• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    মরিনহো মাস্টারক্লাসের জবাব খুঁজে পেল না গার্দিওলার সিটি

    মরিনহো মাস্টারক্লাসের জবাব খুঁজে পেল না গার্দিওলার সিটি    

      ফুল টাইম 

    টটেনহাম ২:০ ম্যান সিটি


    কথার লড়াইয়ে খানিকটা ঝাঁঝ ম্যাচের আগেই এনে দিয়েছিলেন দুই কোচ। রাহিম স্টার্লিংকে নিয়ে মরিনহো-গার্দিওলার বেশ একচোট কাটাকাটা বাক্য বিনিময় হয়েছিল। সেটা যদি মরিনহোর মাইন্ড গেম হয়ে থাকে, তাতে তিনি সফল। স্টার্লিংকে নামাননি পেপ গার্দিওলা, আর হোসে মরিনহো দেখিয়েছেন এখনো ট্যাকটিক্যাল মাস্টারক্লাসে ফুটবলকে কিছু দেওয়ার আছে তার। যা করতে চেয়েছেন, তার প্রায় সবই হয়েছে। হিউয়েং মিন সনের গোলের পর জিওভান্নি লো সেলসো নিশ্চিত করেছেন স্পার্সের জয়। আর ম্যান সিটির সাথে চুক্তি নবায়নের দুদিন পরেই হেরে গেছেন গার্দিওলা।

    আক্ষরিক অর্থেই ম্যাচটা ছিল ইংরেজিতে যাকে বলে "মরিনহো-য়েস্ক"। ম্যাচের বেশির ভাগ সময় বল পজেশন ঠিল সিটির, গোলে বেশি শটও নিয়েছে তারা। কিন্তু পরিষ্কার সুযোগ যাকে বলে, সেটা পেয়েছে হাতেগোণা। অন্যদিকে মরিনহোর টটেনহাম গোলে শট নিয়েছে খুবই কম, কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে একদম হিসেবমতো।

    প্রথম গোলটা স্পার্স পেয়ে গেছে ম্যাচের ৫ মিনিটেই। হাই লাইন খেলতে গিয়ে বেশি ওপরে উঠে গিয়েছিলেন সিটির দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার। এনদম্বেলের লবটা তাই এসে পড়ে সনের পায়ে। এডারসনও বেশি এগিয়ে এসে ভুল করেছিলেন, সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বাঁ পায়ে বল জালে জড়িয়ে দেন। সিটি এমনিতেই প্রিয় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে সনের, সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচেই গোল পেলেন তাদের বিপক্ষে। গার্দিওলার সিটির বিপক্ষে এর চেয়ে বেশি গোল করেছেন শুধু জেমি ভার্ডিই।

    এরপরেই অবশ্য নিয়ন্ত্রণ আস্তে আস্তে নিয়ে নেয় সিটি। ১১ মিনিত্রে কেভিন ডি ব্রুইনের শট সতীর্থ গ্যাব্রিয়েল জেসুসের গায়ে না লাগলে এগিয়ে যেতে পারত সিটি। অবশ্য টটেনহাম তার পর গোল পেয়েছিল, তবে হ্যারি কেনের সেই উদযাপন অফসাইডের জন্য মিলিয়ে যায় দ্রুতই।

    ম্যাচের সবচেয়ে বিতর্কিত মুহূর্তটা আসে ২৭ মিনিটে। সিটি-টটেনহাম ম্যাচে ভিএআরের কোনো ভূমিকা থাকবে না, সেটা তো হয় না। এবার একটা আক্রমণ থেকে বল এসে পরে স্পার্সের বক্সে, জেসুস বলটা পেয়েও শট করার মতো জায়গা না পেয়ে সেটা বাড়িয়ে দেন লাপোর্তের দিকে। বাঁ পায়ের বুলেট শটে বল জালে জড়িয়ে দেন লাপোর্ত। কিন্তু স্পার্স অভিযোগ করতে থাকে, বল হাতে লেগেছিল জেসুসের। রিপ্লে দেখে রেফারিও পরিবর্তন করেন সিদ্ধান্ত, যদিও সেটা মেনে নিতে পারেনি সিটি। প্রথমার্ধ শেষেও ডি ব্রুইন, জেসুসরা সেটা নিয়ে অভিযোগ করে যাচ্ছিলেন।

    তবে সেই অর্থে পরিষ্কার সুযোগ আর পায়নি সিটি। মরিনহোর দলের ডিফেন্সিভ শেপ ছিল দারুণ, সিটি তাই গোলের খুব পরিষ্কার সুযোগ পায়নি। জেসুস একটা হাফ চান্স পেয়েছিলেন, তবে সেটা মেরেছেন সাইড নেটে।

    দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সিটি একটু তেঁড়েফুঁড়ে খেলার চেষ্টা করে, কিন্তু সুবিধে করতে পারছিল না। ডি ব্রুইন বার বার বাইরে থেকে শটের চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু একবার ছাড়া বাকিগুলো গেছে দূর দিয়ে। এর পরেই মরিনহো দেখালেন তার মাস্টারক্লাস। ৬৫ মিনিটে এনদম্বেলের জায়গায় নামিয়েছেন লো সেলসোকে। ৩৬ সেকেন্ডের মধ্যেই হয়ে গেছে বাজিমাত। স্পার্স রক্ষণ থেকে মধ্যমাঠে বল পেয়েছেন হ্যারি কেন, সিটির অরক্ষিত ডিফেন্সের সুযোগে বল বাড়িয়েছেন লো সেলসোর দিকে। আগুয়ান এডারসনের দু পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দিয়েছেন আর্জেন্টাইন। ২০১৯ সালের পর প্রিমিয়ার লিগে বদলি হিসেবে এত দ্রুত গোল পায়নি আর কেউ।

    এরপর স্টার্লিং, ফোডেনকে নামিয়েছেন গার্দিওলা, কিন্তু লাভ হয়নি। স্পার্স ছিল দারুণ সংগঠিত, সিটির সব আক্রমণ বিফলে গেছে ডি বক্সের কাছে এসে। একদম শেষ মুহূর্তে এসে লরিসের একটু পরীক্ষা নিয়েছিলেন লাপোর্তে, দারুণ এক সেভে হেড ঠেকিয়ে দিয়েছেন লরিস। তাতেই নিশ্চিত হয়ে গেছে, ২০ পয়েন্ট নিয়ে আজকের জন্য টটেনহামই উঠে যাচ্ছে লিগের শীর্ষে। আর ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সিটি পড়ে গেছে আরেকটু পেছনে।