• ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাংলাদেশ সফর ২০২১
  • " />

     

    'সমাধান সহজ, অবশ্যই হবে। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না', টিম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে অসন্তুষ্ট পাপন

    'সমাধান সহজ, অবশ্যই হবে। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না', টিম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে অসন্তুষ্ট পাপন    

    দলের পারফরম্যান্স, টিম ম্যানেজমেন্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত, স্পিন-নির্ভর ‘স্ট্র্যাটেজি’, দল নির্বাচন নিয়ে নিজের অসন্তোষ জানিয়েছেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন। এসব অবস্থার পরিবর্তন দরকার জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এসবের সমাধান খুব একটা কঠিন নয়ও’। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে 'হালকাভাবে নিয়েছিল বাংলাদেশ', এমন অভিযোগও করেছেন তিনি।

    মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয় ইনিংসে বেশ কম রানে আটকে দেওয়ার পরও ব্যাটিং ধসে পড়ে ১৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের মতো এখানেও বাংলাদেশ খেলেছে স্বীকৃত এক পেসার নিয়ে। সঙ্গে সাকিব আল হাসানের বদলে খেলানো হয়েছিল সৌম্য সরকারকে। সৌম্যর খেলা এবং স্পিন-নির্ভর কৌশল নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে সরাসরিই প্রশ্ন তুলেছেন পাপন।  

    ঘরোয়া ক্রিকেটে পেসারদের উন্নতি হয়েছে, এমন দাবি করে স্পিন-নির্ভরতার সমালোচনা করেছেন তিনি, “একটা জিনিস হঠাৎ করে দেখছি, আফগানিস্তান সিরিজ থেকে শুরু হয়েছে-- স্পিন উইকেট, স্পিন উইকেট, স্পিন উইকেট। আমাদের একটা সময় ছিল স্পিনে আমরা মোটামুটি ভালো ছিলাম কারণ আমাদের পেস ভালো ছিল না। আমাদের পেস বোলার ছিল না এবং গত তিনটা বছর ধরে আমরা ধারাবাহিকভাবে ভাবছি কীভাবে পেস বান্ধব উইকেট বানানো যায়। খুব বেশি উন্নতি করেছি তা না তবে আমরা অনেক উন্নতি করেছি ঘরোয়া ক্রিকেটে।”

    স্কোয়াডে ৫ জন পেসার থাকলেও দুই টেস্টে একজন করে খেলানো নিয়েও প্রশ্ন আছে তার, “আমাদের সেটার ফলশ্রুতিতে আপনি যদি দেখেন, আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে বা যে টুর্নামেন্টগুলা করলাম আমাদের পেসাররা ভালো বোলিং করেছে। আমাদের এখন অনেকগুলা পেসার রয়েছে। এতোগুলো পেসার থাকতে আমি পেসার খেলাবো না? (স্কোয়াডে) ৫ জন (পেসার)কে নিয়ে এখানে অলরাউন্ডারের জায়গাটা বন্ধ করে দিয়েছে। এখানে একটা অলরাউন্ডার নেওয়ার জায়গা বন্ধ করে দিয়ে ৫ জন পেসার নিলাম কিন্তু খেলাচ্ছি না। তাহলে নেই কেন আমরা? সুতরাং, আপনি যদি দল নির্বাচন বলেন আমার এটা বলার কিছু নাই।”


    মিরপুর টেস্টে সাকিবের বদলি হিসেবে সৌম্য ‘চতুর্থ বাছাই’ ছিলেন, এমন বলেছেন দল নির্বাচনে নিজের হস্তক্ষেপের কথা এর আগেও প্রকাশ্যেই বলা বিসিবি প্রেসিডেন্ট, “যখন শুনলাম সাকিব চোটে, তখন একটা বদলি লাগবে। তখন এক এক করে অনেক নাম বলা হয়েছে। ওখানে আমার সামনে আকরাম (খান, বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনসের চেয়ারম্যান) ছিল, (মিনহাজুল আবেদিন) নান্নু (নির্বাচক) ছিল, (খালেদ মাহমুদ) সুজন (গেম ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান) ছিল, (হাবিবুল বাশার) সুমন (নির্বাচক) ছিল। আমি ওদেরকে অপশন দিয়েছিলাম চারটা না পাঁচটা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নাম্বার ওয়ান, তারপর মোসাদ্দেক (হোসেন), শেখ মেহেদী (মাহাদি হাসান), এবং চতুর্থ অপশন ছিল সৌম্য। তারা সৌম্যকে বাছাই করেছে।”

