• ইউরো ২০২০
  • " />

     

    দুর্দান্ত ডেনমার্কে উড়ে গেল বেলের ওয়েলস

    দুর্দান্ত ডেনমার্কে উড়ে গেল বেলের ওয়েলস    

    এই টুর্নামেন্তের ডার্ক হর্সদের মধ্যে ছিল তাদের নাম। ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনকে হারিয়ে টানা দুই ম্যাচ হেরে ডেনমার্কের পরের পর্বে ওঠা নিয়েই ছিল সংশয়। কিন্তু শেষ ষোলোতে উঠে নিজেদের শক্তিটা দেখাল ডেনমার্ক। গ্যারেথ বেলের ওয়েলসকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে প্রথম দল হিসেবে নিশ্চিত করেছেন কোয়ার্টার ফাইনাল। ক্যাসপার ডলবার্গের দুই গোলের সঙ্গে গোল করেছেন জোয়াকিম মায়েহলে ও মার্টিন ব্রাথওয়েটও।



    আমস্টারডামের গ্যালারিতে ডেনিশদেরই জোয়ার ছিল আজ। তবে শুরুতে বেল-রামসিরা বুঝতে দেননি সেটা। গোলের দেখাও পেয়ে যেতে পারতো ওয়েলসে প্রথম দশ মিনিটেই। বাঁ পাশ থেকে ভিতরে ঢুকে নেওয়া বেলের বাঁ পায়ের শটটা সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। জেমসের আরেক শট সোজা স্মাইকেলের হাতে গেছে। বেল আরও একবার অফ টার্গেটে শট নিয়েছেন। এর আগে ডেনমার্কের ডলবার্গও লং রেঞ্জ থেকে বারের উপর দিয়ে মেরেছেন একটা শট। এরপর ম্যাচের ২৭ মিনিটে ডলবার্গ বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত একটা শট নিয়েছিলেন, যা জালে জড়ানো থেকে রুখবার কোনও উপায় ছিল না ওয়ার্ডের। ক্যামেরার চোখে এরপর ধরা পড়েছিলেন উচ্ছ্বসিত ইউসুফ পলসেন, যার ইনজুরি সুযোগ করে দিয়েছিল ডলবার্গকে।


     

    ওই গোলের পরে দাপট দেখিয়ে গেছে ডেনমার্ক। একের পর এক আক্রমণ করেও যদিও প্রথমার্ধে আর কোনও গোলের দেখা পায়নি। ওদিকে শুরুর ওই ১৮ মিনিটের পর ওয়েলস আর স্মাইকেলকে সহজ কিংবা কঠিন, শট নিয়ে কোন ধরনের পরীক্ষায়ই ফেলতে পারেনি। শেষের মিনিট পনেরোতে ওয়েলসের চেহারা ছিল বিবর্ণ। গোলের খুব কাছে যাওয়া হয়নি, রবার্টস ইনজুরিতে মাঠ ছেড়েছেন, কিফার মোরে হলুদ কার্ড পেয়েছেন। কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছালে তাই তাকে ছাড়াই নামতে হতো ওয়েলসকে। 


     

    দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর তিন মিনিট পরেই অবশ্য ওয়েলসের কোয়ার্টার ফাইনাল আশা মুমুর্ষ হয়ে যায় তাদেরই ভুলে। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে ওয়েলস ডিফেন্ডার নেকো উইলিয়ামস সিক্স-ইয়ার্ড বক্স থেকে বল ক্লিয়ার করতে গেলে সামনে থাকা ডলবার্গ বল পেয়ে যান। দ্বিতীয় গোল খেয়ে এরপর দিশেহারা ওয়েলস ম্যাচে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল। ডেনমার্কের ভালো রক্ষণে ভাঙ্গন ধরিয়ে যদিও গোলের দেখা তারা পাচ্ছিল না কোনমতেই। ম্যাচের শেষদিকে আরও দুটি গোল করে ব্যবধানটা এরপর শুধু বাড়িয়েছেই ডেনমার্ক। 


     

    বাঁ পাশ থেকে ইয়ানসেনের ক্রস ফাঁকা অবস্থায় খুঁজে নিয়েছিলো মায়েহলেকে। বাঁ পায়ের জোরালো শটে মায়েহলে এরপর বল জড়িয়ে দিয়েছেন জালে। যোগ করা সময়ে ডেনমার্কের চতুর্থ গোলের বিল্ডআপের সাথেও জড়িয়ে আছেন মায়েহলে। ডানপাশ থেকে ক্রসে দারুণভাবে মায়েহলে বল বাড়ান কর্নেলিয়াসের দিকে। কর্নেলিয়াসের অসাধারণ ফার্স্ট টাচে এরপর ব্রাথওয়েট বল পেয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালে। শুরুতে অফসাইডের সংকেত এলেও পরে ভিএআরের সিদ্ধান্তে এবারের ইউরোতে ব্রাথওয়েট প্রথম গোলের দেখা পান। শেষের দিকে হতাশ ওয়েলসের হতাশা ফুটে উঠেছে তাদের খেলায়ও। ফাউল করে উইলসন লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন, তার অধিনায়ক গ্যারেথ বেল হলুদ কার্ড পেয়েছেন রেফারির সাথে অশোভন আচরণের জন্য।

    ওয়েলসের বিদায়ের বাঁশি বাজার পরেই কয়েকজন মাটিতে বসে গেছেন। তাদের সান্তনা দিতে ডেনমার্কের কেউ কেউ এগিয়ে এসেছেন। ডেনমার্কের জন্য রাতটা অন্যরকমই। ইউরোর ইতিহাসে টানা দুই ম্যাচে চার গোল করতে পারেনি আর কোন দল। প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর অসামান্য খেলায় চার গোল দিয়ে ক্ষীণ আশাকে জাগিয়ে তুলে শেষ ষোলোয় আসা। এখানেও এসে চার গোল দিয়ে পরের পর্যায়ে যাওয়া। ড্যানিশরা এ ম্যাচে জানান দিল, এরিকসেনের ডেনমার্কের ছুটে চলা জয়রথ সহজেই থামার নয়।