• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ডি ব্রুইনের পেনাল্টি মিসের পর লিভারপুলের সঙ্গে ড্র করল সিটি

    ডি ব্রুইনের পেনাল্টি মিসের পর লিভারপুলের সঙ্গে ড্র করল সিটি    

    ফুলটাইম
    ম্যান সিটি ১-১ লিভারপুল


    ম্যাচের শুরু থেকেই ম্যানচেস্টার সিটির ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিল লিভারপুল। এগিয়েও গিয়েছিল প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু সমতায় ফেরার পর বিরতির আগে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারত সিটি। কেভিন ডি ব্রুইন পেনাল্টি থেকে শট বাইরে মেরে সিটিকে আর লিড এনে দিতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দল ঝুঁকি এড়িয়েই খেলল বেশিরভাগ সময়। ম্যাড়মেড়ে দ্বিতীয়ার্ধ আর তাই ফল এনে দিতে পারেনি ম্যাচে।

    ইতিহাদে প্রথমার্ধটা অবশ্য ছিল দেখার মতো। রবার্তো ফিরমিনো নাকি দিয়াগো জোতা- কে খেলবেন লিভারপুলের আক্রমণভাগে? সে প্রশ্নের জবাব ইউর্গেন ক্লপ দিয়েছিলেন দুইজনকেই একসঙ্গে মাঠে নামিয়ে। মোহামেদ সালাহ, সাদিও মানের সঙ্গে আক্রমণভাগে ছিলেন জোতা, তার ঠিক পেছনে অনেকটা জাত মিডফিল্ডারের ভূমিকায় খেলছিলেন ফিরমিনো। দারুণ শুরুর পর গোলটা আসি আসি করছিল লিভারপুলের। অপেক্ষাও খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি ক্লপের। ১৩ মিনিটে সালাহ পেনাল্টি থেকে গোল করে এগিয়ে নেন দলকে। বক্সের ভেতর ঢুকে পড়া মানেকে পেছন থেকে ট্যাকেওল করে বিপদ ডেকে এনেছিলেন কাইল ওয়াকার। পরিস্কার পেনাল্টি থেকে লিডও নিয়ে নেয় লিভারপুল।


    জোতার উপস্থিতিতে লিভারপুল আক্রমণে খেলছিল ৪-২-৪ ফরমেশনে। লিভারপুলের বিপক্ষে পেপ গার্দিওলা এর আগেও অনেকবার সিদ্ধান্ত নিতে অপেক্ষা করেছেন। এদিনও ঘটেছে একইরকম ঘটনা। ম্যাচের একটা সময় সিটিও ৪-২-৪ এ খেলেই লিভারপুলকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। ম্যাচটা আসলে তখনই জমে উঠেছিল। রাহিম স্টার্লিং, ফেরান তোরেস আর গ্যাব্রিয়েল জেসুসের সঙ্গে কেভিন ডি ব্রুইন তখন আক্রমণে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সালাহ, মানেরা রক্ষণের সময় লক্ষ্য রেখেছিলেন রদ্রির ওপর। মিডফিল্ডে পাসিং লেন আটকে দিয়ে সিটিকে আটকে রাখার চেষ্টা ছিল লিভারপুলের।

    সিটি ম্যাচে প্রথমবারের মতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল স্টার্লিংয়ের একটি শট থেকে। তবে অ্যালিসন ছিলেন সতর্ক। কাছের পোস্টে স্টার্লিংয়ের শট ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক। কিন্তু ৩১ মিনিটে আর জেসুসকে আটকানো হয়নি লিভারপুলের। বক্সের ভেতর পাস রিসিভ করে দারুণ এক টার্নে পেছনে থাকা ট্রেন অ্যালেক্সান্ডার আর্নল্ডকে ছিটকে ফেলে অ্যালিসনকে পরাস্ত করে নিচু ফিনিশে দুর্দান্ত এক গোল করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

    বিরতির আগে এরপর নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়ে গেছে ভিএআর। বাম দিক থেকে আসা ক্রস আটকাতে গিয়ে বক্সের মাথায় জো গোমেজের হাতে লেগেছিল বল। তেমন কিছুই করার ছিল লিভারপুল গোলরক্ষকের। মাঠের বাইরে মনিটরে রিপ্লে দেখে পরে রেফারিও পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। ডি ব্রুইন ভুলটা করেন তখনই। নিচু শটে বামদিকে বল জড়াতে গিয়ে ডি ব্রুইন লক্ষ্যই মিস করে যান। প্রিমিয়ার লিগে পেনাল্টি থেকে সবশেষ অন টার্গেটে শট রাখতে না পারার ঘটনাটিও এই ফিক্সচারে। ২০১৮ সালে রিয়াদ মাহরেজ ম্যাচের শেষদিকে পেনাল্টি থেকে শট মেরেছিলেন বাইরে। ঠিক দুই বছর পর প্রিমিয়ার আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখল এই ফিক্সচারেই।

    বিরতির ঠিক আগে লিভারপুলও অবশ্য ভালো একটি সুযোগ পেয়েছিল। আর্নল্ডের শক্তিশালী শট তখন কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন এডারসন। পেছন থেকে তাকে তাড়া করছিলেন জোতা। একটু এদিক সেদিক হলেই গোল পেতে যেতে পারতেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের বলার মতো সবচেয়ে বড় ঘটনাও আর্নল্ডকে ঘিরে। যদিও তখন তার করার মতো কিছুই ছিল না। ৬৩ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। অবশ্য আর্নল্ডের চোট কতোখানি গুরুতর তা জানা যায়নি।

    এর আগেই অবশ্য ধুঁকতে থাকা ফিরমিনোকে তুলে জের্দান শাকিরিকে সুযোগ করে দিয়েছিলেন ক্লপ। আর তোরেসের জায়গায় নেমেছিলেন বের্নার্দো সিলভা। বদলিরাও এরপর ম্যাচে প্রভাব রেখেছেন অল্পই। তবে জেসুস ম্যাচের নায়ক বনে যেতে পারতেন। ক্যান্সেলোর একটি ক্রস থেকে হেডে অল্পের জন্য লক্ষ্য মিস করে গেছেন তিনি।

    ৮ ম্যাচ শেষে প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলে খুব বেশি হেরফের হয়নি এই ম্যাচের পর। টটেনহামের সমান ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে লিভারপুল। সিটি এখনও পয়েন্ট টেবিলের প্রথম অংশে ঢুকতে পারেনি। ৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ১১-তে তারা। আপাতত আগামী দুই সপ্তাহ আন্তজার্তিক বিরতির জন্য দুই কোচই কিছুটা সময় পাচ্ছেন।ড্র হলেও তাই ম্যাচের হিসেবে সিটিই বেশি সুযোগ তৈরি করেছিল। আপাতত হাতছাড়া করা সুযোগগুলোর প্রভাব বোঝা না গেলেও মৌসুমের শেষ অংশে এগুলোও হয়ে যেতে পারে শিরোপা নির্ধারনী মুহুর্ত।