• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    গার্দিওলাকে তিন পয়েন্ট পেতে দিলেন না ময়েস

    গার্দিওলাকে তিন পয়েন্ট পেতে দিলেন না ময়েস    

    ফুল টাইম

    ওয়েস্ট হাম ১ - ১ ম্যান সিটি


    ডেভিড ময়েসের ওয়েস্ট হ্যামের দৃঢ়তার কাছে থমকে যেতে হল পেপ গার্দিওলার সিটিজেনদের। প্রিমিয়ার লিগে আগের ম্যাচেই দারুণ দৃঢ়তার নিদর্শন দেখিয়ে টটেনহামের বিপক্ষ ম্যাচের শেষ দশ মিনিটে ৩-০ থেকে ফিরে এসে ৩-৩ ড্র করেছিল ওয়েস্ট হাম। এবার ঘরের মাঠেও সেই কীর্তি দেখাল। এবার অবশ্য প্রথমার্ধে মিখাইল আন্টোনিও-র জাদুকরী ওভারহেড ফিনিশে এগিয়ে গিয়েছিল ওয়েস্ট হাম। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে সিটি ফোডেনের গোলে ম্যাচে সমতায় ফিরে চিত্রপট বদলে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। তবে সেই ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তাই শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের এক পয়েন্ট এনে দিয়েছে।

    লন্ডন স্টেডিয়ামে ম্যান সিটি বরাবরই ভয়ংকর। প্রিমিয়ার লিগে গত মৌসুমেও এই ফিক্সচারে স্টার্লিংয়ের হ্যাটট্রিকের ওয়েস্ট হামকে ৫-০ গোলে হারিয়েছিল সিটিজেনরা। আজকেও সেই একই উদ্যমে ম্যাচ শুরু করেছিল গার্দিওলার দল। এই মৌসুমে সিটির খেলায় কিছুটা চড়াই-উতরাই থাকলেও এদিন গতিময় শুরু পেয়েছিল। ম্যাচের শুরু থেকেই ওয়েস্ট হাম বক্সের আশপাশেই খেলা আটকে রেখেছিল তারা।

    তবে ডেভিড ময়েসের রক্ষণ নির্ভর প্রতি আক্রমণভিত্তিক গেমপ্ল্যানের সামনে এদিন গার্দিওলা খুব একটা কুলিয়ে উঠতে পারেননি। ম্যান সিটি পুরো প্রথমার্ধ জুড়ে প্রায় ৭৫ ভাগের বেশি বল দখলে রেখেও কাজের কাজ করতে পারেনি। ৫-৪-১ ফরমেশনে ওয়েস্ট হাম স্বচ্ছন্দে সিটির সব আক্রমণকে রুখে দিচ্ছিল, আর প্রতি আক্রমণে আন্টোনিও, সুসেক, বোয়েনরা সিটির রক্ষণে বেশ কয়েকবার হানা দিয়েছেন।

    ম্যাচের ১৮ মিনিটে পুরোপুরি খেলার ধারার বিপরীতে এগিয়ে গেছে ওয়েস্ট হাম। সিটির লাগাতার প্রেসের মাঝেই হঠাৎ বল নিয়ে তাদের বক্সের সামনে চলে আসে ওয়েস্ট হাম। ডান প্রান্তে ডেড বল পজিশন থেকে ক্রেসওয়েলের দিকে ব্যাক পাস করেন সুসেক। সেখান থেকে ক্রেসওয়েলের লুপিং ক্রস খুঁজে নেই সিটির গোলমুখে থাকা আন্টোনিওকে। সিটির নতুন সেন্টার ব্যাক রুবেন দিয়াসকে দারুণ দক্ষতায় আটকে রেখে দর্শনীয় ওভারহেড কিকে ওয়েস্ট হামকে খেলার ধারার বিপরীতে এগিয়ে দেন।


    ম্যাচের গতি-প্রকৃতিতে প্রবল কর্তৃত্বের পরও গোল হজম করে হাঁটু গেঁড়ে মাটিতে বসে পড়েন গার্দিওলা, নিজের চোখকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না এই স্প্যানিয়ার্ড। এই গোলটি বাদে দুই দলের কেউই আর প্রথমার্ধে নিশ্চিত গোলের কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।

    তবে গার্দিওলার ম্যাজিকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই খেলায় ফিরে আসে ম্যান সিটি। হাফ টাইমে সার্জিও আগুয়েরোকে উঠিয়ে তরুণ ফিল ফোডেনকে মাঠে নামান। মাঠে নামার মাত্র ছয় মিনিটের মধ্যেই সিটিকে সমতায় নিয়ে আসেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। বাম প্রান্ত দিয়ে জোয়াও কানসেলো দৌড়ে বক্সের ওয়েস্ট হাম বক্সে এসে ফোডেনের উদ্দেশ্য বল বাড়ান, সেখান থেকে দারুণ প্লেসিং ফিনিশে ওয়েস্ট হাম গোলরক্ষক ফাবিয়ানস্কিকে কাছে পোস্টে পরাস্ত করেন তিনি। আর গোল হজমের পরই ওয়েস্ট হামের ওপর মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আসে আন্টোনিওর ইনজুরি। দারুণ ওভারহেড কিকে ওয়েস্ট হামকে এগিয়ে দেওয়া আন্টোনিও তখনই চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন, তার বদলে নামেন ইউক্রেনের আন্দ্রি ইয়ারমোলেঙ্কো।

    সমতায় আসার পর সিটির খেলার ধার আরও বেড়ে যায়। তবে গোল হজমের পর ওয়েস্ট হামের রক্ষণে ঢিল দেয়নি মোটেও। তাই তো ৬৯ মিনিটে তূণের সেরা অস্ত্র কেভিন ডি ব্রুইনকে নামিয়েও গতি হয়নি গার্দিওলার। কখনো কখনো ওয়েস্ট হ্যামের রক্ষণ পেরুতে পারলেও হ্যামার্সদের গোলরক্ষক ফাবিয়ানস্কি তখন দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ৮৬ মিনিটে স্টার্লিংকে ওয়ান-অন-ওয়ান পরিস্থিতিতে হতাশ করেছেন। ৯৪ মিনিটে রিয়াদ মাহরেজের ফাবিয়ানস্কি ঠেকিয়ে দেওয়ার বারে লেগেছে, তবুও জালে প্রবেশ করেনি।

    লন্ডন স্টেডিয়াম থেকে মাত্র এক পয়েন্ট নিয়েই ফিরতে হল সিটিজেনদের। ৫ ম্যাচ থেকে ৮ পয়েন্ট নিয়ে এখন পয়েন্ট তালিকার ১১ তে অবস্থান করছে সিটি, আর ৬ ম্যাচ থেকে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে দশে রয়েছে ওয়েস্ট হ্যাম।

    ওয়েস্ট হাম একাদশ

    ফাবিয়ানস্কি, সুফাল, বালবুয়েনা, ওগবন্না, ক্রেসওয়েল, মাসুয়াকু, বোয়েন, সুসেক, রাইস, ফরনালস, আন্টোনিও

    ম্যান সিটি একাদশ

    এডারসন, কানসেলো, গার্সিয়া, দিয়াস, ওয়াকার, গুন্দোয়ান, রদ্রি, সিলভা, স্টার্লিং, আগুয়েরো, মাহরেজ