অ্যানফিল্ডে উৎসবের উৎসাহ, ল্যাম্পার্ডের চেলসির তাতে বাগড়া বাধানোর 'ধান্ধা'
লিভারপুলের শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে আরও আগেই। কিন্তু শিরোপা ধরাটা বাকি। মৌসুমের শেষ হোম ম্যাচে সেই আনুষ্ঠানিকতাই সারবে লিভারপুল। শিরোপা অ্যানফিল্ডে হাজির, তাতে খোদাই করে লিভারপুলের নামও বসেছে। প্রিমিয়ার লিগ ট্রফিতে লিভারপুলের নাম বসেছে প্রথমবারের মতো। লিভারপুলের ৩০ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে। ফাঁকা মাঠে শিরোপা উদযাপন করতে হবে লিভারপুলকে। যে কীর্তি লিভারপুল গড়েছে তার সঙ্গে উদযাপন বড্ড বেমেনানা। সেটা লিভারপুলও জানে। স্রেফ দুর্ভাগ্য ছাড়া কি! ক্লপও তাই মেনে নিয়েছেন, 'আসল' উদযাপনটা জমিয়ে রাখতে বলছেন তিনি।
শিরোপা উদযাপনে বিন্দুমাত্র হতাশা চান না লিভারপুল কোচ। আর্সেনালের কাছে হারের পর এবার চেলসি তার প্রতিপক্ষ। লিভারপুলের এই মৌসুমে পাওয়ার কিছু আর নেই। তবে চেলসির সবটুকুই হারানোর আছে। শীর্ষ চারের জন্য লড়ছে ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দল। ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে চেলসি আছে পয়েন্ট টেবিলে লিভারপুল আর ম্যানচেস্টার সিটির পরেই। পেছনে ছুটছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আর লেস্টার সিটি। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে এদিক-ওদিক হলেই পরের মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ার উপক্রমও তৈরি হতে পারে।
ল্যাম্পার্ডের প্রথম মৌসুমটা এখন পর্যন্ত সফলই বলা যায়। দলবদলে নিষেধাজ্ঞা ছিল, ল্যাম্পার্ড নিজেও কোচ হিসেবে আনাড়ি। চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা করে নেওয়া আর সঙ্গে এফএ কাপ জিততে পারলে ল্যাম্পার্ডের প্রথম মৌসুম সফলই বলতে হবে। আর্সেনালের বিপক্ষে এফএ কাপের ফাইনালের আগেই লিগের দুই ম্যাচ। লিভারপুলের পর চেলসির প্রতিপক্ষ উলভস। তারা ইউরোপা লিগে জায়গা নিশ্চিত করতে লড়ছে। ল্যাম্পার্ডের তাই হারানোর আছে সবকিছুই।
লিভারপুলের সঙ্গে ল্যাম্পার্ডের দলের পয়েন্ট পার্থক্য ৩০। ল্যাম্পার্ড নিজেও জানেন এবার ছিল তার পরীক্ষার মৌসুম। আপাতত লিভারপুল বা ম্যান সিটিকে খুব দ্রুত ধরে ফেলার আশাও তিনি দেখেননা। লিভারপুলের সঙ্গে তার দলের দূরত্বকে তিনি বলেছেন, "যোজন যোজন দূরত্ব।"
"মৌসুমের শুরুতে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল এটাই, চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা করে নেওয়া। গত ১০-১৫ বছরে চেলসি অনেককিছুই অর্জন করেছে। তবে এবার সম্ভবত আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মৌসুম ছিল।"- ল্যাম্পার্ডের কথাতেই আছে সবকিছুর ব্যাখ্যা।
চেলসি যাবে নতুন এক অ্যানফিল্ডে। উৎসবের উৎসাহে যেখানে রঙ লেগেছে। স্টেজ বানানোর কাজ প্রায় শেষ। বিশেষ অনুমতি মিলেছে খেলোয়াড়দের পরিবারের। মাঠে থাকতে পারবেন তারাও। সবমিলিয়ে শ'চারেক মানুষ নিয়ে শিরো উদযাপন করবে লিভারপুল। এসবই এরই মধ্যে নিয়মিত ঘটনা হয়ে গেছে ইউরোপে।
ক্লপ সমর্থকদের অনুরোধ করেছেন অ্যানফিল্ডে ভিড় না জমাতে। নির্দেশনাটা অবস্য মার্সিসাইড পুলিশের। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চেলসি ম্যানচেস্টার সিটিকে হারানোর পরই শিরোপা নিশ্চিত হয়েছিল লিভারপুলের। তখন অ্যানফিল্ডের ভিড় আর ঠেকানো যায়নি। লোকে লোকারন্য উৎসবে আতশ বাজি, স্লোগান, বিয়ার সবই দেখেছে অ্যানফিল্ডের আশ পাশের অলিগলি। ক্লপ সমর্থকদের কথা দিয়েছেন, 'সঠিক সময়ে' উদযাপন হবে সবাইকে নিয়েই।
"এই অবস্থা তো আগে কেউ দেখেনি। আমাদের সবার জন্যই নতুন। এই শিরোপা সবার জন্য। আমি কথা দিচ্ছি, যখনই সুযোগ মিলবে আমরা ঘটা করে উদযাপন করব। আমি জানি সমর্থকদের জন্য এখন ঘরে বসে থাকাটা কঠিন। কিন্তু মনে রাখা দরকার সময়মতো আবার আমরা এক হব।"
ক্লপ আরও একটি ব্যাপার নিশ্চিত করেছেন। চেলসির ম্যাচে ঢিল দিতে চান না তিনি। বলেছেন, "আমি শিরোপা উদযাপন খাটো করার পক্ষে নই।"
চেলসির জন্য সেটা কিছুটা অশনী সংকেতই!