• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    আড়ালের মেসি, জিদানের ট্যাকটিক্যাল টেক্কা, ভিএআর নিয়ে প্রশ্ন: ক্লাসিকোতে ব্যবধান লেখা হলো যে পাঁচ জায়গায়

    আড়ালের মেসি, জিদানের ট্যাকটিক্যাল টেক্কা, ভিএআর নিয়ে প্রশ্ন: ক্লাসিকোতে ব্যবধান লেখা হলো যে পাঁচ জায়গায়    

    ন্যু ক্যাম্পে এসে বার্সাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ, আর বার্সার সামনে রেখে গেছে অনেক প্রশ্ন। ক্রাইসিস ক্লাসিকোতে ব্যবধানটা লেখা হয়েছে এই পাঁচ জায়গায়।

     

    থেকেও নেই মেসি

    ওপেন প্লে থেকে মেসি সর্বশেষ কবে গোল পেয়েছেন, মনে করতে খানিকটা কষ্ট হতে পারে আপনার। আজকের ক্লাসিকোতেও মেসি হয়ে থাকলেন নিজের ছায়া। যতবারই বল নিয়ে এগিয়ে গেছেন, কাসেমিরো বা রামোস বল কেড়ে নিয়েছেন। একবার কোর্তোয়াকে একা পেয়েও গোল দিতে পারেননি, ফ্রিকিক চলে গেছে পোস্টের ওপর দিয়ে। এমন নয়, চেষ্টা করেননি একদমই। প্রথমার্ধে দলের সবচেয়ে বেশি টাচ তার ছিল, এমনকি নিচে নেমে ডিফেন্স করার বিরল দৃশ্যও দেখা গেছে। কিন্তু বয়সের ছাপ দেখা গেছে দ্বিতীয়ার্ধে, বার বার বল হারিয়েছেন। বয়স হয়েছে ৩৩, সর্বশেষ ছয় ক্লাসিকোতে জয়হীন। ক্লাসিকোর হারে মেসির জন্য একটা যুগের শেষ হয়ে গেল কি না, সেই প্রশ্নও উঠে যেতে পারে অনুচ্চারে।

     

    কোমানকে প্রথম টেক্কা জিদানের

    ক্রাইসিস ক্লাসিকোতে একটা পরোক্ষ লড়াই ছিল ডাগআউটেও। জিনেদিন জিদান ন্যু ক্যাম্পে হারেননি এর আগে, তবে এই ম্যাচের আগে চাপে ছিলেন ভীষণ। চাপে ছিলেন কোমানও, বার্সা যে আগের ম্যাচটাই হেরেছিল গেতাফের সঙ্গে। দুজনের একটা ট্যাকটিক্যাল লড়াইও ছিল আজ। কোমান শুরুতেই তরুণ পেদ্রিকে নামিয়ে একটা ফাটকা খেলতে চাইলেন। অভিজ্ঞতার চেয়ে আস্থা রেখেছিলেন তারুণ্যে, খেলাতে চেয়েছিলেন ৪-৪-২ তে। শুরুতে মনে হচ্ছিল, সেটা ভালোই কাজ করছে। দ্বিতীয়ার্ধেও রামোসের গোলের আগ পর্যন্ত ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু সেই গোলের পর রিয়াল ডিফেন্সকে ভাঙার জন্য কোমান আর কিছু করতে পারেননি। হাতের কাছে থাকা পাঁচজন ফরোয়ার্ড নামিয়ে চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু শেষ দিকে বার্সা কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। উলটো মদ্রিচকে নামিয়ে শেষ দানটাও জিতে নিয়েছেন জিদান। ট্যাকটিক্যালি খুব পরীক্ষা করতে চাননি রিয়াল কোচ, আস্থা রেখেছিলেন পরীক্ষিতদের ওপরেই। তবে এই ম্যাচটা কোমানের জন্য অনেক বড় প্রশ্নেরই জন্ম দিল।

