• ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ২০২১
  • " />

     

    আবাহনী-ম্যাচের আগে রূপগঞ্জের ছেলেখেলায় পরিণত হলো মোহামেডান

    আবাহনী-ম্যাচের আগে রূপগঞ্জের ছেলেখেলায় পরিণত হলো মোহামেডান    

    মোহামেডান-রূপগঞ্জ, মিরপুর 
    মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ১১৩/৯, ২০ ওভার (শুভাগত ৫২, আবু হায়দার ১৫, সোহাগ ২/৮, নাইম ২/৬, শহিদ ২/২১, অনিক ২/২৯, মুক্তার ১/১২) 
    লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জ ১১৭/১, ১৮.১ ওভার (পিনাক ৫১*, মারুফ ৪১, সাব্বির ১৪*, মাহমুদুল ১/১১)
    রূপগঞ্জ ৯ উইকেটে জয়ী 


    যদি আপনি লিগে ‘বড়’ দল ‘ছোট’ দলের ক্যাটাগরি করেন, নিশ্চিতভাবেই মোহামেডান থাকবে প্রথম ক্যাটাগরিতে। রূপগঞ্জ ঠিক সে ক্যাটাগরিতে নয়, অবশ্য তাদেরকে পারটেক্স, শাইনপুকুর বা খেলাঘরের ‘কাতার’-এও ফেলা যাবে না সহজে। আগের ম্যাচে গাজি গ্রুপকে আটকে দিয়েছে তারা। তবে ফরম্যাট টি-টোয়েন্টি বলে একটা কথা ঘুরেফিরে আসে- এখানে বড়-ছোট দল বলে কিছু নেই, নির্দিষ্ট দিনে খেলাটাই সব। সেই নির্দিষ্ট দিনে মিরপুরে রূপগঞ্জ বলতে গেলে ছেলেখেলা করল সাকিব আল হাসানদের মোহামেডানকে নিয়ে। 

    টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে মোহামেডান ১৭ রানেই হারিয়ে ফেলেছিল ৬ উইকেটে, তাদের প্রথম ৬ ব্যাটসম্যানের স্কোর ছিল এমন- ০, ১০, ৫, ০, ০, ৯। সাতে নামা শুভাগত হোমের ৩২ বলে ৫২ রানের ইনিংস সেখানে ধারার বাইরেই, একসময় রেকর্ড সর্বনিম্ন স্কোর উঁকি দিলেও সেটিকে ১০০-পেরুনো কিছু বানানোর পেছনে তো তার ওই ইনিংসেরই অনেক বড় অবদান। অবশ্য দিনশেষে যথেষ্ট হওয়ার প্রশ্নই আসেনি সেটিকে ঘিরে।



    প্রথম ওভারে গাজির টানা ৫ ডট বলের চাপে ৬ষ্ঠ বলে স্লগ করতে গিয়ে টপ-এজড হয়েছিলেন মাহমুদুল হাসান, পরের ওভারে শামসুর রহমান ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে মিস করে গেছেন বিপরীত দিকে টার্ন করা ডেলিভারিটা। শহিদ ফিরিয়েছেন সাকিবকে, অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বলে জোরের ওপর কাট করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন মোহামেডান অধিনায়ক- ৬ বলে শূন্যতে। একই বোলারের বাড়তি বাউন্স না বুঝে গ্লাভড হয়েছেন নাদিফ চৌধুরি। 

    পারভেজ হোসেন ইমন পাওয়ারপ্লেটা ক্রিজেই ছিলেন, নাইমের নিচু হওয়া বলে তিনি হয়েছেন বোল্ড। ইরফান শুক্কুর নাইমের দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে। নেমে ভুগছিলেন শুভাগতও, প্রথম ১০ বলে এই ডানহাতি করেছিলেন ৫ রান। সানজামুলকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে লং-অফ দিয়ে ছয় মেরে খোলস ছেড়েছেন, এরপর মেরেছেন আরও চারটি ছয়, সঙ্গে ১টি চার। শেষ পর্যন্ত মুক্তারের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে এজড হয়েছেন তিনি, অবশ্য আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে খুব একটা খুশি মনে হয়নি তাকে। 

    কমবেশি সব রূপগঞ্জ বোলারই ভুগিয়েছেন মোহামেডান ব্যাটসম্যানদের, সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করেছেন সোহাগ গাজি- ৪ ওভারে ৮ রান দিয়ে এই অফস্পিনার নিয়েছেন ২ উইকেট, করেছেন দুইটি মেইডেনও। অথচ লিগে এর আগে উইকেটই পাননি তিনি। আরেক অফস্পিনার অধিনায়ক নাইম ইসলাম এদিন ২ উইকেট নিয়েছেন ৬ রানে, এর আগে যিনি বোলিং-ই করেননি এ মৌসুমে। এছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন দুই পেসার মোহাম্মদ শহিদ ও কাজি অনিকও। 

    বোলাররা যে কাজ করেছেন, রূপগঞ্জ ব্যাটসম্যানরা সেটি ভেস্তে দিতে দেননি। ওপেনিং জুটিতেই পিনাক ঘোষ ও মেহেদি মারুফ মিলে তুলেছেন ৮৯ রান, মাহমুদুল হাসানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মারুফ করেছেন ৪৬ বলে ৪১। পিনাক অবশ্য ছিলেন শেষ পর্যন্ত, আসিফ হোসেনকে চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করেছেন তিনি ৫০ বলে। ১৯তম ওভারকে সাকিবকে ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করেছেন ১৪ রানে অপরাজিত থাকা সাব্বির, মোহামেডানের বিপক্ষে ফিনিশিংটাও তাই রূপগঞ্জের হয়েছে পারফেক্ট। 

    প্রথম তিন ম্যাচে হারা রূপগঞ্জ এটি দিয়ে জিতল টানা তিন ম্যাচ, আর প্রথম তিন ম্যাচে জেতা মোহামেডান হারলো টানা তিনটি। শুক্রবার মিরপুরেই ‘ওল্ড রাইভাল’ আবাহনীর মুখোমুখি হবে মোহামেডান, সে ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাসের জায়গায় যে বেশ বড় একটা ঘাটতি থাকছে তাদের, সে তো না বললেও চলে!