• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ওল্ড ট্রাফোর্ডে এসে ইউনাইটেডকে ছয় গুণতে শিখিয়ে দিয়ে গেলেন মরিনহো

    ওল্ড ট্রাফোর্ডে এসে ইউনাইটেডকে ছয় গুণতে শিখিয়ে দিয়ে গেলেন মরিনহো    

    ম্যান ইউনাইটেড ১: টটেনহাম ৬


    হোসে মরিনহোর বাঁকা একটা হাসি আছে। নিষ্ঠুর, কটাক্ষময়। ওল্ড ট্রাফোর্ডকে ভেঙেচুরে গুড়িয়ে দেওয়ার পর সেই হাসিটা আরও চওড়া হবে আজ। যেখান থেকে চলে যেতে হয়েছিল বছর দুয়েক আগে, সেই ওল্ড ট্রাফোর্ডকেই আবার জয় করলেন রাজার মতো। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে টটেনহামের ৬-১ গোলের জয়টা রেকর্ডবুকে অনেক কিছু নতুন করে লেখার মতোই শুধু নয়, ট্যাকটিক্যালি ও টেকনিক্যালি দুই দলের পার্থক্য কতটা, সেটাও দেখিয়ে দেওয়ার মতো।

    শুরুতে একটু রেকর্ডের কথা বলে নেওয়া যাক। ওল্ড ট্রাফোর্ডে এর আগে ছয় গোল খাওয়ার রেকর্ড আছে, ২০১১ সালে ম্যান ইউনাইটেডকে সেই লজ্জা দিয়ে গিয়েছিল ম্যান সিটি। সব মিলে প্রিমিয়ার লিগে তিন বার ছয় গোল খাওয়ার অভিজ্ঞতা হলো ইউনাইটেডের, আর প্রথমবারের মতো হলো প্রথমার্ধে চার গোল খাওয়ার দুঃস্বপ্ন।

    অথচ ম্যাচের শুরুতে পাওয়া যায়নি এমন আভাস। ম্যাচ শুরুর সাথে সাথেই পেনাল্টি পেয়ে যায় ম্যান ইউনাইটেড। বক্সের ভেতর অ্যান্থনি মার্শিয়ালকে ফাউল করা হয়, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ব্রুনো ফার্নান্দেজ পেনাল্টি মিস করেন না, আজও করেননি। তবে দর্শকবিহীন ওল্ড ট্রাফোর্ডে সেই সুখস্মৃতি কয়েক মিনিটের বেশি টেকেনি ইউনাইটেডের। আর সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে কোনো ম্যানেজারের প্রিমিয়ার লিগে এটাই সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড, যেটা হয়েছে মরিনহোর। অবশ্য ব্রেন্ডন রজার্সও লিভারপুলের হয়ে পুরনো ক্লাব সোয়ানসিকে ৫-০ গোলে হারিয়েছিলেন। তবে মরিনহোর কীর্তিটা আরও বড়, সেটা ম্যান ইউনাইটেড বলেই।

    সানচোকে নিয়ে কত কাহিনী, কিন্তু ম্যান ইউনাইটেডের আসল সমস্যা যে রক্ষণ সেটা পরের কয়েক মিনিটেই বুঝিয়ে দিয়েছে টটেনহাম। প্রথমে ম্যাগিরে আর বেইলির অবিশ্বাস্য এবং জঘন্য রকম বাজে ক্লিয়ারেন্সে বক্সের ভেতর কীভাবে বল পেয়ে যান টাঙ্গুই এনদেম্বেলে, বল জালে জড়িয়ে দিয়ে সমতা ফেরান। মিনিট খানেক পর কুইক ফ্রি কিক থেকে হ্যারি কেনের পাস খুঁজে নেয় হিউং মিন সনকে। তখনও চেয়ে চেয়ে দেখেছেন ম্যাগিরেরা, কিন্তু গোল ঠেকাতে পারেননি।

    তবে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট সম্ভবত আসে ২৮ মিনিটে। বক্সের ভেতর এরিক লামেলাকে কনুই দিয়ে গুতো মারার জন্য লাল কার্ড খান মার্শিয়াল। যদিও রিপ্লেতে মনে হয়েছে সিদ্ধান্তটা বেশি কর্কশ হয়ে গেছে, সমান দায় ছিল লামেলারও। ১০ জনের ইউনাইটেডকে পরের কয়েক মিনিটেই ক্ষতিটা বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন কেন আর সন। দুজন গোল করে প্রথমার্ধ শেষেই করে ফেলেছে ৪-১ স্কোরলাইন।

    বিরতির পরের গল্পটা খুব বেশি আর বলার মতো কিছু নয়। ইউনাইটেডকে ডিফেন্স করতেই বেশি সময় কাটাতে হয়েছে, লুক শর সৌভাগ্য লাল কার্ড থেকে বেঁচে গেছেন। গোল আরও হয়েছে, ইউনাইটেডের রক্ষণের ভুলে সার্জ অরিয়ের গোল করে ৫-১ করেছেন স্কোরলাইন, আর পগবার ফাউল থেকে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোলটা করে কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছেন কেন। ইউনাইটেডের সৌভাগ্য, টটেনহাম এরপর আর কোনো গোল দেয়নি। তবে এই ম্যাচের পর সোলশারের ব্যাখ্যা করার আছে অনেক কিছুই, আর মরিনহো জানান দিয়েছেন টটেনহামকে এবার গোনায় রাখতেই হবে।