     

    নতুন দিনের গান

    ফেদেরিকো ভালভের্দে শুরুতেই গোল করে দেখিয়ে দিয়েছেন, কেন তাকে রিয়াল মিডফিল্ডের বড় ভরসা মনে করা হচ্ছে। ওয়ার্করেট ছিল বেশ ভালো, দুই অভিজ্ঞ ক্রুস আর কাসেমিরোর সঙ্গে ছিলেন উজ্জ্বল। আর বার্সার জন্য আজকের ক্লাসিকোটা ব্যাটন পাস করারই। মেসি যেন সেটা বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন আনসু ফাতিকে, ক্লাসিকোর ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১৮ বছর হওয়ার আগেই গোল করেছেন ফাতি। পুরো ম্যাচে জানান দিয়েছেন, সামনে সময়টা আসছে তারই।

     

    রক্ষণ যখন মাথাব্যথা

    পুরো ম্যাচে বেশ কিছু ভুলই করেছে দুই দল। কখনো ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায়, কখনো গোলকিপারদের জন্য স্কোরলাইন বড় হয়নি। শুরুতেই লেংলে-পিকের প্রায় স্কুলবয়সুলভ ডিফেন্সে গোল খেয়েছে বার্সা, যদিও পরের দিকে গুছিয়ে উঠেছিলেন দুজন। কিন্তু লেংলে আবার ভুল করে পেনাল্টি পাইয়ে দিয়েছেন। কোমান কেন একজন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার চাইছিলেন এবারের দলবদলে, সেটা বোঝা হয়েছে আরেকবার। শুরুতে কাঁপছিলেন রামোস আর ভারানও, তবে রিয়ালের সৌভাগ্য সময়ের সঙ্গে সামলে নিয়েছেন দুজন। রামোস আরও একবার প্রমাণ করেছেন, এখনো অনেক কিছু দলকে দেওয়ার আছে তার। তবে ডান প্রান্তে নাচো বা ভাজকেজের খেলা দেখে জিদান বার্তা পেয়েছেন, রাইটব্যাক জায়গাটা নিয়ে মাথাব্যথা থেকে গেছে তার। সেদিক দিয়ে বার্সার রাইটব্যাক সার্জিনো ডেস্ট সম্ভবত ছিলেন পুরো ম্যাচে তাদের সেরা খেলোয়াড়।


    আরও পড়ুন : ক্লাসিকোর জৌলুস ফিরিয়ে ন্যু ক্যাম্প থেকে জয় নিয়ে ফিরল রিয়াল মাদ্রিদ


     

    এবং ভিএআর

    বড় ম্যাচে ভিএআরের ভূমিকা থাকাটা এখন মোটামুটি নিয়মের মতো হয়ে গেছে। আজও যখন কর্নার থেকে রামোস পড়ে গিয়েছিলেন, রেফারি সেটা এড়িয়ে গিয়েছিলেন প্রথমে। লেংলে তার জার্সি টেনে ধরেছিলেন, এমন ফাউলের জন্য পেনাল্টি দেওয়ার নিয়ম নেই তা নয়। তবে সিদ্ধান্তটা নিয়ে বার্সার সাবেক খেলোয়াড় ও ক্লাব কর্তারা টুইটারে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছেন। তাদের দাবি, এটা ‘সফট পেনাল্টি’ ছিল। অবশ্য বেটিসের সঙ্গে সোসিয়েদাদের এই মৌসুমের ম্যাচেই এরকম একটা ফাউলের জন্য পেনাল্টি পায়নি বেটিস, ম্যাচ শেষে সেটা নিয়ে তারা টুইটও করেছে। সিদ্ধান্তটা সঠিক বা ভুল যেটাই হোক, ভিএআরের ধারাবাহিকতা নিয়ে ম্যাচ শেষে প্রশ্নটা উঠেই গেছে।