পুলিশের প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে ক্লান্ত টটেনহামের রোজ
ইংল্যান্ডের হয়ে ফুটবল খেলেন, টটেনহাম হটস্পারের হয়ে খেলছেন প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। এরপরও কেবল কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার দোষে বারবার ইংল্যান্ডের রাস্তা-ঘাটে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাসের সম্মুখীন হতে হয় তাক। এক পডকাস্টে রোজ জানিয়েছেন কীভাবে প্রাত্যহিক জীবনে বর্ণবাদী আচরণ সহ্য করে যেতে হয় তাকে। ইংলিশ লেফটব্যাক একরকম আশাও ছেড়ে দিয়েছে, মানুষের চিন্তাধারা না বদলালে বর্ণবাদও থামানো যাবে না তার মতে।
রোজ বলছেন, ১৫ বছর বয়স থেকেই বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়ে আসছেন তিনি। এখন তার বয়স ৩০। সবশেষ গত সপ্তাহেও মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে, "আমি মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। গাড়ি পার্ক করতে করতে দেখি পুলিশ হাজির। তারা সঙ্গে রায়োট ভ্যানও এনেছে। পুলিশের গাড়িই ছিল তিনটি। সবাই মিলে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দিল। তাদের কাছে নাকি খবর আছে যে এই রাস্তায় নিয়ম মেনে গাড়ি চালানো হচ্ছে না।"
"তো আমি বললাম, 'ঠিকাছে। কিন্তু সেই গাড়িটা যে আমারই গাড়ি তা আপনারা জানলেন কী করে? আমি আমার আইডি বের করতে করতে তারা আমার শরীরে অ্যালকোহল পরীক্ষা করা শুরু করে দিল। এখন বলুন আমি কী করব? এটা এখন আমার জন্য স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৫ বছর হয়ে গেছে এখনও কিছু বদলায়নি।"
রোজ বলছেন রাস্তাঘাটে নিয়মিতই পুলিশ তার গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাস করে, "গাড়ি থামালে প্রতিবার ওই একই প্রশ্নঃ 'এই গাড়ি কি আমার?, আমি কিনেছি? আমি কি প্রমাণ করতে পারবো এই গাড়ি আমি কিনেছি? আমি এখানে কী করছি?'
ব্যক্তিগত গাড়ি শুধু নয়, গণপরিবহনেও ঝামেলা পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন রোজ, "শেষ যেবার ট্রেনে উঠলাম... উঠে বসেছি, পুলিশ অফিসার এসে আমাকে প্রশ্ন করল, 'এটা ফার্স্ট ক্লাস, সেটা জানা আছে আপনার?' আমি বললাম, 'হ্যাঁ, তো?' এরপর পুলিশ আমার টিকেট দেখতে চাইলো। আমিও দেখালাম। বিশ্বাস করুন, আমি একটি শব্দও মিথ্যা বলছি না। এরপর দুইজন শ্বেতাঙ্গ উঠলেন ওই কম্পার্টমেন্টে। আমি পুলিশকে জিজ্ঞাসা করলাম, 'উনাদের টিকেট চেক করা হবে না?' জবাব পেলাম, 'না, ওদেরটা চেক করার প্রয়োজন নেই।' "
রাতারাতি বর্ণবাদ সমস্যা থেকে উত্তরণের পথও দেখেন না রোজ। তিনি একরকম হালই ছেড়ে দিয়েছেন, "আমার মনে হয় না ব্যাপারগুলো পরিবর্তন হবে। বর্ণবাদ নিয়ে মানুষের চিন্তা যতদিন এমন থাকবে ততোদিন আসলে কিছুই বদলাবে না।"