• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    আবার পয়েন্ট হারাল সিটি, ডর্টমুন্ডে ২৩ মিনিটে হালান্ডের হ্যাটট্রিক

    আবার পয়েন্ট হারাল সিটি, ডর্টমুন্ডে ২৩ মিনিটে হালান্ডের হ্যাটট্রিক    

    আত্মঘাতী গোলে ম্লান গার্দিওলার জন্মদিন উদযাপন

    কোচিং ক্যারিয়ারে এই মৌসুমের মত বাজে শুরু হয়নি ম্যানচেস্টার সিটি ম্যানেজার পেপ গার্দিওলার। মৌসুমের মাঝপথেই শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সাথে ব্যবধানটা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল দুই অঙ্কে। ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে এবার সেই সংখ্যাটা বাড়ল আরেকটু। ফার্নান্দিনহোর অন্তিম মুহূর্তের আত্মঘাতী গোলে ক্রিস্টাল প্যালেসের সাথে ২-২ গোলে ড্র করল গার্দিওলার দল। ম্যানেজারের ৪৯তম জন্মদিনটা জয় দিয়ে উদযাপন করতে পারল না সিটি।

    ম্যাচের আগে দু'দলের মধ্যে পয়েন্টের ব্যবধান ছিল ১৮। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে শুরু থেকে অবশ্য বোঝা যায়নি সেটা। আগুয়েরো-ডি ব্রুইনদের খেলতেই দেননি প্যালেস ডিফেন্ডাররা। আক্রমণে নিষ্প্রভ সিটির বিপক্ষে প্রথমার্ধের শেষদিকে লিড নেয় রয় হজসনের দল। ৩৯ মিনিটে হেডে গোল করেন চেঙ্ক তোসুন। দুয়ো শুনে প্রথমার্ধ শেষ করতে হয় গার্দিওলার দলকে। নিষ্প্রভ এবং হতাশাজনক এক প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে জ্বলে ওঠে সিটি।

    প্যালেসকে আক্রমণের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়ে ম্যাচেও ফেরে তারা। গ্যাব্রিয়েল হেসুসের মাপা ক্রসে গোল করে সিটির জার্সিতে ২৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন সার্জিও আগুয়েরো। ম্যাচের মিনিট আটেক বাকি থাকতে বেনজামিন মেন্ডির ক্রসে হেড করে দলকে লিডও এনে দেন তিনি। কিন্তু আবারও এই মৌসুমে নিজেদের 'অ্যাকিলিস হিল' রক্ষণের কারণে হতাশ হতে হয় সিটিকে।

    যোগ করা সময়ে উইলফ্রেড যাহার ক্রস ক্লিয়ার করতে যেয়ে বল নিজেদের জালে ঠেলে দেন ফার্নান্দিনহো। শেষ পর্যন্ত আর জয়সূচক গোল পাওয়া হয়নি সিটির। আগুয়েরোর ২৫০ গোলের মাইলফলক, সিটির হয়ে লিগে ডেভিড সিলভার ৩০০তম ম্যাচ, বা গার্দিওলার জন্মদিন- আরও এক ড্রয়ে মাটি হল তিন উপলক্ষ্যই। ২৩ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়েই থাকল সিটি। লেস্টার সিটি, বার্নলিকে হারিয়ে দিলেও দুইয়েই থাকবে গার্দিওলার দল; তবে সেটা হবে কেবল পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে থেকে। 

    অভিষেকেই ডর্টমুন্ডের হিরো 'হ্যাটট্রিক হালান্ড'

    রেডবুল সালজবুর্গের হয়ে এই মৌসুমে গেঙ্কের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষেকে হ্যাটট্রিক করেই নজর কেড়েছিলেন নরওয়ে স্ট্রাইকার আর্লিং-ব্রাউট হালান্ড। অস্ট্রিয়ার ক্লাবটির হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ইউরোপে নিজের প্রথম মৌসুমেই তাকে দলে উঠেপড়ে লেগেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদের মত দলগুলো। শেষ পর্যন্ত অবশ্য হালান্ড যোগ দিয়েছেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে। জার্মান ক্লাবটির হয়ে অভিষেকেই হালান্ড জানান দিলেন; কেন তাকে নিয়ে ইউরোপে এত উন্মাদনা। অগসবুর্গের বিপক্ষে তার হ্যাটট্রিকেই ৫-৩ গোলের জয় পেয়েছে ডর্টমুন্ড।

     

     

    ৫৬ মিনিটে রাইটব্যাক লুকাস পিঝচেকের বদলি হিসেবে নেমেছিলেন হালান্ড। ৩-১ গোলে পিছিয়ে ছিল ডর্টমুন্ড। হালান্ড সময় নিলেন মাত্র ৩ মিনিট, আক্ষরিক অর্থেই 'ব্ল্যাক অ্যান্ড ইয়েলো'দের হয়ে নিজের প্রথম টাচে গোল করলেন। জেডন সানচোর থ্রু পাস থেকে বাঁ-পায়ের জোরাল শটে অভিষেকেই গোল পেয়ে যান হালান্ড।