    “যাই হোক তারপর আমি ব্যক্তিগতভাবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে কল দিয়েছিলাম। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বললো তার ব্যাক পেইন। সাথে সাথে বললাম তাড়াতাড়ি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের খোঁজ করো। খোঁজ করলো। খোঁজ করে বললো মোসাদ্দেক তো ঢাকায়ই নাই। আমরা চেষ্টা করেছি। ওদের চয়েজ একটাই। বাকি কারো নাম বলে নাই।

    “এখন ওদেরকে জিজ্ঞেস করতে হবে ব্যাপারটা কী হচ্ছে। ব্যাপারটা আমরা মেনে নিতে পারি না। এটা বেসিক। সময়টা খুবই স্বল্প। আমরা এখনই চলে যাবো নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ড থেকে এসেই সাত থেকে আট দিনের মধ্যেই চলে যাবো শ্রীলঙ্কা। এই সময়টায় খুব যে হুলস্থুল করে ফেলতে পারবো এমনটা না। কিন্তু বার্তাটা দেওয়া হবে।” 

    ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হালকাভাবে নিয়েছে বাংলাদেশ, এমনও মনে করেন তিনি, “আমাদের হারার পেছনে কতগুলো কারণ- প্রথম কারণটা হচ্ছে উই হ্যাভ একচুয়ালি আন্ডারইস্টিমেটেড ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিম। এটা হলো বাস্তবতা। ওয়ানডে তিনটা (সিরিজে) হোয়াইটওয়াশ করার পর ভেবেই নিয়েছিলাম এটা ‘অনলি মেটার অফ টাইম’ (টেস্ট সিরিজে তাদেরকে হারানো)।”

    অবশ্য ম্যাচশেষে সৌম্যকে খেলানোর ব্যাপারে মুমিনুল বলেছেন, সাকিবের জায়গায় একজন অলরাউন্ডার যিনি পেস বোলিং করতে পারেন, এমন কাউকে দরকার ছিল। আগে টেস্ট অভিজ্ঞতা আছে বলে সৌম্যকে নিয়েছিলেন তারা। 

    মিরপুর টেস্টে দুজন পেসার খেলানোর কথা ছিল, এমন ‘নিশ্চিত করা হয়েছিল’ পাপনকে, বলেছেন তিনি, “পরিবর্তন তো আনা হয়। খেলানো তো হয় না। এমনিতেও তো পাঁচটা পেসার আছে। কেন খেলছে না? চিটাগংয়ে (চট্টগ্রামে) খেলার কথা ছিল খেলে নাই। এখানেও অন্তত দুইজন খেলবে আমাকে নিশ্চিত করেছে। কিন্তু খেলে নাই কেন? আমাকে তো বলা হচ্ছে খেলবে। পরে তো দেখি নামছে না। অধিনায়ক আর কোচ (ডিসিশন মেকার)- এখানে আর আমরা কেউ নাই তো আর।” 

    “জবাবদিহি- চাইবো সবার কাছে অবশ্যই। শুধু অধিনায়ক আর কোচ না। সবার কাছে চাইবো।”

    “খেলোয়াড়দের অ্যাপ্রোচ বলেন, স্ট্রাটেজি বলেন আমার কাছে মনে হয় যে... যে জিনিসটা ‘অভিয়াস’ সবাই মনে করে আপনারাও মনে করেন, আপনারও তো এত বছর ধরে খেলা দেখেন-- আপনারা যেটা ভাবেন যে এটা হওয়া উচিত এটাও হচ্ছে না। এটা ব্যাটসম্যানকে তো আমি-- একটা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান, বোলার-- আমাদের বাংলাদেশর শীর্ষ যারা নামকরা, বিশ্বমানের-- তাদেরকে এখন বলে দিতে হবে টেস্টে কিভাবে ব্যাটিং করতে হবে? এগুলো তো বলে দেওয়ার কথা না। 

    “সমাধান খুবই সহজ, সমাধান হবে। এইভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আমি আফগানিস্তানের (সঙ্গে হারের) পরে বেশি কিছু বলতে চাই নাই কিন্তু আজকে আপনাদেরকে আমি বললাম হয় এটা পরিবর্তন করতে হবে অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। যেভাবেই হোক…”