• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    লিভারপুলকে ৭ গোল দিয়ে ৫৭ বছর পুরোনো স্মৃতি মনে করাল ভিলা

    লিভারপুলকে ৭ গোল দিয়ে ৫৭ বছর পুরোনো স্মৃতি মনে করাল ভিলা    

    ফুল টাইম

    অ্যাস্টন ভিলা ৭ -২ লিভারপুল


    টটেনহামের বিপক্ষে ম্যান ইউনাইটেডের ‘ঐতিহাসিক’ হারকে এখন সুদূর অতীত মনে হচ্ছে। অ্যাস্টন ভিলা-লিভারপুল ম্যাচ যে ওল্ড ট্রাফোর্ডের সেই ইতিহাস গড়া ম্যাচকেও ছাড়িয়ে গেছে। ভিলা পার্কে স্বাগতিকদের কাছে গুনে গুনে ৭ গোল হজম করেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। না, ভুল পড়েননি। প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা হেরেছে ৭ গোল হজম করে। 

    প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে লিভারপুল পেয়েছে সবচেয়ে বড় হার। তাও গতবার শেষ ম্যাচে রেলিগেশন এড়ানো ভিলার বিপক্ষে। ভিলা লিভারপুলকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে ৫৭ বছর আগে। সবশেষ সেবার এক ম্যাচে ৭ গোল হজম করেছিল অলরেডরা। ১৯৬৩ সালে টটেনহামের বিপক্ষে সেই ম্যাচে একই ব্যবধানে হেরে গিয়েছিল তারা। লিভারপুলকে সেই ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়েই ভিলা পার্কে উৎসব করলেন ওলি ওয়াটকিন্স-জ্যাক গ্রিলিশরা।


    ম্যাচ শুরুর আগে এমন সমাপ্তি কল্পনা করা অসম্ভব ছিল। ভিলা পার্কে অপেক্ষাকৃত খর্ব শক্তির অ্যাস্টন ভিলার কাছে লিভারপুলের এমন হার! প্রথম অর্ধে ৪ আর পরের অর্ধে ভিলা দিয়েছে ৩ গোল, আর মোহামেদ সালাহ দুই অর্ধে একটি করে গোল শোধ করেছে। মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই লিভারপুল রক্ষণের ফাঁকফোকর সামনে চলে এসেছিল, ভার্জিল ভ্যান ডাইক-জো গোমেজদের ভুলগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল মার্সেলো বিয়েলসার লিডস ইউনাইটেড।

    আর ডিন স্মিথের অ্যাস্টন ভিলা লিভারপুলের সেই রক্ষণকে তুলোধুনো করেছে। ইংলিশ লিগে গত ৬৭ বছরে কোনো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন এত বাজেভাবে হারেনি, শেষ ১৯৫৩ সালে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্সেনাল ৭-১ গোলে হেরে গিয়েছিল সান্ডারল্যান্ডের কাছে।

    ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই শুরু হয় ভিলার ধ্বংসযজ্ঞ। অ্যালিসন বদলি হিসেবে একাদশে সুযোগ পাওয়া আদ্রিয়ানের বাজে ভুলে ভিলা পার্কের নতুন মুখ ওয়াটকিন্স প্রথম বল জালে জড়ান। এরপর ২২ এবং ৩৯ মিনিটে আরও দুইবার বল চ্যাম্পিয়নদের জালে পাঠিয়ে নিজের প্রথম প্রিমিয়ার লিগ হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছেন তিনি। বাম এবং ডান পায়ে প্রথম দুই গোল করেন ওয়াটকিন্স, আর হ্যাটট্রিক গোলটি হেডে করার সুবাদে ‘পারফেক্ট’ হ্যাটট্রিকও হয়ে যায় তার।

    ওয়াটকিন্স ছাড়াও এদিন ভিলা অধিনায়ক গ্রিলিশও ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। ২ গোল এবং ৩ অ্যাসিস্টে ভিলা পার্কে চ্যাম্পিয়নদের সমাধি রচনায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার।


    ওয়াটকিন্স-গ্রিলিশ ছাড়াও স্কোরশিটে নাম তুলেছেন জন ম্যাকগিন এবং সদ্য চেলসি থেকে ধারে ভিলা পার্কে আসা রস বার্কলি। ভিলার হয়ে অভিষেকেই গোল করা বার্কলি নিজের মূল ক্লাব চেলসির হয়ে পরোক্ষভাবে যেন প্রতিশোধই নিলেন। সেপ্টেম্বরে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে লিভারপুলের বিপক্ষে চেলসির ২-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে যে বদলি হিসেবে খেলেছিলেন।

    ম্যাচে প্রত্যেকটি বিভাগেই লিভারপুলকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছে অ্যাস্টন ভিলা। এই ম্যাচের লিভারপুল আর এই ম্যাচের আগের অন্য কোনো ম্যাচের লিভারপুলকে আপনি কোনোমতেই মেলাতে পারবেন না। পুরো ম্যাচজুড়ে চ্যাম্পিয়নদের হাবভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ম্যাচে ফিরে আসার কোনো লক্ষণই দেখা যায়নি। একের পর আক্রমণে লিভারপুলের রক্ষণকে নাজেহাল করে ছেড়েছে অ্যাস্টন ভিলা। আর চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে গেছে গত মৌসুমে কোনোমতে অবনমন থেকে বেচে যাওয়া অ্যাস্টন ভিলা।

    ম্যান ইউনাইটেডের ‘বড়’ হারের জন্য ওলে গানার সোলশার তবুও একটা যুক্তি দাড় করাতে পারেন, ম্যাচের ৬২ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলেছে তার দল। তবে ইয়ুর্গেন ক্লপ এমন হারের জন্য কী যুক্তি দেবেন!