো ম্যাচে লিভারপুলের সেরা ফুটবলার ছিলেন আর্নল্ড। আক্রমণ, রক্ষণ- দু’ক্ষেত্রেই ছিলেন সমান দক্ষ। ক্লিনশিট পাওয়ার কক্ষপথে ছিলেন, পেয়েছিলেন দুই অ্যাসিস্টও। বাকি ছিল শুধু গোল করা। ৭৯ মিনিটে করলেন সেটাও।

    দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে মিলনারের পাস থেকে আগুনে শটে লেস্টার গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মেইকেলকে পরাস্ত করেন তিনি। লেস্টারের মাঠে লিভারপুলের সেরা ফুটবলারই ঠুকে দিলেন ‘ফক্স’দের কফিনে শেষ পেরেক। রেফারির বাঁশিতে বড় হার নিশ্চিত হওয়ার পরও লিভারপুলের ফুটবলারদের দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানিয়েছিলেন লেস্টার সমর্থকরা। সাবেক লিভারপুল ম্যানেজার ব্রেন্ডন রজার্স চেষ্টা করেও পারেননি ক্লপের দলকে থামাতে। হয়তো এই ম্যাচ দিয়েই গাণিতিক সম্ভাবনাও শেষ হয়ে গেল লেস্টারের লিগ জেতার। পেপ গার্দিওলা আগেই বলে দিয়েছেন, লিভারপুলকে ধরার স্বপ্ন দেখছে না ম্যানচেস্টার সিটি। সব ঠিক থাকলে হয়তো বিল শ্যাঙ্কলির পর কেনি ডালগ্লিশ, রয় হজসন হয়ে ৩০ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটবে ক্লপের হাত ধরেই।