    কিছুক্ষণ বাদে দলকে সমতায় ফেরান সানচো। ম্যাচের বাকি গল্পটা হালান্ডেরই। ৭০ মিনিটে দলকে লিড এনে দেন নরওয়ে স্ট্রাইকারই। থরগান হ্যাজার্ডের পাস থেকে গোলের একেবারে সামনে বল পেয়ে ভুল করেননি হালান্ড। কিন্তু অফসাইডের বাঁশি দিয়ে গোল বাতিল করেন লাইন্সম্যান। কিন্তু 'ভিএআর'-এ বদলায় সিদ্ধান্ত। অগসবুর্গের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন হালান্ডই। ৯০ মিনিটে মার্কো রয়েসের থ্রু পাসে অগসবুর্গ গোলরক্ষক থমাস কুবেককে একা পেয়ে যান হালান্ড।

    আক্ষরিক অর্থেই ডর্টমুন্ডের হয়ে প্রথম ম্যাচেই ত্রাণকর্তা হয়ে আসলেন ১৯ বছর বয়সী হালান্ড। মাত্র ৭ম ফুটবলার হিসেবে বুন্দেসলিগা অভিষেকে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। ডর্টমুন্ডের হয়ে হালান্ডের আগে অভিষেকে হ্যাটট্রিক করেছিলেন পিয়ের-এমেরিক অবামেয়াং (২০১৩)। মৌসুমের মাঝপথে সব মিলিয়ে হালান্ডের হ্যাটট্রিক সংখ্যা এখন ৬টি। মাত্র ২৩ ম্যাচে হালান্ডের গোলসংখ্যা এখন ৩১। জার্মানিতে আগমনী বার্তাটা রাজার মতই দিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচেই যেন এলেন, দেখলেন, এবং জয় করলেন।

    এমিরেটসে আবারও লিড হারিয়ে ড্র করল আর্সেনাল, আর্টেটার কাঠগড়ায় 'ভিএআর'

    নিজের 'হোম' অভিষেকে চেলসির বিপক্ষে ৮০ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থেকেও হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল আর্সেনালের নতুন ম্যানেজার মিকেল আর্টেটাকে। ঐ ম্যাচে জর্জিনহোকে লাল কার্ড না দেখানোয় রেফারি এবং 'ভিএআর'-এর ওপর চটেছিলেন তিনি। শেফিল্ড ইউনাইটেডের বিপক্ষে সে অসন্তোষ হয়তো বেড়ে গেল কয়েকগুণ, দ্বিতীয়ার্ধে আবারও বিতর্কিত পেনাল্টি সিদ্ধান্তের ভুক্তভোগী হতে হয়েছে তাদের। 'ব্লেইডস'দের বিপক্ষে লিড নিয়েও শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলের ড্রয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে পিয়ের-এমেরিক অবামেয়াংবিহীন আর্সেনালকে। 

     

     

    সিটির মাঠে প্যালেসের মত শেফিল্ডও প্রথমার্ধে খেলতে দেয়নি আর্সেনালকে। অবামেয়াংকে ছাড়া বেশ ছন্নছাড়াই মনে হচ্ছিল 'গানার'দের ফরোয়ার্ড লাইনকে। গ্যাবন স্ট্রাইকারের বদলে তরুণ ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলিকে নামিয়েছিলেন আর্টেটা। প্রথমার্ধের শেষদিকে অবামেয়াংয়ের কাজটাই করেন তরুণ ব্রাজিলিয়ান। বুকায়ো সাকার ক্রসে ভলি করে দলকে লিড এনে দেন তিনি। ম্যাড়ম্যাড়ে এক প্রথমার্ধের শেষটা লিড নিয়ে করায় আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গেই ছিল আর্সেনাল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে লিড বাড়ানোর সুযোগও পেতে পারত আর্সেনাল।

    ফরোয়ার্ড নিকোলাস পেপেকে ডিবক্সে ফেলে দেন শেফিল্ড ডিফেন্ডার জ্যাক ও'কনোল। কিন্তু ফাউলের বাঁশি দেননি রেফারি, শরণাপন্ন হননি 'ভিএআর'-এরও। বিতর্কিত সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট আর্টেটার হতাশা বাড়ে ৮৩ মিনিটে। আর্সেনালের রক্ষণের ভুলে ক্যালাম রবিনসনের ক্রস থেকে গোলরক্ষক বার্নড লেনোকে পরাস্ত করেন জন ফ্লেক। ২৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ১০-এ থাকল আর্টেটার দল। স্প্যানিশ ম্যানেজারের অধীনে লিগে খেলা ৪ ম্যাচের মাত্র ১টিতে জিতেছে তারা।